রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়, নয়াদিল্লি: দু দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ‘লাল ফিতে’য় যা এতদিন আটকে ছিল, খুব সম্ভবত সেই জট কাটতে চলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে, ভারতে আসার ভিসা হয়তো পেতে চলেছেন পাকিস্তান সাংবাদিকরা।
চলতি বিশ্বকাপে (Cricket Wporld Cup) এখনও পর্যন্ত দু’টো ম্যাচ খেলে ফেলেছে বাবর আজমের (Babar Azam) পাকিস্তান। কিন্তু তার একটাতেও পাক সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকতে পারেননি। মঙ্গলবার হায়দরাবাদে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের মহামহাকাব্যিক জয় চাক্ষুষ করার সুযোগ হয়নি তাঁদের। মহম্মদ রিজওয়ানের (Mohammad Rizwan) সাংবাদিক সম্মেলনেও তাঁদের উপস্থিত থাকতে হয় ‘ভারচুয়াল’, ‘জুম কল’-এ! বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী এক দেশের সাংবাদিকদের এ হেন ‘হয়রানি’ অভূতপূর্ব। ভারতে এর আগেও ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি নানাবিধ বিশ্বকাপের আসর বসেছে। পাকিস্তান সাংবাদিকরাও এসে টুর্নামেন্ট কভার করে গিয়েছেন। কিন্তু কখনওই এমন বিদঘুটে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি যেখানে তাঁদের দেশ খেলছে, আর তাঁরা, পাকিস্তানি সাংবাদিকরা খেলা দেখছেন টিভিতে, সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন ‘জুম কল’-এ!
[আরও পড়ুন: বিহারে ট্রেন দুর্ঘটনা, মৃত কমপক্ষে ৪, আহত বহু]
বিশ্বকাপ কভার করতে আসতে চেয়েও আসার উপায় নেই। ভিসাই তো নেই হাতে! এমনকী হায়দরাবাদে অগ্রিম বুকিং করেও ফ্লাইট থেকে হোটেল সব কিছু বাতিল করতে হয়েছে পাক সাংবাদিকদের, শোনা গিয়েছিল। কিন্তু বুধবার থেকে পরিস্থিতি উলটো দিকে ঘুরতে শুরু করেছে। পাকিস্তানি সাংবাদিকদের ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে আসা নিয়ে জট খোলার ইঙ্গিত সর্বপ্রথম দেন পাক বোর্ডের (PCB) ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান জাকা আশরাফ। তিনি এ দিন বলে দেন, “আমি আমার ভারতে যাওয়া পিছিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার আমি ভারতে যাচ্ছি কারণ পাকিস্তানি সাংবাদিকদের বলা হয়েছে, পাসপোর্ট জমা করতে। যাতে ভারত যাওয়ার ভিসা তাঁরা পেয়ে যান।”
এটাও শোনা গেল যে, ভারতীয় বোর্ডের (BCCI) সঙ্গে কথাবার্তা বলে শৈত্য গলানোর কাজটা করেন আশরাফই। বিকেলের দিকে পাকিস্তানি সাংবাদিকদের কেউ কেউ বললেন যে, ভিসা এখনও তাঁরা হাতে পাননি ঠিকই। কিন্তু ভিসার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। নতুন করে কোনও নাটক না হলে সমস্যা মিটে যাওয়া উচিত।
[আরও পড়ুন: রক্তাক্ত ইজরায়েলে আটকে বহু ভারতীয়, নিরাপত্তার আশ্বাস রাষ্ট্রদূতের]
আইসিসি (ICC) কর্তারাও কেউ কেউ দুশ্চিন্তায় ছিলেন পাক সাংবাদিকরা ভিসা এখনও না পাওয়ায়। বলাবলি চলছিল, আগামী ১৪ অক্টোবরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে উপস্থিত না থাকতে পারলে, তাঁরা হয়তো আর আসবেনই না। যদি না পরে টিম সেমিফাইনালে ওঠে। তবে এ দিনের পর আইসিসি-র সে দুশ্চিন্তা যে কিছুটা কমল, বলাই যায়। আমেদাবাদে ভারত-পাক যুদ্ধের আগে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সাংবাদিকেরই চলে আসার সম্ভাবনা প্রবল।