shono
Advertisement

শ্বাসনালীতে ছোলা আটকে প্রাণসংশয় শিশুর, বিপণ্মুক্ত করল এসএসকেএম

হাতুড়ের অজ্ঞতায় প্রাণসংশয়। The post শ্বাসনালীতে ছোলা আটকে প্রাণসংশয় শিশুর, বিপণ্মুক্ত করল এসএসকেএম appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 07:52 PM Feb 08, 2018Updated: 08:07 PM Feb 08, 2018

গৌতম ব্রহ্ম: বয়স মোটে এক বছর চার মাস। হাসপাতালে যখন আনা হয় তখন শ্বাসকষ্টের চোটে রীতিমতো হাঁপাচ্ছে একরত্তি। মুখ থেকে বেরোচ্ছে রক্ত। তার ফুসফুসেই আটকে ছিল একটা ছোলার টুকরো। তার জেরেই এই বিপত্তি। রীতিমতো প্রাণ সংশয় হয়েছিল খুদে আরাধ্যার। তবে পিজি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাফল্যে প্রাণ ফিরে পেল শিশু। ব্রঙ্কোস্কপি করে বের করে আনা হল ছোলার টুকরো।

Advertisement

[ আয়ুর্বেদে সাফল্য, পঙ্গুত্ব থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরল ২ কিশোর ]

খুদে আরাধ্যার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে।বাবা অঞ্জন কুমার সামন্ত পেশায় কৃষক। মা তনুজা সামন্ত গৃহবধূ। গত মঙ্গলবার বেলা বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ ভাত খাওয়া শেষ করে ছোলা খাওয়ার বায়না ধরে আরাধ্যা। মেয়ের বায়নায় ভাজা কলাই দেন মা। কিছুক্ষণ পর লক্ষ করেন মেয়ে প্রচণ্ড কাশছে।একেবারে নালেঝোলে অবস্থা। তড়িঘড়ি এক গ্রামীণ ডাক্তারের কাছে আরাধ্যাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তাতে হিতে বিপরীত হয়। জানা যাচ্ছে, ওই ডাক্তার প্রথমে গলায় আঙুল দিয়ে ছোলা বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। তারপর গলার মধ্যে পাইপ ঢুকিয়ে বমি করানো হয়। কিন্তু তাতেও ছোলা বেরোয়নি। বরং শিশুটি এতে কাহিল হয়ে পড়ে। ছোলাটিও ভিতরে চলে যায় বলে মনে করা হচ্ছে। এরপরই মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। মুখে রক্তও দেখা যায়।

[  বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের জের, সম্ভাবনা বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির ]

অবস্থা খারাপ দেখে ওইদিনই সন্ধে ছটা নাগাদ মেয়েকে আরামবাগ  মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান অঞ্জনবাবু। ভরতি নিলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এরপর পর দিন অর্থাৎ ৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাতটা নাগাদ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় আরাধ্যাকে। সেখানেও শিশুটির অপারেশন করার সাহস দেখাতে পারেননি ডাক্তারবাবুরা। যদিও মাতৃযানে করে কলকাতায় পাঠানোর বন্দোবস্ত করেন তাঁরা।  ৮ ফেব্রুয়ারি ভোর তিনটে নাগাদ এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় শিশুটিকে। কিন্তু কলকাতার এই প্রথমসারির মেডিক্যাল কলেজও সাফ জানিয়ে দেয়, শিশুর গলা থেকে ছোলা বের করার অপারেশন এখানে সম্ভব নয়। তাঁরাই পিজিতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। হন্যে হয়ে উদ্বিগ্ন মা-বাবা দৌড়ান পিজির দিকে। তিনি জানান, মেয়ে ক্রমে নিস্তেজ হয়ে পড়ছিল। অথচ একের পর এক মেডিক্যাল কলেজ ফিরিয়ে দিচ্ছে। ভাবিনি মেয়েকে ফিরে পাব।

ফের অটোচালকের দাদাগিরি শহরে, চলন্ত অটোয় ছেলের সামনে মহিলার শ্লীলতাহানি ]

ভোর চারটে নাগাদ মেয়েকে কোলে নিয়ে বিধ্বস্ত অবস্থায় পিজি হাসপাতালে পা রাখেন অভিভাবকরা। পিজির ডাক্তাররা সঙ্গে সঙ্গে ইএনটি সার্জেনদের কল দেন। ভরতি করিয়ে নেওয়া হয় ডাঃ অরুণাভ সেনগুপ্তর অধীনে। আধ ঘণ্টার মধ্যেই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সেরে ফেলেন চিকিৎসকরা। জানিয়ে দেন, এখানেই শিশুটির অপারেশন করা হবে। আর কোথাও যেতে হবে না। এ কথা শুনে যেন স্বস্তি পান অঞ্জনবাবু। জানান, ডাক্তারবাবুরা বন্ডে সই করিয়েই সাতটার সময় মেয়েকে অপারেশন থিয়েটারে ঢোকান। দশটায় বের করেন। এখন মেয়ে সুস্থ। খেলাধুলোও করছে।

নয়া বিতর্কে ভারতী, ৪৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের ]

অরুণাভবাবুর নেতৃত্বে অপারেশন করেন ইএনটি সার্জেন ডাঃ অরিন্দম দাস। সহায়তায় ছিলেন অ্যানাসথেসিস্ট ডাঃ প্রিয়াঙ্কা মন্ডল। এদিন অরুণাভবাবু বলেন, ব্রঙ্কোস্কপি করে শিশুটির শ্বাসনালী থেকে ছোলার টুকরোটি বের করা হয়েছে। সময় লেগেছে প্রায় পাঁতাল্লিশ মিনিট। এতগুলো হাসপাতাল তাহলে শিশুটিকে ফেরাল কেন। উত্তরে অরুণাভবাবু জানান, হ্যাঁ, ব্রঙ্কোস্কপি করার পরিকাঠামো হয়তো সব জায়গায় নেই। তবে আগামী তিন চার মাসের মধ্যেই সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে এই পরিকাঠামো হয়ে যাবে বলেই আশা করছি।

আপাতত সুস্থই আছে আরাধ্যা। তবে অন্য একটি প্রশ্নও তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন হেইমলিক প্রকেৌশল প্রয়োগ করে ছোলাটি বের করার চেষ্টা হল না। এই কৌশল প্রয়োগ করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই শিশুটি বিপণ্মুক্ত হতে পারত। কিন্তু কেন কেউ সে চেষ্টা করল না।

 

The post শ্বাসনালীতে ছোলা আটকে প্রাণসংশয় শিশুর, বিপণ্মুক্ত করল এসএসকেএম appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement