সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একজন ইউরো ফাইনালে টাইব্রেকারে পেনাল্টি নষ্ট করে দলকে ডুবিয়েছিলেন। আরেকজনকে কেন খেলানো হচ্ছে না, সেই প্রশ্নে বিদ্ধ হতে হয়েছে কোচ গ্যারেথ সাউথগেটকে। মঙ্গল-রাতে সেই দুই ফুটবলারের গোলেই ওয়েলসকে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল ইংল্যান্ড। প্রথমজন, মার্কাস র্যাশফোর্ড করলেন জোড়া গোল। দ্বিতীয় জন, ফিল ফোডেন করলেন অন্য গোলটি। কাকতালীয় ভাবে দুই ফুটবলারই খেলেন ম্যাঞ্চেস্টারের দুই ক্লাব– ইউনাইটেড আর সিটিতে।
ওয়েলসের কাছে হারলেও বিশ্বকাপের (FIFA World Cup 2022) নকআউটে জায়গা পেয়ে যেত ইংল্যান্ড। সেজন্যই হয়তো প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে দলে চার বদল করেন সাউথগেট। র্যাশফোর্ড ও ফোডেন ছাড়াও জর্ডন হেন্ডারসন এবং কাইল ওয়াকার ফেরেন প্রথম একাদশে। এদিন ইংল্যান্ডের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ওয়েলস। মনে হয়েছিল, প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে কোচ রব পেজের দলের প্রধান অস্ত্র হবেন গ্যারেথ বেল। কোথায় কী! উলটে ওয়েলস উইজার্ড এতটাই খারাপ খেললেন যে, বিরতিতেই তাঁকে তুলে নিতে বাধ্য হলেন পেজ।
[আরও পড়ুন: পয়েন্ট না পেয়েই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় কাতারের, নকআউট পর্বে সেনেগাল-নেদারল্যান্ডস]
অবশ্য তাতেও ওয়েলসের খেলায় বদল এল না। শুরু থেকে আক্রমণের ঝড় তুলেও গোল পায়নি ইংল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত গোলমুখ খুললেন র্যাশফোর্ড। ৫০ মিনিটে তাঁর ফ্রি-কিকে কেঁপে গেল ওয়েলসের জাল। তার রেশ কাটার আগেই স্কোর ২-০ করলেন ফোডেন। এই গোলের পিছনেও রয়েছেন র্যাশফোর্ড। বেন ডেভিসের পা থেকে বল কেড়ে তা পৌঁছে দিয়েছিলেন অধিনায়ক হ্যারি কেনের কাছে। বক্সের এক প্রান্ত থেকে অধিনায়কের মাপা পাস গোলে ঠেলতে ভুল করেননি ফোডেন। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দু’হাত ছড়িয়ে যেভাবে ‘সিউ’ সেলিব্রেশনে মাতেন, এদিন একইরকম ভাবে গোল-উদযাপন করেন ফডেন। আর ৬৮ মিনিটে র্যাশফোর্ডের দ্বিতীয় গোলটা একেবারেই ওয়েলস গোলকিপার ড্যানি ওয়ার্ডের ‘উপহার’। জোড়া গোলে এগিয়ে যেতেই হ্যারি কেনকে তুলে নেন কোচ সাউথগেট। চোটের জন্যই সম্ভবত, এদিনও কিছুটা গতি মন্থরতায় ভুগলেন ইংল্যান্ডের সেরা স্ট্রাইকার। দ্বিতীয় রাউন্ডে সেনেগালের মুখোমুখি হওয়ার আগে অধিনায়ক সুস্থ না হলে চাপ বাড়বে থ্রি লায়ন্সের।
এদিকে মাঠের বাইরের হাজারো বিতর্ককে পিছনে ফেলে নকআউটে পৌঁছে গেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA)। মার্কিন বাহিনী ১-০ গোলে ইরানকে হারিয়ে বিশ্বকাপের পরের রাউন্ডে পৌঁছাল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ। এবং একইসঙ্গে বিদায় ঘটে ইরানের। ম্যাচ শেষে ইরানের কোচ বলেন, “যারা গোল করেছে ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করুন। দুর্ভাগ্যবশত আমরা পারিনি।” তবে অন্তত ড্র করেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে চেয়েছিলেন তিনি।
তবে দল হারতেই আনন্দে মেতে ওঠে ইরান। শয়ে শয়ে মানুষ রাস্তায় নেমে সেলিব্রেশন শুরু করে দেন। কিন্তু বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ায় কীসের আনন্দ? আসলে দেশের উত্তাল পরিস্থিতিতেও বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে ইরান। তারই নিন্দা স্বরূপ সেলিব্রেট করে প্রতিবাদ জানান ইরানের সাধারণ মানুষ। ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিও।