দীপঙ্কর মণ্ডল: প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক বদলি নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের। এবার থেকে অনলাইনেই (Online) করা যাবে আবেদন। এমনকী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বদলিতে আগ্রহী শিক্ষকদের থেকে নেওয়া যাবে না টাকাও। শিক্ষকদের মিউচুয়াল ট্রান্সফারের একটি পোর্টাল উদ্বোধন করে বুধবার সিদ্ধান্ত জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)।
অনেক সময় বদলির পরিপ্রেক্ষিতে ইচ্ছুক শিক্ষকদের (Teacher) থেকে টাকা দাবি করার অভিযোগ সামনে এসেছে। বদলির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার থেকে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে শিক্ষকরা বদলির আবেদন করতে পারবেন। আপাতত ওই পোর্টালের মাধ্যমে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের আবেদন করা যাবে। যাঁরা ইতিমধ্যে আবেদন করেছেন সাতদিনের মধ্যে সেই আবেদন মঞ্জুর করতে হবে। আগে বদলির আবেদন জানালে শিক্ষকদের ডেকে কথাবার্তা বলতেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা। তবে এবার আর সেসবের প্রয়োজনীয়তা হবে না। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্কুলের ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাত খতিয়ে দেখে বদলি মঞ্জুর করা হবে। ধাপে ধাপে সমস্ত রকমের বদলির জন্য অনলাইনে আবেদন করা যাবে। তবে প্রয়োজনে তা বাতিলও হতে পারে। বদলির সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ অথবা স্কুল পরিদর্শকের কাছ থেকে এনওসি বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হয়। সেই সার্টিফিকেট হাতে পেতে শিক্ষকদের কালঘাম ছোটার অভিযোগও উঠেছে বহুক্ষেত্রে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশ ওই সার্টিফিকেটের জন্য কোনও শিক্ষককেই হেনস্তা করা যাবে না। খুব শীঘ্রই এনওসি বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেটও বদলিতে প্রয়োজন হবে না বলেই আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রীর।
[আরও পড়ুন: সদ্য চালু হওয়া ফুলবাগান মেট্রো স্টেশনের ‘ভুয়ো’ ছবিকে কেন্দ্র করে তুলকালাম নেটদুনিয়ায়]
এছাড়া এদিন স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ স্কিমের কথাও জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কোভিড পরিস্থিতিতে এ বছর শুধুমাত্র অনলাইনে আবেদন করতে হবে। উল্লেখ্য, একাদশ থেকে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত এই স্কলারশিপ দেয় রাজ্য সরকার। চলতি বছর মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে যারা স্নাতক স্তরে ভরতি হয়েছে, মেডিক্যাল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ারাও অনলাইনে আবেদন করতে পারে। আবেদনের শর্ত হিসাবে পড়ুয়াদের ঝুলিতে ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক। এছাড়া তাদের পারিবারিক আয় সর্বোচ্চ বছরে আড়াই লক্ষ টাকা হতে হবে। স্কলারশিপ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য তারা এসএমএসের মাধ্যমে জানতে পারবে। কয়েকদিন আগে নবান্নের সভাঘর মুখ্যমন্ত্রী যে ৭৯৫ জন মেধাবী পড়ুয়াকে পুরস্কৃত করেছেন তারা সকলেই স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ পাবে। তাদের ক্ষেত্রে পারিবারিক আয়ের কোনও ঊর্ধ্বসীমা থাকবে না।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কালীপুজোর পর এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে বলে আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহামারী আবহে আগামী বছর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পিছোতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে সে ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।