সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিন্দি (Hindi) বনাম আঞ্চলিক ভাষা বিতর্ক পুরনো। সাম্প্রতিক অতীতে দেশের প্রধান ভাষা হিসেবে হিন্দির পক্ষে সওয়াল করেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। শাহর বক্তব্যের বিরোধিতায় সবচেয়ে বেশি সরব হয় দক্ষিণের রাজ্যগুলি। এবার সেই দক্ষিণের রাজ্যেই বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর (Indigo) বিরুদ্ধে কার্যত আঞ্চলিক ভাষাকে অসম্মান করার অভিযোগ উঠল। ইন্ডিগো কর্তাদের উদ্দেশে তেলেঙ্গানার মন্ত্রী কেটিআরের (KTR) মন্তব্য, অনুগ্রহ করে আঞ্চলিক ভাষাকে সম্মান করুন। হঠাৎ এমন কথা বললেন কেন কেটিআর?
সম্প্রতি বিজয়ওয়াড়া-হায়দ্রাবাদ রুটের ইন্ডোগোর একটি বিমানে তেলেগুভাষী এক মহিলার সিট জোর করে বদলে দেন বিমান কর্মীরা। মহিলার সিট ছিল বিমানের এমারজেন্সি দরজার কাছে। যেহেতু তিনি হিন্দি ও ইংরেজি জানেন না, তাই তাঁর সিট বদলে দেওয়া হয়। বিমান সংস্থার যুক্তি, যাত্রীর সুরক্ষার জন্যই মহিলার আসন বদলানো হয়েছিল। যদিও বিষয়টি আঞ্চলিক ভাষা বিতর্ক উসকে দিয়েছে। ঘটনাটি তেলেঙ্গানার মন্ত্রী কেটিআরের চোখে পড়তেই ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষকে ট্যাগ করে একটি টুইট করেন তিনি। লেখেন, “আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আঞ্চলিক ভাষাকে ও সেই সব যাত্রীকে সম্মান দেখান, যাঁরা হিন্দি ও ইংরেজি জানেন না।” মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের (KCR) ছেলে কেটিআরের বিমান সংস্থাকে পরামর্শ, “আঞ্চলিক ভাষার রুটগুলিতে বেশি করে তেলেগু, তামিল, কন্নড়ের মতো স্থানীয় ভাষা জানা কর্মীদের নিয়োগ করুন।” ইন্ডিগো অবশ্য মন্ত্রীর মন্তব্যের জবাব দেয়নি।
[আরও পড়ুন: অভিনন্দন বর্তমানের মিগ-২১ যুদ্ধবিমানকে বিদায় দিতে চলেছে বায়ুসেনা]
উল্লেখ্য, ‘নিরাপত্তার ইস্যু’তে ইন্ডিগোর বিমানে তেলেগু মহিলার আসন পরিবর্তনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন আইআইএম আমেদাবাদের অধ্যাপক দেবস্মিতা চক্রবর্তী। মহিলা যাত্রীর ছবি দিয়ে গোটা বিষয়টি জানিয়ে টুইট করেছিলেন তিনি। এরপরেই শোরগোল পড়ে যায়। বিষয়টিতে মুখ খোলেন কেটিআর।
[আরও পড়ুন: ‘আপনি শুধু নিজের কথা ভেবেছেন’, সুইসাইড নোটে মোদিকে কাঠগড়ায় তুলে আত্মহত্যা কৃষকের]
প্রসঙ্গত, ১৪ সেপ্টেম্বর হিন্দি দিবসে ভাষা বিতর্কে বাড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। ওইদিন তিনি মন্তব্য করেন, দেশের ঐক্যকে ধরে রাখতে হিন্দি ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। টুইটারে পোস্ট করেন, ‘ভারতে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যকে গড়ে তুলতে হিন্দি ভাষার প্রসারে সবচেয়ে বড় অবদান তাঁদের, যাঁদের মাতৃভাষা হিন্দি ছিল না। ভাষা হল চেতনা। ভাষার প্রসার ও সুরক্ষার জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’ আরও লেখেন, ‘হিন্দি ভাষার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি, আমাদের সংবিধানের রচয়িতাদের পরিষ্কার মত ছিল, দেশের ঐক্য এবং অখণ্ডতার জন্য হিন্দি ভাষাকে জাতীয় স্তরে ব্যবহার করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এর ব্যাপকতা এবং উদারতার কারণে, হিন্দি আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থারও পরিপূরক।’