ইস্টবেঙ্গল: ২ (‘১০, ‘৯১ ক্লেইটন সিলভা)
হায়দরাবাদ: ১ (‘৮ হিতেশ শর্মা)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মনে হচ্ছিল চলতি আইএসএল-এ (ISL 2023-24) আবার পয়েন্ট নষ্ট করবে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ঘরের মাঠ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে একাধিক গোলের সুযোগ হারিয়ে জামশেদপুর এফসি-র (Jamshedpur FC) বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট মাঠে ফেলে এসেছিল লাল-হলুদ। তবে এবার একেবারে শেষ মুহূর্তে খেলা বদলে দিলেন ক্লেইটন সিলভা (Cleiton Silva)। শনিবার অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর হায়দরাবাদ এফিস-র (Hyderabad FC) বিরুদ্ধে পিছিয়ে গিয়েও ক্লেইটনের গোলে সমতা ফিরেছিল। আর শেষ দিকে সেই ব্রাজিলিয়ানের গোলেই এল জয়। ৯০+৩ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বিশ্বমানের গোল করেন ক্লেইটন সিলভা। স্পট কিক থেকে নেওয়া তাঁর শট প্রথম পোস্ট দিয়ে হায়দরাবাদের জালে জালে জড়িয়ে যায়। বল লাগে ক্রসবারের নীচে। গোলকিপার অনুজের নাগালের বাইরে ছিল বল। ফলে এই প্রথমবার হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জয়ের মুখ দেখল লাল-হলুদ।
এদিন শুরু থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলে নিজামের শহরের দল। সেই সুবাদে ৮ মিনিটে হিতেশ শর্মার গোলে এগিয়ে যায় হায়দরাবাদ। বক্সের ভিতর থেকে হিতেশের প্রথম পোস্টে নেওয়া চিপ শট ইস্টবেঙ্গলের জালে জড়িয়ে যায়। ফলে শুরুতেই ১-০ গোলের এগিয়ে যায় থাংবোই সিংডোর ছেলেরা।
তবে বেশিক্ষণ গোল ধরে রাখতে পারেনি হায়দরাবাদ। গ্যালারিতে থাকা অগণিত লাল-হলুদ সমর্থক ও কুয়াদ্রাতের মুখে হাসি ফোটান ক্লেইটন সিলভা। বক্সের ভিতর থেকে হায়দরাবাদের জালে বল জড়িয়ে দেন সিলভা। আর এর পরেই দেখা গেল আকাশের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরের কাছে তাঁর সেই চিরাচরিত সেলিব্রেশন।
[আরও পড়ুন: ইতিহাস গড়লেন দুই বঙ্গ তনয়া সুতীর্থা ও ঐহিকা, সেমিফাইনালের টিকিট পেতেই নিশ্চিত হল পদক]
১৬ মিনিটেও ফের গোল করার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। ফ্রি-কিক আদায় করে নেন ক্লেইটন। তবে স্পট কিক থেকে বোরহা হেরেরার নেওয়া শট সরাসরি চলে যায় হায়দরাবাগ গোলকিপার লক্ষ্মীকান্ত কাট্টিমনির দস্তানায়।
২১ মিনিটের মাথায় আবার লাল-হলুদের কাছে গোলের সুযোগ চলে এসেছিল। এবার বক্সের বাইরে থেকে হায়দরাবাদের পোস্ট লক্ষ্য করে জোরালো শট নেন সাউল ক্রেসপো। তবে সেই দূরপাল্লার শটও ক্রসবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে চলে যায়।
গোল না করতে পারলেও ক্লেইটন বারবার বিপক্ষের বক্সে হানা দিচ্ছিলেন। এরই মধ্যে ৪০ মিনিটের মাথায় বক্সের ভিতর থেক নেওয়া মান্দারের শট প্রতিহত হয় কাট্টিমনির দস্তানায়। সেভ করার পরেই ক্লেইটন্সের সঙ্গে ধাক্কায় চোট পান হায়দরাবাদের গোলকিপার। ক্লেটনের হাঁটু গিয়ে লাগে কাট্টিমনির মুখে। তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বেরোতে দেখা যায়। চোখের নীচে ফুলেও যায়। চোট পাওয়া কাট্টিমনি মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। তাঁর বদলে মাঠে নামেন গোলকিপার অনুজ কুমার।
এভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা। মাঝেমাঠে একেবারেই নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন শৌভিক চক্রবর্তী। তাই দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই শৌভিক তুলে নেন কুয়াদ্রাত। কিন্তু এতে লাভ হল না। মিস পাসের ছড়াছড়ি ছিল। সঙ্গে একের পর এক গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে যাচ্ছিল লাল-হলুদ। ক্লেইটন পুরো ম্যাচ ফিট না হলেও তিনি চেষ্টা করছিলেন। তবে ডুরান্ড কাপের ডার্বিতে গোল করা নন্দ কুমারকে প্রায় খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁকে কড়া মার্কিং-এ রাখছিলেন বিপক্ষের ডিফেন্ডার জাও ভিক্টর। এরপর দুই দল গোলের মুখ খোলার চেষ্টা করলেও লাভ হল না। ৮৮ মিনিটে নাওরেম মহেশকে তুলে গোলের সুযোগে ভিপি সুহেরকে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়। একেবারে শেষ দিকে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন জাভি সিভেরিও। তখন মনে হচ্ছিল লাল-হলুদ তিন পয়েন্ট ফের মাঠে রেখে এল। তবে এক্সট্রা টাইমে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন সেই ক্লেইটন। ফলে চলতি আইএসএল-এ শেষ পর্যন্ত তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ল লাল-হলুদ।