সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীময়ী (Sreemoyee Chattoraj) একেবারে তাঁর মায়ের মতো মেয়ে! আর তাই নিজে মা হয়ে, মায়ের কথাগুলো বার বার মনে পড়ে তাঁর। তবে শুধু মা নয়, বাবা রয়েছেন শ্রীময়ীর জীবন শিক্ষার সবটা জুড়ে। যে কথা এতদিন নিজেই মেনে চলেছেন। যে কথাগুলো শুনেই মানুষ হয়ে উঠেছেন। মা-বাবা সেই শিক্ষাকেই এবার মনের জানালা দিয়ে বাইরে নিয়ে আসলেন। সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন তাঁর মা-বাবার প্রতি ভালোবাসাকে। উপলক্ষ্য শ্রীময়ীর মা-বাবার ৪২ বছরের বিবাহবার্ষিকী।
সোশাল মিডিয়ায় কী লিখলেন শ্রীময়ী?
আজ আমার বাবা মায়ের ৪২তম বিবাহ বার্ষিকী,, আমাকে অনেকে জিজ্ঞাসা করে সম্পর্ক বলতে তুমি কি বোঝ, তোমার কাছে সম্পর্ক কি, তুমি বিয়ে করেছ এত বয়সের পার্থক্যে,, ''আমার কাছে , সবকিছুর উত্তর একটাই আমার কাছে সম্পর্কের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হল আমার মা-বাবার সম্পর্ক। আমার মা-বাবার ও বয়সের ফারাক অনেকটা প্রায় ১০ বছর।দীর্ঘ ৪২ বছর তারা তাদের বিবাহিত জীবন পার করেছে, খারাপ ভালো সব মুহূর্ত কাটিয়েছে, আমি কখনো দেখিনি তাদের মধ্যে চূড়ান্ত অশান্তি, আমি কখনো দেখিনি বাবা-মাকে কখনো অসম্মান করেছে, আমি কখনো দেখিনি মা-বাবাকে অসম্মান করছে, আমি কখনো শুনিনি আমার মা-বাবাকে অকথ্য ভাষায় কথা বলতে ,,আমি বা আমার দিদি বড় হয়েছি একটা সুস্থ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে,, আমরা শৈশবটা শৈশবের মতো করে কাটিয়েছি,,আমার মা হয়তো কোন অফিসে চাকরি করেনি, কিন্তু বাড়ির যে চাকরিটা পালন করেছে তার জন্যই বোধহয় আমার , দিদির ,আমার দিদির মেয়েরা , এমনকি এখন আমার মেয়ে তার দিদা এবং দাদুর যত্নে বড় হচ্ছে, বাবা অফিস থেকে এসে কি খাবে,আমাদের কোনটা দরকার, কোন টিচার দরকার, কোন খাবারটা মুখের কাছে তুলে দেওয়া দরকার, জ্বর হলে সারা রাত জেগে বসে থাকা, জলপট্টি দেওয়া, আমাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া, টিউশনে নিয়ে যাওয়া, দিদিকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া ,টিউশনে নিয়ে যাওয়া, আমাকে একটা সময় পর্যন্ত শুটিংয়ে পৌঁছে ঘন্টার পর ঘন্টা বাইরে অপেক্ষা করে থাকা, এগুলো সব মায়ের অবদান,তার নাতনিদের কি ভালো লাগে, সবটাই মুখ বুঝে, হাসিমুখে ধৈর্য ধরে দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে করে এসেছে''
