অর্ণব আইচ: জামিন নাকি জেল হেফাজত? ইডি হেফাজত শেষে কী রয়েছে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ভাগ্যে? সওয়াল জবাব শেষে রায়দান স্থগিত রাখলেন বিচারক। তবে শুনানি চলাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওঠা প্রভাবশালী তত্ত্ব খারিজে জোর প্রাক্তন মন্ত্রীর আইনজীবী কৃষ্ণচন্দ্র দাসের।
শুক্রবার আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) আর মন্ত্রী নন। কোনও দলীয় পদেও নেই। তিনি এখন শুধুই একজন বিধায়ক। আর সেই পদ থেকেও ইস্তফা দিতে রাজি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোনও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়নি। ডিড যা উদ্ধার হয়েছে তা নকল। ঘুষ নেওয়ার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তথ্য পায়নি। পার্থকে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বলির পাঁঠা। উনি একজন সাধারণ মানুষ। তাঁর কোথাও পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। তদন্ত যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। আর নতুন কোনও তথ্য পাওয়ার নেই। এই যুক্তিতে পার্থকে জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী কৃষ্ণচন্দ্র দাসের। সরকারি আইনজীবীর দাবি, অর্পিতা উচ্চশিক্ষিত। তাঁর জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। তাই খাবার ও জল পরীক্ষা করে দিতে হবে। ‘প্রথম শ্রেণির কয়েদি’ হিসাবে জেলে রাখার আবেদন অর্পিতার আইনজীবী সোহম বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
[আরও পড়ুন: এবার কলকাতা পুলিশের নজরে ঝাড়খণ্ডের আইনজীবী, রাঁচিতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার বিপুল সম্পত্তি]
পার্থর আইনজীবীর প্রভাবশালী তত্ত্বের দাবি খারিজ সংক্রান্ত সওয়ালকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে ইডি’র আইনজীবী জানান, যে ব্যক্তি তাঁর অ্যারেস্ট মেমোয় মুখ্যমন্ত্রীর নাম লেখেন তিনি প্রভাবশালী নন তা মানা যায় না। এছাড়াও ইডি’র আইনজীবীর দাবি, অনন্ত টেকফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। সংস্থার অফিস হিসাবে অর্পিতার (Arpita Mukherjee) বেলঘরিয়ার রথতলার ফ্ল্যাটের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। অর্পিতা ও পার্থর পরিবারের মধ্যে শেয়ার কেনাবেচার প্রমাণ মিলেছে।
এছাড়া ৫০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং একটি ট্রাস্টের খোঁজ মিলেছে। অর্পিতার ৩১টি এলআইসির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। অর্পিতার নামে থাকা ওই জীবনবিমার নমিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডি’র আইনজীবী আরও দাবি, এখনও ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলির লেনদেন সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটের সিজার লিস্ট খতিয়ে দেখে ভবিষ্যতে কথাবার্তা বলার প্রয়োজন রয়েছে। তাই দু’জনকে জেল হেফাজতে রেখে আরও জেরার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেই দাবি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আইনজীবীর।