shono
Advertisement

‘আমি ওরকম করেছি কারণ…’, সোনার গ্লাভস নিয়ে অশালীন অঙ্গভঙ্গির ব্যাখ্যা দিলেন মার্টিনেজ

গোল্ডেন গ্লাভস হাতে ফটোগ্রাফারদের দিকে তাঁর অশালীন পোজ তৈরি করেছে বিতর্ক।
Posted: 02:16 PM Dec 20, 2022Updated: 04:02 PM Dec 20, 2022

দুলাল দে, দোহা: পিছনে বিশাল বারপোস্ট। মাত্র দশ গজ দূরে বক্সের মধ্যে মুয়ানির পায়ে বল। সামনে শুধু এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আতঙ্কে পুরো স্টেডিয়াম চোখ বন্ধ করে ফেলেছে। আর্জেন্টিনার সমর্থকরা তখন যেন নিজেদের হৃদস্পন্দনও শুনতে পাচ্ছেন। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্ত। মুয়ানি শট নিতে তৈরি। গোল ছেড়ে বেরিয়ে এলেন মার্টিনেজ। স্পাইডারম্যানের মতো ছড়িয়ে দিলেন দু’জোড়া হাত-পা। মেসির লাস্ট ডিফেন্সের বাঁ পায়ে আটকে গেল মুয়ানির শট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই এবারের বিশ্বকাপে সেরা সেভ। মার্টিনেজের এই সেভই বিশ্বকাপ (FIFA World Cup 2022) এনে দিল মেসির হাতে। গোল লাইন ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে সেকেন্ডের ভগ্নাংশের দেরি হলেও আর্জেন্টিনার বদলে বিশ্বকাপের গায়ে লেখা হয়ে যেত ফ্রান্সের ঠিকানা। টানা দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেতেন এমবাপেরা।

Advertisement

গত বছর কোপার (Copa America) ফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগের ঘটনা। সোজা মেসির রুমে চলে গিয়েছিলেন মার্টিনেজ (Emi Martinez)। বলেছিলেন, “তোমার জন্য আমি জীবনটাও দিয়ে দিতে পারি।” বাকিটা ইতিহাস। সিনিয়র দলের হয়ে কোনও ট্রফি না জেতা মেসির হাতে উঠেছিল প্রথম ট্রফি, কোপা আমেরিকা। আর এবার তাঁর প্রিয় অধিনায়কের হাতে এনে দিলেন একেবারে বিশ্বকাপ। শুধু অতিরিক্ত সময়ের এই সেভটাই বা কেন? টাইব্রেকারেও আটকালেন ফ্রান্সের শট। সেখানেই ফরাসিদের মনোবল নেমে যায় তলানিতে। এরপর মার্টিনেজকে বিশ্বকাপের সেরা গোলকিপার হিসেবে ‘গোল্ডেন গ্লাভস’-এর মালিকানা দিতে কোনও অসুবিধাই হয়নি ফিফার।

[আরও পড়ুন: খেলার নিয়মভঙ্গ হয়েছে! ফাইনালে মেসির দ্বিতীয় গোল বাতিলের দাবিতে উত্তাল ফুটবল বিশ্ব]

কিন্তু পুরস্কার মঞ্চে দাঁড়িয়ে এ কী করলেন তিনি! গোল্ডেন গ্লাভস (Golden Gloves) হাতে ফটোগ্রাফারদের দিকে এমন অশালীন পোজ দিলেন, যা বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এল। বিশেষ করে কাতারে। তাহলে কি এতদিন ধরে নানা ইস্যুতে কাতারের বিভিন্ন আইনের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখলেন? বললেন, “টাইব্রেকারের সময় ফরাসিরা আমার সঙ্গে যা করেছে, এটা তারই জবাব।” এতটা উত্তেজিত ছিলেন বলেই হয়তো ড্রেসিংরুমে সেলিব্রেশনের সময় এমবাপের নামে এক মিনিট নীরবতা পালন করতে বলেন তিনি।

মার্টিনেজ এমনিতে ভীষণই হাসি খুশি। মেসির দলের সবচেয়ে রসিক মানুষ। সেই মার্টিনেজও কতটা টেনশনে ছিলেন, তা বলে গেলেন ম্যাচ শেষে। বলছিলেন, “কী মারাত্মক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে পার হলাম, সেটা আমিই জানি। যে মুহূর্তে আমরা গোল করে এগিয়ে যাচ্ছি, পরমুহূর্তেই গোল খেতে হচ্ছে। অবিশ্বাস্য ম্যাচ চলছিল। বুঝতে পারছিলাম, ক্রমশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ঢুকছি। ভগবানকে অশেষ ধন্যবাদ। শেষ পর্যন্ত ট্রফিটা আমরাই পেয়েছি। এর জন্যই তো ছোট থেকে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম।”

কিন্তু শেষের মুহূর্তটা? যখন মুয়ানি বল নিয়ে প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন? মুহূর্তটা বলতে গিয়ে তখনও যেন হাফাচ্ছিলেন বিশ্বকাপের সোনার গ্লাভস পাওয়া গোলকিপার। “ভগবান সহায় ছিলেন। ঠিক সময়ে বাঁ পা-টা বাড়িয়ে দিতে পেরেছিলাম বলে ওর শটটা আটকে যায়।” টাইব্রেকারের সময় নিজের মনের অবস্থা কীরকম ছিল, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার। “টাইব্রেকারের সময় অদ্ভুত ভাবে আমি ভীষণ শান্ত হয়ে যাই। মাথা ঠান্ডা রেখে শুধু নিজের কাজটা করে গিয়েছি। ব্যস তাতেই হয়েই গিয়েছে,” হাসতে হাসতে বলে চলে গেলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর গোলকিপার এমিলিয়ানো ডিবু মার্তিনেজ।

[আরও পড়ুন: আধুনিক মহামারী নিঃসঙ্গতা! দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েক হাজার মধ্যবয়সির মৃত্যু]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement