স্টাফ রিপোর্টার: আজ, বুধবার রাজ্য বাজেট (State Budget)। দুপুর দুটোয় বাজেট পাঠ করবেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১১ বছরে জনগণের উপর করের বোঝা না বাড়িয়ে বিকল্প আয়ের দিশা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই প্রেক্ষিতে এবারের বাজেটে সেই চেনা ছকের বাইরে যাওয়ার প্রশ্ন নেই। কিন্তু মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা রুখে রাজ্য বাজেটকে গতিশীল রাখার চ্যালেঞ্জ।
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের ভাষণে উল্লেখ রয়েছে, কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় ১০০ দিনের কাজ, সড়ক ও আবাস যোজনায় কিভাবে এক নম্বর স্থান থেকে পিছিয়ে পড়েছে বাংলা। বিকল্প পথে এই তিন প্রকল্পে কি করে গতি আনা যায়, সেই দিশা হয়তো পাওয়া যাবে আজকের বাজেটে। অমিত মিত্র রয়েছেন উপদেষ্টা মন্ডলীতে। রয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। যিনি দীর্ঘদিন মুন্সিয়ানার সঙ্গে অর্থ দপ্তর সামলেছেন। সবার উপর রয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: SSC Scam: দেশ ছেড়ে পালানোর আশঙ্কা, মানিকপুত্র সৌভিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস ইডির]
কেন্দ্রের বঞ্চনার কারণে রাজ্যের আর্থিক সংগতি কমেছে। পুরনো প্রকল্পকে রেখে নতুন প্রকল্প আসবে কিনা সেই দিকে নজর থাকবে। আসলে ১ লক্ষ কোটির উপর কেন্দ্রীয় বকেয়া। তিনটি প্রকল্পের টাকা বন্ধ। নানা ক্ষেত্রে বঞ্চনা। সেই সব সামলে, স্বাস্থ্যসাথী , লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, রুপশ্রী, সবুজ সাথী, ঐক্যশ্রী, কৃষকবন্ধুর মতো সামাজিক প্রকল্পগুলি বজায় রেখে নতুন প্রকল্প আনাটা সত্যি চ্যালেঞ্জিং। এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় বাজেটকে হারানোর লক্ষ্য রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব নিয়ে কোনও দিশা নেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের বাজেটে। তার উপর এলআইসি এবং ব্যাংকের দুর্দশা, আদানিদের ধস। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে জনগণের বাজেট তৈরিতে কেন্দ্রকে কতটা টেক্কা দেবেন মমতা সেটাই দেখার।
আসলে রাজ্যের সামনে রয়েছে কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া একাধিক শর্তও। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংস্কার শর্ত মানলে আগামী ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে রাজকোষ ঘাটতিকে মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) ৩.৫ শতাংশে রাখা যাবে, এমন কথা কেন্দ্র রাজ্যকে জানিয়েছে। সংস্কার না করলে তা হবে ৩ শতাংশ। কেন্দ্রের এই নীতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাজ্যের অর্থনীতিবিদদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক প্রকল্পে জোর দিয়েছেন। এবারের রাজ্য বাজেটেও সামাজিক প্রকল্পগুলি গুরুত্ব পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: প্রেমের সপ্তাহে বিকোল ১ কোটি, ভিন রাজ্যেও সেরা বাংলার লাল গোলাপ]
আগামী দিনে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান রাজ্য সরকারের লক্ষ্য। ফলে পরিকাঠামো তৈরিতেও বাজেটে জোর দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ব্যবসার পরিবেশ আশানুরূপভাবে উন্নত হওয়ার দাবি জানিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্যে স্টার্টআপ নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন। এই নিয়ে বড় ঘোষণা থাকতে পারে বাজেটে। সব মিলিয়ে আশায় বুক বাঁধছে রাজ্যবাসী। তবে সমস্যা সেই অর্থের সংস্থান।
[আরও পড়ুন: লিভ ইন সঙ্গীকে খুন করে গদির ভিতরে দেহ! পালিয়েও শেষরক্ষা হল না অভিযুক্তের]
রাজস্ব এবং রাজকোষে ঘাটতি মিটবে কী ভাবে? রাজ্য কী নতুন করে ঋণ নেবে? না নিজস্ব আয় বাড়ানোর পথে হঁাটবে? নাকি ভারসাম্য বজায় রেখে চলবে? এদিকে, বাজেট পর্ব চুকলেই তিন জেলা সফরে বেরোবেন মুখ্যমন্ত্রী। ১৬ ফেব্রুয়ারি পরপর দুটো সভা। প্রথম সভা মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে। প্রশাসনিক সভা, পরিষেবা বন্টনের সভা। দ্বিতীয় সভা পুরুলিয়ায়, হুটমোরাতে। এখানেও জেলার প্রশাসনিক সভা সারবেন মুখ্যমন্ত্রী। ১৭ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়ার উপকণ্ঠে ওই জেলার প্রশাসনিক সভা সেরে কলকাতায় ফেরার কথা মমতার।