সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একসময় কোচবিহারের ববিতা সরকার (Babita Sarkar) এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে গর্জে উঠেছিলেন। মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতেও পিছপা হননি। ওই মামলাতেই বর্তমানে ইডির জালে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। গ্রেপ্তারি নিয়ে শোরগোলের মাঝে মুখ খুললেন বর্তমানে স্কুলশিক্ষিকা ববিতা।
মন্ত্রী পার্থর (Partha Chatterjee) গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে শনিবার ববিতা বলেন, “আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা কোথাও একটা আশার আলো দেখছেন। অনেকেই মনে করছেন তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন। অথচ তাঁরা যোগ্য প্রার্থী। আমি স্কুলে চাকরি পেয়েছি। আমার অন্যান্য বন্ধুবান্ধবরাও যাতে চাকরিতে যোগদান করেন সেই আশা করব।” ববিতা আরও বলেন, “এই দুর্নীতির তদন্ত হোক। উপযুক্ত শাস্তি হোক দোষীদের। এই লড়াইয়ের জয় সেদিনই হবে যেদিন আমার মতো চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তা নয়, চক ডাস্টার হাতে শিশুদের শিক্ষা দেবেন।”
[আরও পড়ুন: SSC দুর্নীতি মামলা: পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অধ্যাপক মোনালিসা দাস, তাঁর সম্পত্তির হিসেব দেখে চমকে যাবেন]
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর এসএসসি (SSC) পরীক্ষায় বসেছিলেন ববিতা সরকার। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল মেধাতালিকা। সেখানে ওয়েটিং লিস্টে নাম ছিল তাঁর। সাধারণত প্যানেল লিস্টে থাকা কর্মপ্রার্থীদের চাকরি হওয়ার পর ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরি প্রার্থীদের পালা আসে। তাই আশায় বুক বেঁধে বসেছিলেন শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ের বাসিন্দা ববিতা সরকার। কিন্তু সেই চাকরি আর জোটেনি। তারই মধ্যে তালিকা প্রকাশের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কর্মপ্রার্থীরা। দেখা যায়, ববিতা সরকারের নাম রয়েছে ২০ নম্বরে। কিন্তু দ্বিতীয় কাউন্সেলিংয়ের পর তিনি জানতে পারেন তাঁর নাম চলে গিয়েছে ২১ নম্বরে। অদৃশ্য হাতের ম্যাজিকে এক নম্বরে পৌঁছে গিয়েছেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা।
এরপরই ন্যায় বিচারের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন ববিতা সরকার। অঙ্কিতার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। ৪৩ মাস স্কুলে চাকরি করাকালীন প্রাপ্ত বেতনও ফেরার দেওয়ার কথা বলা হয়। সেই মতো প্রথম কিস্তিতে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন মন্ত্রীকন্যা। হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, অঙ্কিতার শূন্যপদে চাকরি পেলেন ববিতা। তাঁর প্রাপ্ত বেতনের টাকাও পেয়েছেন লড়াকু ববিতা। তাঁর আন্দোলনের জেরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করল ইডি। আগামী দিনে আরও প্রভাবশালী কারও নাম জড়িয়ে পড়ে কিনা, তা নিয়েই চলছে জোর আলোচনা।