স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: ন্যায়ের বুলডোজার থামবে না। দেশজুড়ে জ্বলতে থাকা বিতর্কের আগুনে এই কথা বলে নতুন করে ঘি ঢাললেন দিল্লি বিজেপি প্রধান আদেশ গুপ্তা (Adesh Gupta)। একদিকে যখন লাগাতার বিতর্কের জন্ম দিয়েই চলেছে বিজেপি, সেই সময়ই আবার সামনে এল এক অন্য ছবি। যে মেয়রের নির্দেশে জাহাঙ্গিরপুরীর ‘অবৈধ’ নির্মাণ ভাঙতে গিয়েছিল বুলডোজার, তাঁর বাড়ির সামনেই রয়েছে অন্তত ছ’ ফুট অবৈধ নির্মাণ। যার ফলে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে, তাহলে এখানে কেন ঢুকবে না ‘ন্যায়ের বুলডোজার?’
সম্প্রতি হিংসা কবলিত জাহাঙ্গিরপুরীতে (Jahangirpuri) বুলডোজার চালিয়ে বেশ কয়েকটি ইমারত ভেঙে দেয় উত্তর দিল্লি পুরসভা। সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নিষেধাজ্ঞার অবমাননা করতেও ছাড়েনি তারা। যার ফলে দেশজুড়ে তৈরি হয় বিতর্ক। বেশিরভাগেরই বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো বেছে বেছে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ করছে বিজেপি। এর মাঝেই দিল্লি বিজেপি প্রধান আদেশ গুপ্তা এদিন বললেন, “আম আদমি পার্টি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীদের অবৈধভাবে দিল্লিতে বসিয়েছে। তাই ওদের এত কষ্ট। যার যা করার আছে করুন, মনে রাখবেন ন্যায়ের বুলডোজার চলবেই।” সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অমান্য করে ইতিমধ্যেই বিতর্কে বিজেপি শাসিত পুর নিগম। তার উপর বিজেপি নেতার বক্তব্য বিতর্ক আরও বাড়িয়েছে।
[আরও পড়ুন: অসমে চমক তৃণমূলের, বড় দায়িত্ব পেলেন সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে আসা রিপুন বোরা]
জাহাঙ্গিরপুরীকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও বিজেপি (BJP) নেতাদের বিভিন্ন কাজে প্রশ্ন উঠেছে দেশজুড়ে। যেখানে জুড়ে গেল আরও এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। জাহাঙ্গিরপুরীর ‘অবৈধ নির্মাণ’ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন যিনি, সেই রাজা ইকবাল সিংয়ের বাড়ির বেশ কিছু অংশই নাকি অবৈধ। এই অভিযোগ ওঠা শুরু হয়েছে। পুরসভা নির্ধারিত সীমানা ছাড়িয়ে তাঁর বাড়ির সামনে প্রায় ফুট ছয়েক সিঁড়ি বেরিয়ে এসেছে রাস্তায়। এমনটাই অভিযোগ। এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি নিজের বাড়িতে ন্যায়ের বুলডোজার চালাবেন মেয়র?
[আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ ও জাহাঙ্গিরপুরী হিংসায় রং চড়ানো খবর নয়, টিভি চ্যানেলগুলিকে নির্দেশ কেন্দ্রের]
প্রসঙ্গত, এদিনই আবার বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমকে ‘নোট’ পাঠিয়ে কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছে, জাহাঙ্গিরপুরীকে কেন্দ্র করে কোনও ধরনের উসকানিমূলক প্রতিবেদন চালানো যাবে না। নির্দেশিকায় বলা হল, উত্তর-পশ্চিম দিল্লির বর্তমান ঘটনায় কিছু চ্যানেলের প্রতিবেদনে উসকানিমূলক হেডলাইন, সত্যতা যাচাই না করা সিসিটিভি ফুটেজের মতো এমন কিছু পরিবেশন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে অশান্তি আরও বাড়তে পারে। চ্যানেলগুলিকে এই ধরনের প্রতিবেদন না করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তথ্যসম্প্রচারমন্ত্রক। যার ফলে নতুন করে আরও একবার সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের প্রসঙ্গ সামনে আসতে শুরু করেছে।