কোমর-পিঠ টনটন! টানা বসে থাকা কিংবা বিষম খিঁচ-চেনা কারণ, তাই হতেই পারে ভেবে ব্যথার সঙ্গে আপস করেন অনেকেই। কিন্তু সহজে কমছে না ব্যথা। অন্য অসুখ নয় তো! সজাগ করলেন ফর্টিস হসপিটালের বিশিষ্ট অর্থোপেডিক ডা. রণেন রায়।শুনলেন জিনিয়া সরকার।
একটানা বসে কাজ কিংবা হঠাৎ করেই বেশি নড়াচড়া। ফলে জখম পিঠ, কখনও আবার কোমরে খিঁচ ব্যথা। পশ্চাৎভাগে একটু-আধটু ব্যথা প্রায় ৮০ শতাংশ মানুযের কখনও না কখনও হয়েই থাকে। অধিকাংশক্ষেত্রেই চিন্তার নয়। যথারীতি পেনকিলার, ব্যথার মলম লাগিয়ে গায়েব করতে উদগ্রীব হন। এ আর কী এমন! তবে এই ধরনের ব্যথা ইগনোর করলে বিপদ। কখনও কখনও এমন জানা লক্ষণ ডেকে আনতে পারে অজানা অসুখ।
[আরও পড়ুন : অবিকল অ্যাকশন দৃশ্য, অটোয় তাড়া করে এটিএম জালিয়াতকে ধরলেন গোয়েন্দারা]
যদি না কমে! স্পন্ডিলাইটিস
অনেক ধরনের কোমরে ব্যথা হয়, যা হঠাৎ করে শুরু হয় কিন্তু কমতে চায় না।বিশ্রাম নেওয়া বা ফিজিওথেরাপি করে কমতে না চাইলে সজাগ হন। ১০-১৫ দিনের মধ্যে ব্যথা যদি না কমে এবং কম বয়সিদের যদি এমন হয় সেক্ষেত্রে এর আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিস। সাধারণত ২০-২৫ বছর থেকে ৩০-৩৫ বছর বয়সিদের এমন সমস্যা শুরু হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠলে পিঠে বা কোমরে ব্যথা, পাশ ফিরতে গেলে ব্যথা, পেশি শিথিল ইত্যাদি লক্ষণ দেখা গেলে সাবধান হতে হবে। এই ধরনের স্পন্ডালাইটিস পারিবারিক সূত্রেও একজনের থেকে অন্যেরও হতে পারে। শরীরের পশ্চাৎ দেশে এমন ব্যথা চলতেই থাকলে তা ফেলে না রেখে চিকিৎসা করান। এই রোগের চিকিৎসা দীর্ঘদিন করে যেতে হয়। অবহেলা করলে এর প্রভাবে হিপ জয়েন্ট ও শিরদাঁড়ার ক্ষতি হতে পারে। ধীরে ধীরে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে তা আরও জটিল আকার ধারণ করে, হাঁটা-চলা করাও মুশকিল হতে পারে।
[আরও পড়ুন : নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সমর্থনের জন্য বাংলার সাংসদদের আহ্বান অমিত শাহর]
এক নজরে
- সাধারণ খিঁচ ব্যথা যা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ফলে কিংবা শোয়ার দোষে হতে পারে। এগুলি সাধারণ খুব দ্রুত সেরে যায়।
- যদি সাধারণ চিকিৎসায় ব্যথা না কমে, ব্যথা বাড়তে থাকে ও চিকিৎসা বন্ধ করলেই আবার ব্যথা হতে থাকে সেক্ষেত্রে তা জটিল অসুখের লক্ষণ হতে পারে।
- ব্যথার উৎস খুঁজতে উপযুক্ত পরীক্ষা জরুরি।
- ব্যথার তিব্রতা খুব কম। তাই ভয় নেই! এটা ভাবলে বিপদ। এমন অনেক সময়ই হয়, ব্যথা কষ্টদায়ক নয় কিন্তু দীর্ঘসময় পর্যন্ত রয়েছে। এটা ভয়ানক হতে পারে।
[আরও পড়ুন : ভেস্তে গেল নাশকতার ছক! নোয়াখালি থেকে ধৃত আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৪ জঙ্গি]
স্লিপ ডিস্কে কাবু
অল্পবয়সিদের জিম করার দরুণ হঠাৎ করেই কোমরে ব্যথা শুরু হতে পারে।অনেকে মনে করেন বেশি ওয়ার্ক আউট করার ফলে হয়তো ব্যথা হচ্ছে। অনেক সময় এমন হলে হতে পারে স্লিপ ডিস্কের সমস্যা। এই ব্যথা হঠাৎ করেই শুরু হয়। ডিস্কের চাপ শিরায় পড়লে তা কোমর থেকে পায়ের দিকে নামতে থাকে। পা ঝিনঝিন করতে থাকে। শুয়ে পড়ার পর পা তুলতে গেলে এক্ষেত্রে খুব কষ্ট হয়। নার্ভের উপর চাপ পড়ে। কাজেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা জরুরি। স্লিপ ডিস্ক বাড়াবাড়ি হলে অনেক সময় অপারেশন করার দরকার পড়ে। সংক্রমণও হতে পারে।
[আরও পড়ুন : অমানবিক! ক্যানসার আক্রান্ত মেয়েকে শিকলে বেঁধে ডাক্তার খুঁজতে ব্যস্ত বাবা]
এমন হয় কী!
পা অসাড় হয়ে যাচ্ছে। পিঠে-কোমরে ক্রমশ খুব ব্যথা থেকে হাঁটতে-চলতে কষ্ট, চাপ পড়লেই সেই স্থানে ব্যথা লাগে সেক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। এমন হলে চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষা করে রোগের উৎস খোঁজার চেষ্টা করেন। প্রয়োজনে এক্সরে বা এমআরআই স্ক্যান করার দরকার পড়ে। পিঠে-কোমরে ব্যথার আড়ালে টিবি ইনফেকশনও হতে পারে। স্পাইন বা শিরদাঁড়ায় এই সংক্রমণ হলে তা প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে ওষুধের দ্বারা নির্মূল করা সম্ভব।
[আরও পড়ুন : ধর্ষকদের চরম শাস্তির দাবিতে উত্তাল উন্নাও, বরখাস্ত ৭ পুলিশকর্মী]
টিউমার নাকি ক্যানসার!
বেশি বয়সে দীর্ঘদিন এই ধরনের ব্যথা সারতে না চাইলে তখন কিন্তু সাবধান। দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে চিকিৎসক বলছেন, এমন লক্ষণের পিছনে বোন ক্যানসার লুকিয়ে থাকতে পারে। অনেক সময় অন্যান্য ক্যানসার ছড়িয়ে গিয়েও পিঠে ব্যথা হতে পারে। এটা স্তন বা কোলন ক্যানসারেরও লক্ষণ হতে পারে।তাই কারণ খুঁজতে বোন স্ক্যান বা এমআরআই স্ক্যান করার দরকার পড়ে।পরামর্শে: ০৩৩ ৬৬২৮ ৪৪৪৪
The post টানা বসে কাজ করায় বাড়ছে কোমরের যন্ত্রণা? অবশ্যই মেনে চলুন এসব পরামর্শ appeared first on Sangbad Pratidin.