সুইজারল্যান্ড– ৩ (৫) (সেফেরোভিচ-২, মারিও)
ফ্রান্স– ৩ (৪) (বেঞ্জিমা-২, পোগবা)
পেনাল্টি শুট আউটে ৫-৪ গোলে ম্যাচ জেতে সুইজারল্যান্ড।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক যেন স্পেন-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের অ্যাকশন রিপ্লে। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকেও স্পেনকে অপেক্ষা করে থাকতে হয়েছিল ১২০ মিনিট পর্যন্ত। লড়াকু ক্রোয়েশিয়া দু’গোলে পিছিয়ে থেকেও সমতা ফিরিয়ে এনে ম্যাচ নিয়ে চলে গিয়েছিল এক্সট্রা টাইমে। এক্সট্রা টাইমে শেষ হাসি তোলা থাকে স্পেনের জন্য।
ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড ম্যাচের চিত্রনাট্যও অবিকল এক। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স (France) এক গোলে পিছিয়ে থেকে একসময়ে এগিয়েও গিয়েছিল ৩-১ গোলে। সবাই ধরেই নিয়েছিলেন ফ্রান্স হাসতে হাসতে চলে যাবে ইউরো কাপের (Euro 2020) শেষ আটে। তখনই ম্যাচে প্রত্যাবর্তন সুইজারল্যান্ডের। অবিশ্বাস্য ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। দুটো গোল করে সমতা ফিরিয়ে আনেন সেফেরোভিচ এবং মারিও। নির্ধারিত সময়ে খেলার ফল ছিল ৩-৩। ১২০ মিনিটের শেষেও স্কোরলাইন অপরিবর্তিত থাকে। এক্সট্রা টাইমে একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল ফ্রান্স। কিন্তু এমবাপে-জিরুরা গোল করতে পারেননি। পেনাল্টি শুট আউটে ৫-৪ গোলে ম্যাচ জেতে সুইজারল্যান্ড। পেনাল্টি শুট আউটের শেষ শটটা মারতে গিয়েছিলেন এমবাপে। তাঁর শট বাঁচান সুইজারল্যান্ডের গোলকিপার ইয়ান সমার। আর তার ফলে এবারের ইউরো কাপে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দৌড় থেমে গেল। শেষ আটে স্পেনের সামনে সুইসরা।
[আরও পড়ুন: Euro 2020: নাটকীয়তায় মোড়া ম্যাচ জিতল স্পেন, টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় ক্রোয়েশিয়ার]
সুইজারল্যান্ডের (Switzerland) বিরুদ্ধে শুরুটা ভালো করেনি ফ্রান্স। সুইসদেরই দাপট ছিল গোড়ায়। ১৫ মিনিটে জুবেরের সেন্টার থেকে হেডে গোল করেন সেফেরোভিচ। তাঁর ঠিক পিছনেই ছিলেন ফরাসি ডিফেন্ডার ক্লেমেন্ত। কিন্তু তিনি কোনও চ্যালেঞ্জ করেননি সেফেরোভিচকে। ফলে বিনা বাধায় গোল করে সুইজারল্যান্ডকে এগিয়ে দেন সেফেরোভিচ। পিছিয়ে পড়লেও জেগে ওঠেনি ফ্রান্স। বরং বলা ভাল সুইসরা গোলের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল।
৫৭ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে ছিলেন গ্রিজম্যান-এমবাপেরা। তার পরেই ছোট্ট একটা ফরাসি ঝড় উঠল। দু’ মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে ফেলেন করিম বেঞ্জিমা। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে গোলের মধ্যে ছিলেন না তিনি। পর্তুগালের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেছিলেন। এদিন আবার গোল পেলেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল সুইজারল্যান্ড। বে়ঞ্জামিন পাভার্ডের অবৈধ ট্যাকল থেকে পেনাল্টি পায় সুইজারল্যান্ড। পেনাল্টি থেকে রিকার্ডো রডরিগেজ গোল করতে পারেননি। তাঁর দুর্বল পেনাল্টি বাঁচিয়ে দেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিস। এর পরেই ফ্রান্সের আগ্রাসন। পাসের বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে এমবাপের কাছ থেকে বল পান বেঞ্জিমা। প্রথমটায় ঠিক মতো বল নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি তিনি। সুইস গোলকিপার গোলমুখ ছোট করে বেরিয়ে এসেছিলেন। বেঞ্জিমা এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে বাঁ পা দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ করে সুইজারল্যান্ডের জালে বল জড়িয়ে দেন। তার ঠিক দু’ মিনিট পরেই ফের গোল বেঞ্জিমার। গ্রিজম্যান সুইসদের ডিফেন্সে কাঁপুনি ধরিয়ে ফাঁকায় দাঁড়ানো বেঞ্জিমার উদ্দেশে সেন্টার করেন। হেড করে গোল করতে ভুল করেননি বেঞ্জিমা।
৭৫ মিনিটে পল পোগবার দুরন্ত গোল। ডান পায়ের বাঁক খাওয়ানো শটে ইয়ান সমারকে পরাস্ত করেন তিনি। ম্যাচ তখন ফ্রান্সের দখলে। সেই ম্যাচে যে অবিশ্বাস্য ভাবে ফিরে আসবে সুইজারল্যান্ড, তা কেউই বুঝতে পারেননি। ৮১ মিনিটে সেফেরোভিচ ফের হেডে ব্যবধান কমান। এক্ষেত্রেও তাঁকে সেভাবে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি। ৯০ মিনিটে মারিও সমতা ফেরান সুইসদের হয়ে। কিছুক্ষণ আগে তাঁর গোলই অফসাইডের অজুহাতে বাতিল করা হয়। সেই মারিও অক্সিজেন ছড়িয়ে দিয়ে যান সুইজরাল্যান্ডের শিবিরে। পেনাল্টি শুট আউটেও শেষ হাসি তোলা থাকে তাদের জন্য। রোনাল্ডো, মদ্রিচদের পর বিদায় এমবাপেরও। গ্ল্যামার হারাচ্ছে ইউরো কাপ।