এই পোস্টেই শ্রীময়ী আরও লিখলেন, ''আর বাবার কথা যদি বলি সংসারের কোনটা প্রয়োজন,জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ ,গ্যাসের বিল, ইলেকট্রিক বিল, আমারও দিদির স্কুল ফি, টিউশন ফি,মেয়েদের কি দরকার, সংসারের কি প্রয়োজন, কোন খেলনাটা নাতনিদের দরকার, কোন খাবারটা মেয়েদের বায়না, মায়ের কোন শাড়ি ,কোন গয়নাটা দরকার ,বাইরের পুরো জগৎটাই বাবা সামলেছে, এখনো সামলাই,, তাই মা আর বাবা শব্দটা আমার কাছে খুব বড়, হয়তো মা-বাবার উপর অভিমান হয়, চিৎকার করি, আমি এ যুগের মেয়ে হয়ে বলতে পারি আমাদের মধ্যে সেই ধৈর্য নেই, যে ধৈর্য তারা অর্জন করেছে দীর্ঘ বছর ধরে। কিন্তু তবুও মায়ের থেকে শেখা, যে কিভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে সংসারী হতে হয়, কিভাবে সমস্ত রকম পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে হয়, আমি আমার মা বাবার থেকে শিখেছি কিভাবে সংসার গুছিয়ে নিতে হয়, আমি খুব কম বয়সে মা হয়েছি, এই জোরটাও আমি পেয়েছি আমার পরিবারের থেকে,,আমি খুব গর্বিত আমার পরিবার নিয়ে, আমার মা ও বাবা, জাঁকজমকতায় বিশ্বাস করে না, কোন বিবাহ বার্ষিকী,জন্মদিন উদযাপনে বিশ্বাস করে না, শুধু এটুকুই বিশ্বাস করে যে তার ছোট মেয়ে, ছোট জামাই, বড় মেয়ে ,বড় জামাই ,বড় মেয়ের দুই মেয়ে দুই নাতনি এবং ছোট মেয়ের সদ্যোজাত মেয়ে, নাতনি নিয়ে তারা সুখে কাটাবেন,, এখনো আমার মা আমার মেয়েকে নিয়ে রাত জাগে,,আমাদের সুখটাই তাদের পরম সুখ। এটুকুই বলতে পারি মা-বাবাকে ,হয়তো সোশ্যাল মিডিয়াটাও তারা দেখতে জানে না ,,আমার মা-বাবার কোন সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট নেই, তারা চান না,,কিন্তু তাও আমি আজ শেয়ার করলাম কারণ কিছু কিছু কথা হয়তো তাদের বলা হয় না ,শুধু এটুকুই বলবো যেভাবে আমাকে, দিদিকে আমাদের পরিবারকে ছাতার মতো আগলে রেখেছ এভাবেই সারা জীবন থেকো। আর আমাদের কিছু চায় না তোমাদের থেকে ,,শুভ বিবাহ বার্ষিকী।। তোমাদের সম্পর্ক দীর্ঘজীবী হোক।''
দোল পূর্ণিমায় শ্রীময়ী চট্টরাজ প্রথমবার বুঝতে পেরেছিলেন মা হতে চলেছেন। আর অন্নকূটের দিনই কাঞ্চন-শ্রীময়ী ঘর আলো করে এসেছে কন্যাসন্তান। যেন অন্নপূর্ণা! তারকাদম্পতি কৃষ্ণভক্ত হওয়ায় সাধ করে মেয়ের নাম রেখেছেন ‘কৃষভি’।
একরত্তিকে নিয়ে মল্লিক বাড়িতে বর্তমানে আনন্দের আবেশ। নিত্যদিন নতুন জামা পরছে সে। আর কেউ কোলে নিলেই ঠেলে উপরে উঠে যাওয়ার চেষ্টা করে। দেখতে যেমন বাবার মতো, তেমনই নাকি স্বভাবও কাঞ্চনের মতোই। শ্রীময়ীর কথায়, বড্ড ছটফটে। গায়ের রং গোলাপি। তাই বাবা আদর করে কখনও টম্যাটো আবার কখনও বা সোনামা বলে ডাকে। আর রাতভর মেয়ের জন্য জেগে থেকেও সকালে কাজে বেরতে কোনও ক্লান্তি নেই কাঞ্চনের।