স্টাফ রিপোর্টার: বাঙালির জীবনে নতুন শব্দবন্ধ ‘শুভনন্দন’। শব্দবন্ধটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের (Mamata Banerjee) পয়লা বৈশাখের উপহার। চমকের সঙ্গে তাকে সমাজের বিভিন্ন স্তরে গ্রহণ করতে শুরু করেছেন মানুষ। শনিবার সেই শব্দবন্ধকেই তাদের অভিধানে জুড়ে নিয়ে ‘শুভনন্দন’ শপথ নিল উত্তর কলকাতার গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীন পুজো কমিটি। পুজো দেখতে এবার থেকে সেখানে পা রাখলেই শোনা যাবে শুভনন্দন!
শনিবার থেকেই উত্তর কলকাতার গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীন পুজো কমিটি পুজোর যাবতীয় কাজ শুরু করে দিল। যেমন তেমনভাবে নয়, একেবারে সমাজের বিশিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা সেরে এই শুভনন্দন শপথ নিয়েছে তারা। সকলকে সেটি ব্যবহারের অনুরোধ করে নোটিসও দিয়েছে ক্লাব। সেই শপথবাক্য এদিন পুজো কমিটির সদস্যদের পাঠ করিয়েছেন শাস্ত্রজ্ঞ আচার্য ড. জয়ন্ত কুশারি। গোটা বিষয়টির শাস্ত্র উপদেষ্টা বিশিষ্ট অধ্যাপক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী।
[আরও পড়ুন: ফের বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা? বিমল গুরুঙের বৈঠক ঘিরে পাহাড়ে নয়া সমীকরণের ইঙ্গিত]
পরপর দু’টি কর্মসূচিতে এই নতুন শব্দবন্ধ ব্যবহার করেন মুখ্যমন্ত্রী। পয়লা বৈশাখ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যার ব্যবহার একপ্রকার শুরু হয়ে গিয়েছে। বাঙালিয়ানার, বাঙালি জাত্যাভিমানে নতুন সংযোজন, নতুন সম্পদ এই শব্দ। যার ব্যবহারকে স্বাগত জানিয়েছেন দুই বিশেষজ্ঞই। দু’জনেই তাঁরা একমত এর ব্যবহার নিয়ে। যেমন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজোর ব্যাপারে সবসময় উদ্যোগী। তাঁর এই নতুন শব্দ সর্বজনীনভাবে মানুষ আপন করে নিচ্ছেন। তাঁদের প্রত্যেককে শুভনন্দন জানাই।” আচার্য কুশারীর কথায়, “শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন দুটো শব্দের মধ্যে কোনওটাই আর বাদ যাবে না। স্বাস্থ্যের দিক থেকেও কোনও অসুবিধা নেই।” আর পুজো কমিটির সম্পাদক মানটা মিশ্র বলছেন, “জানি না অন্য পুজো কমিটিরা কী ভাবছে। তবে আমরা নতুন একটা দিক উন্মোচন করার চেষ্টা করলাম। আশা করি অন্যরাও অনুসরণ করবেন। শুভনন্দন প্রত্যেককে।”
এ প্রসঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি নানারকম মত দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে সাধারণ মানুষ এই শব্দকে যেভাবে গ্রহণ করছে, তার সামনে কোনও বিরোধিতাই টেকেনি। বাঙালিয়ানার উদযাপনে একেবারে নববর্ষের দিন এই শব্দ বাঙালি জীবনে নতুন মর্যাদা পেয়ে যাওয়ায় তাকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তাদের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সেক্ষেত্রে বাঙালি জাতির ঐক্যের দিকটিও তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, “নতুন বছর। বাংলায় শান্তি সম্প্রীতি আছে। উত্তর কলকাতার একটা পুজো কমিটি ‘শুভনন্দন’ শপথ পালন করেছে এই দিনটায়। এখন থেকে তারা এই শব্দটাই পালন করবে। হালখাতার অনুষ্ঠান, শিল্প-বাণিজ্যের নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। কুৎসা আর চক্রান্ত করে বিরোধীরা। তবে শকুনের অভিশাপে তো আর গরু মরে না। বাংলা ভাল আছে।”