সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাশ হয়ে যাওয়া বিল আটকে রাখা নিয়ে ঐতিহাসিক মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, আইনসভা থেকে পাশ হয়ে আসা বিল অনন্তকাল আটকে রাখতে পারেন না রাষ্ট্রপতি। তিনমাসের মধ্যে তাঁকে মতামত জানিয়ে দিতে হবে। উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগেই তামিলনাড়ুর বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়া বিল আটকে রেখে ‘সুপ্রিম’ তোপে পড়েছিলেন সেরাজ্যের রাজ্যপাল। সেই প্রসঙ্গেই এদিন ফের মন্তব্য করল শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
অবিজেপি রাজ্যগুলিতে রাজ্যপাল ও সরকারের সংঘাত নতুন কিছু নয়। এর আগে জগদীপ ধনকড় বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন একের পর এক বিল আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। তামিলনাড়ুতে ঠিক একই নীতি নেন রাজ্যপাল আর এন রবি। অভিযোগ, বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর ১০টি বিল সাক্ষর না করে আটকে রাখেন রাজ্যপাল। এই তালিকায় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিলও। রাজ্যপালের এই অসহযোগিতার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তামিলনাড়ু সরকার। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পাশ হয়ে যাওয়া বিল এভাবে ফেলে রাখতে পারেন না রাজ্যপাল।
ওই মামলার রায়দানের সময়ে রাজ্যপালের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির জন্যও কিছু নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যপাল যদি কোনও বিল রিজার্ভ রাখেন, তাহলে ওই বিল নিয়ে ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিতে পারেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু তার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া নেই। তাই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, রাজ্যপালের থেকে আসা বিলে তিনমাসের মধ্যে মতামত জানিয়ে দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। যদি তিনমাসের মধ্যে তা সম্ভব না হয়, তাহলে দেরি হওয়ার যথাযথ কারণ জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা থেকে পাশ হয়ে আসা বিলে রাজ্যপালের সই করার জন্যও সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, বিল আসার পর রাজ্যপালদের যদি মনে হয় সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে একমাসের মধ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যদি বিলে সম্মতি না দেওয়ার হয়, সেক্ষেত্রে তিন মাসের মধ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যপালকে। তবে বিলে রাষ্ট্রপতির সই করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া-এই প্রথমবার এমন বিষয়ে মন্তব্য করল শীর্ষ আদালত।
