সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁকে বলা হত ‘ময়দানের বাজপাখি’। সেই কিংবদন্তি গোলকিপার সনৎ শেঠ (Sanath Seth) আজ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ। চুনী গোস্বামী (Chuni Goswami), পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের(PK Banerjee) সঙ্গে একসঙ্গে খেলেছেন তিনি। তবে বয়সের দিক থেকে পিকে ও চুনীর থেকে কিছুটা বড় ছিলেন তিনি। ভারতীয় ফুটবলের দুই মহানক্ষত্রের প্রয়াণে ভেঙে পড়েছিলেন সনৎ শেঠ। শুক্রবার নবতিপর গোলকিপারও চলে গেলেন। রেখে গেলেন অনেক স্মৃতি।
[আরও পড়ুন: ‘সব ফরম্যাটে খেলা সম্ভব নয়’, টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ইঙ্গিত শাকিবের]
বছর খানেক আগেই চলে গিয়েছিলেন সনৎ শেঠের স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন সনৎবাবু। ভাল করে হাঁটতে পারতেন না। ক্রাচ ছিল তাঁর সঙ্গী। ১৯৪৯-৬৮ এই ১৯ বছর ময়দানে দাপিয়ে খেলেন তিনি। যখন যে দলের হয়ে খেলেছেন, সেই দলকে নির্ভরতা জুগিয়েছেন। রেলওয়ে এফসি তাঁর প্রথম ক্লাব। তার পর এরিয়ান্স, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের হয়ে খেলেছেন তিনি। একসময়ে এক সাক্ষাৎকারে সনৎ শেঠ বলেছিলেন, ”রেলওয়ে এফসি-তে আমার জন্ম। এরিয়ান্স আমার মামার বাড়ি। ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগান আমার মাসি-পিসির বাড়ি।”
তখন ১৯৪৯ সাল। সনৎ শেঠের বয়স তখন ১৯। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা লিগে দাপিয়ে গোলকিপিং করছেন তিনি। হঠাৎতই একদিন তিনি ডাক পান রেলওয়ে এফসি ক্লাবের থেকে। সেই সময়ে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ম্যাচে রেলওয়ে এফসির প্রথম গোলকিপার অসুস্থ ছিলেন। দ্বিতীয় গোলরক্ষকের চোট। সেই কারণেই ডাক পড়েছিল সনৎ শেঠের। সেই শুরু। এর পরে ১৯৫২ সালে এরিয়ান্সে সই করেন। ১৯৫৭ সালে ইস্টবেঙ্গলের জার্সি পিঠে চাপান। পরের বছর মোহনবাগানে চলে আসেন। ছ’ বছর সবুজ-মেরুনে খেলার পরে ফের এরিয়ান্সে ফেরেন তিনি। তিন বছর খেলে ইস্টবেঙ্গলে যান। লাল-হলুদে খেলেই ময়দানকে বিদায় জানান সনৎ শেঠ।
১৯৫৪ সালে ম্যানিলা এশিয়ান গেমসে ভারতীয় দলে ছিলেন। তবে প্রথম একাদশে জায়গা পাননি তিনি। ১৯৫৫ সালে রাশিয়া সফরেও গিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে বলা হত এনসাইক্লোপিডিয়া। স্মৃতিশক্তি ছিল প্রখর।সেই মানুষটাই আজ চলে গেলেন। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ময়দানে।