শুভজিৎ মণ্ডল: ময়দানে তিনি পরিচিত পোড়খাওয়া মোহনবাগান কর্তা হিসেবে। নিজের ক্লাবের অচলাবস্থা কাটাতে ছুটোছুটি করতে হয় দিনভর। আসলে ফুটবলটাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসেন সৃঞ্জয় বোস। আর সেকারণেই হয়তো যখনই ফুটবল সমর্থকরা সমস্যায় পড়েন, কিংবা যখনই ফুটবলমাঠে অনভিপ্রেত কিছু ঘটে, তখনই এগিয়ে আসেন মোহনবাগান কর্তা। ইস্টবেঙ্গলের তরুণ সমর্থক কংসবণিকের সঙ্গে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কথা শোনামাত্রই তাঁর সাহায্যেও এগিয়ে গেলেন সৃঞ্জয় বোস।
[বিলেতের মাঠে ডার্বি! ইস্টবেঙ্গলকে হারাল মোহনবাগান]
অনুর্ধ্ব-১৯ আইএফএ শিল্ড দেখতে বারাসত গিয়েছিলেন বালির ইস্টবেঙ্গল সমর্থক অনির্বাণ কংসবণিক। ম্যাচের পর বাড়ি ফেরার সময় স্টেশন চত্বরে বচসায় জড়ান দুই দলের সমর্থকরা। সেই সময়ই মোহনবাগান সমর্থকদের ছোড়া এক পাথর এসে লাগে অনির্বাণের মাথায়। আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে, তাকে ভর্তি নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। মাথায় পাঁচটি সেলাই নিয়ে বাড়ি ফেরেন অনির্বাণ। সোমবার রাতে হঠাৎই তার শরীরের অবনতি হয়। পরিস্থিতি এমনই যে এখন অস্ত্রোপচার ছাড়া উপায় নেই। গুরুতর আহত অনির্বাণের চিকিৎসা চলছে তপসিয়ার ফ্লেমিং হসপিটালে।এই চিকিৎসার সাহায্যার্থে মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষ থেকে হাত বাড়িয়ে দিলেন সৃঞ্জয় বোস। মোহনবাগান ক্লাবের আরও দুই কর্তা সঞ্জয় ঘোষ (বাপ্পা) এরং সম্রাট ভৌমিক আজ হাসপাতালে গিয়ে অনির্বাণের বাবা দ্বিজেন কংসবণিকের সঙ্গে দেখা করে তিরিশ হাজার টাকা তাঁর হাতে তুলে দেন। আজই অনির্বাণের অস্ত্রোপচার হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ‘ব্রেন ওপেন’ করতে হবে। আনুমানিক খরচ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যেই দু’দলের বহু সমর্থক এগিয়ে এসেছেন অনির্বাণের সাহায্যার্থে।
[আদৌ সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে খেলতে পারবেন? অন্ধকারে সুখদেবদের ভবিষ্যৎ]
ময়দানে ইস্ট-মোহন দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। আর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের লড়াইয়ে মাঝেমাঝেই মাত্রা ছাড়িয়েছেন সমর্থকরা। একাধিকবার ঘটেছে রক্তারক্তি। ঘটেছে প্রাণহানিও। কিন্তু, যখনই বিপদ এসেছে ক্লাবের মতানৈক্য সরিয়ে রেখে পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা ময়দান। আবারও, অনির্বাণের সাহায্যে এগিয়ে এসে সৃঞ্জয় বোস প্রমাণ করলেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মানেই শত্রুতা নয়। ময়দান বলছে, বেঁচে থাক ইস্ট-মোহন, বেঁচে থাক প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিন্তু তারও আগে বেঁচে থাক মানবিকতা।
The post আহত ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে আর্থিক সাহায্য, পাশে দাঁড়ালেন সৃঞ্জয় বোস appeared first on Sangbad Pratidin.