সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৮ বিশ্বকাপে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন তিনি দর্শকের ভূমিকায়। সেবার শেষ ষোলোয় ফ্রান্সের কাছে হেরে ছিটকে যেতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে (Argentina)। পাশে বসা তাঁর ভাইকে বলেছিলেন, ”একদিন আমাকে আর্জেন্টিনার বারের নীচে দেখতে পাবে।” তারও চার বছর আগের বিশ্বকাপের ফাইনালের দিন তিনি পরিবারের জন্য বারবিকিউ রান্না করছিলেন।
সময় কত দ্রুত বদলে যায়। ২০২২ সালে তিনিই মেসির হাতের তাস। চার বছর আগে তাঁর ভাইকে বলা কথাগুলো মিলে গিয়েছে। গোটা আর্জেন্টিনা দেখে ফেলেছে এতদিনে তাঁর হাতেই সুরক্ষিত নীল-সাদা জার্সিধারীদের গোল। তিনি আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনার ডাকাবুকো গোলকিপার। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ফাইনাল যখন টাইব্রেকারে গড়াল তখন তিনিই মেসির মসীহা। তিনিই আর্জেন্টিনার সব। ফাইনালেও তিনি রক্ষাকর্তা। টাইব্রেকারে তাঁর ওই গ্লাভস জোড়া থামিয়ে দিল কোমানের শট।
[আরও পড়ুন: আজ থেকে বিজয়ীর সমার্থক শব্দ লিওনেল মেসি]
চুয়ামেনির শট বেরিয়ে গেল বাইরে। ঠিক দিকেই ঝাঁপিয়েছিলেন মার্টিনেজ। নির্ধারিত সময়ের খেলায় এমবাপের শটও আগেই বুঝতে পেরে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর হাতে লেগে বল জালে আশ্রয় নেয়। এক্স্ট্রা টাইমের একেবারে শেষের দিকে মার্টিনেজ বাঁচান আর্জেন্টিনাকে। তখন ম্যাচ দুলছে ৩-৩-এ। ফ্রান্স ওই সময়ে গোল করে দিলে মেসির স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যেত। এমিলিয়ানো মার্টিনেজ টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপার হলেন। মহাকাব্যিক ম্যাচে মার্টিনেজ শেষ ল্যাপে এসে নায়ক বনে গেলেন।
এই মার্টিনেজই একসময়ে বলেছিলেন, মেসির জন্য তিনি জীবন দিয়ে দিতে পারেন। এই মার্টিনেজই ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের বিরতির সময়ে সতীর্থদের অভয় দিয়ে বলেছিলেন, তোমার খেলে যাও। আমি পিছনে রয়েছি। আমাকে খুন না করলে ওরা গোল করতে পারবে না। বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে এই মার্টিনেজ বলেছিলেন, ”এমবাপের ফুটবলজ্ঞানের ঘাটতি আছে।” তার আগে আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছিলেন এমবাপে। বলেছিলেন, ”ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে পৌঁছানোর জন্য উঁচু মানের ম্যাচ খেলে না। দক্ষিণ আমেরিকায় ফুটবল ইউরোপের মতো উন্নত নয়। এ কারণেই গত কয়েকটি বিশ্বকাপে ইউরোপ জিতেছে।” শুধুমাত্র মাঠের বাইরে নয়, মাঠের ভিতরেও এমবাপেকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন তিনি। এমবাপে এদিন ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। কিন্তু টাইব্রেকারে তাঁর ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে ওঠে। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধেও তিনিই ছিলেন আর্জেন্টিনার ত্রাতা। ফাইনালেও তিনি নায়ক।