সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ২১২ রান তাড়া করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার (Australia) জয়ের জন্য তখন আর ৯ রান বাকি। কিন্তু ৪৫তম ওভারে এইডেন মার্করামের (Aiden Markram) বলে প্যাট কামিন্সের (Pat Cummins) ক্যাচটা ফেলে দেন কুইন্টন ডি কক (Quinton De Kock)। দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) তারকা ক্রিকেটারের চোখ-মুখ দেখে মনে পড়ে যাচ্ছিল হার্শেল গিবসকে (Herschelle Gibbs)! ১৯৯৯ সালের ১৭ জুন। সেবারের কাপযুদ্ধের সেমিফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ইডেন গার্ডেন্সের (Eden Gardens) এই ম্যাচের মতো সেবারও চাপের মুখে স্টিভ ওয়ার (Steve Waugh) লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দিয়েছিলেন গিবস। তবুও এবার গ্লাভস হাতে এমন রেকর্ড গড়লেন, যা মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni) কিংবা অ্যাডাম গিলক্রিস্টও (Adam Gilchrist) করতে পারেননি।
বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক স্টিভ পরবর্তী সময় বলেছিলেন, ‘ও হে, তুমি তো বিশ্বকাপটাই ফেলে দিলে!’ প্যাট কামিন্স এই প্রোটিয়া কিপারকে তেমন কিছু বলে চিমটি দিয়েছিলেন বলে জানা নেই। তবে ম্যাচের শেষে ডি ককের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বলে দিচ্ছিল,’চোকার্স’ তকমা নিয়ে ফের একবার বিদায় নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে তিনি ট্র্যাজিক নায়কদের তালিকায় নাম লিখিয়ে ফেললেন। গোটা ম্যাচে যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডারেরা একাধিক ক্যাচ ফেলেছে। তবুও কামিন্সের ফেলে দেওয়া ক্যাচ যেন ডি কক-কে আজীবনের জন্য বিঁধবে।
[আরও পড়ুন: ‘শচীনের ১০০ সেঞ্চুরির রেকর্ড একমাত্র ভাঙতে পারে বিরাট’, সদর্পে ঘোষণা শাস্ত্রীর]
এবারের বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগেই জানিয়েছিলেন একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা। সেইমতো অজিদের বিরুদ্ধে এই ম্যাচটাই ছিল ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তাঁর শেষ ম্যাচ। কিন্তু বিদায়ী ম্যাচ মোটেও সুখের হল না। ১০ ম্যাচে ৫৯৪ রান করে সেরা ব্যাটারদের তালিকার দ্বিতীয়স্থানে রয়েছেন ডি কক। গড় ৫৯.৪০। সর্বোচ্চ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৪০ বলে ১৭৪ রান। ১০৭.০২ স্ট্রাইক রেট বজায় রেখে করেছেন ৪টি শতরান। তবুও অজিদের বিরুদ্ধে কেরিয়ারের শেষ একদিনের ম্যাচে রান পেলেন না। ওডিআই-তে জশ হ্যাজেলউডের বলে এই নিয়ে অষ্ঠমবার আউট হয়ে ফেরার সময় তাঁর নামের পাশে মাত্র ৩ রান!
টুর্নামেন্টে সবচেয়ে সফল উইকেটকিপার হিসেবে ২০টি আউটের সঙ্গে যুক্ত ডি কক। তাঁর সবচেয়ে কাছের লোকেশ রাহুল। টিম ইন্ডিয়ার উইকেটকিপার ১৬টি ডিসমিসালের সঙ্গে যুক্ত। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম উইকেটকিপার হিসাবে এক আসরে ৫০০ রান ও ২০ ডিসমিসালের ডাবল রেকর্ড গড়লেন ডি কক। এবং অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও এম এস ধোনিকে ছাপিয়ে গেলেন। কিন্তু শেষটা আর সুখের হল কোথায়! মোক্ষম সময় ক্যাচ ফেলে দিয়ে ট্র্যাজিক নায়ক হিসাবেই রয়ে গেলেন ডি কক।