সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি বছরের ১ মে। লখনউ-এর (Lucknow) একানা স্টেডিয়ামে (Ekana Stadium) আইপিএল-এর (IPL 2023) মঞ্চে লখনউ সুপার জায়ান্ট (Lucknow Super Giants) বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (Royal Challengers Bangalore) ম্যাচ। সেই ম্যাচে ফিল্ডিং করার সময় পেয়েছিলেন চোট। কোয়াড্রিসেপের সেই চোটের জন্য লোকেশ রাহুলের (Lokesh Rahul) জীবনে অন্ধকার নেমে এসেছিল। কেরিয়ার নিয়ে উঠে গিয়েছিল প্রশ্ন। পাঁচ মাস পর সেই স্টেডিয়ামেই ফিরলেন টিম ইন্ডিয়ার (Team India) তারকা ব্যাটার। চলতি বিশ্বকাপে (ICC ODI World Cup 2023) ইতিমধ্যেই ‘পাঁচে পাঁচ’ করে দুই নম্বরে রয়েছে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) দল। আর কয়েক ঘন্টা পর এই মাঠের বাইশ গজে ইংল্যান্ডের (England) বিরুদ্ধে নামবে ভারতীয় দল। এর আগে বিসিসিআই.টিভি-র সামনে আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন তিনি। সেই ভিডিও ভাইরাল হতে সময় লাগেনি।
লোকেশ রাহুল বলছিলেন, “আপনারা লখনউতে রয়েছেন। এবার মুখে হাসি আনুন। এই সেই একানা স্টেডিয়াম। আইপিএল-এ লখনউ সুপার জায়ান্টের হোম গ্রাউন্ড। আমাদের ঘরের মাঠ। এই মাঠ আমার হৃদয়ের খুবই কাছের। প্রথম দিন থেকে উত্তর প্রদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা আমাদের সমর্থন করেছেন। আশাকরি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও আমরা পুরো সমর্থন পাব।”
[আরও পড়ুন: পরপর চার ম্যাচ হেরেও শেষ চারে যেতে পারে বাবর আজমের পাকিস্তান! কিন্তু কীভাবে?]
কেমন ছিল সেই কঠিন সময়? রাহুল ফের বলেন, “আমি বল তাড়া করছিলাম। আর তখনই টেন্ডন ছিঁড়ে গিয়েছে চোট পেয়েছিলাম। পুরোপুরি টেন্ডন ছিঁড়ে গিয়েছিল। আমার কোয়াড্রিসেপ থেকে টেন্ডন ছিঁড়ে গিয়ে আলাদা হয়ে যায়। যখন এটা ঘটে তখন আমি, আমার পরিবার, ফ্র্যাঞ্চাইজি, দল সকলেই, এটাই ভাবছিল যে, খুব একটা বেশি ছিঁড়ে যায়নি টেন্ডন, অল্পই ছিঁড়েছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমি ঠিক হয়ে যাব। কিন্তু যখন স্ক্যান রিপোর্ট আসে, তখন বোঝা যায় যে, টেন্ডন পুরোটাই ছিঁড়ে গিয়েছে। তখনই বোঝা গিয়েছিল যে, অস্ত্রোপচার করাতেই হবে। ফিজিয়োরা বুঝে গিয়েছিলেন এই একটা রাস্তাই খোলা রয়েছে আমার। কয়েক’টা দিন লেগেছিল, শুধু এটা ঠিক করতে যে, আমি কোথায় অস্ত্রোপচার করাব, কার কাছে করাব! তবে আমি সেরা চিকিৎসাই পেয়েছি। এর জন্য় বিসিসিআই এবং সকল ফিজিয়োকে ধন্য়বাদ দেব। খুব দ্রুত সবকিছু হয়েছে।”
তবে শুধু ইতিবাচক দিক নয়, এই মাঠে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া খারাপ ঘটনার কথাও তুলে ধরলেন। বলছিলেন, “অনুশীলন শুরু হওয়ার আগে আমাদের ট্রেনার রজনী স্যরকে সেই অভিশপ্ত রাতের কথা বলছিলাম। একটা চোট আমার কেরিয়ারকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। চোটের জন্য যন্ত্রণা তো ছিলই, তবে রিহ্যাব করার সময় সেই ব্যথা আরও বেড়ে যায়। সেই সময় পরিবার ও সতীর্থরা পাশে না থাকলে তলিয়ে যেতাম। সেই কঠিন সময় পার করে এসেছি। সেইজন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।”
একটা মারাত্মক চোট মানুষের জীবনকে শেষ করে দেয়। কেরিয়ারের বারোটা বেজে যেতে পারে। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে চোটের জন্য মাঠের বাইরে থাকা যেন শাপে বর হয়ে দাঁড়ায়। কেএল রাহুলের ক্ষেত্রে তো সেটাই হল। এশিয়া কাপে কামব্যাক করার পর থেকে চলতি কাপ যুদ্ধে দারুণ ছন্দে আছেন লোকেশ রাহুল। চাপের মুখে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি উইকেটকিপার হিসাবেও নজর কাড়ছেন তিনি।