বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: কোভিড পরিস্থিতিতে মণ্ডপে মণ্ডপে গিয়ে ভিড়ের মাঝে দুর্গাপুজোর (Durga Puja) উদ্বোধন নয়। বরং দূর থেকে ভারচুয়ালি কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পুজোর উদ্বোধন করে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। উৎসবের মাঝেও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন বেশিরভাগ মানুষজন। কিন্তু এই সাধু উদ্যোগেও অভিসন্ধি দেখছে তৃণমূলের চিরকালীন প্রতিদ্বন্দ্বী বামফ্রন্ট। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakroborty) কটাক্ষ, নিজেকে নিরাপদে রেখে মানুষকে বিপদে ফেলতেই মুখ্যমন্ত্রী ভারচুয়ালি পুজোর উদ্বোধন করছেন।
সিপিএম বিধায়ক তথা বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ঘেরাটোপের মধ্য থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করলেও যে পুজোর উদ্বোধন হচ্ছে সেখানে প্রচুর মানুষ জমায়েত হচ্ছে। তাদের বিপদ বাড়ছে। এটা বাস্তবে পুজো বা উৎসব নয়, এটা আসলে পুজোর মঞ্চকে ব্যবহার করে রাজনীতি করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণ শারদোৎসবের কৌলিন্যকে নষ্ট করছে। তাঁর আরও বক্তব্য, রাজনীতির জন্য পুজোর মঞ্চকে ব্যবহারের এই প্রবণতা রাজ্যের মানুষ ভাল চোখে নিচ্ছেন না। তাই পুজো বন্ধ নিয়ে মামলায় হাই কোর্ট যে পর্যবেক্ষণ রেখেছে, তা সঠিক বলে মনে করেন তিনি। কারা টাকা পাবেন, কী যুক্তি বা ভিত্তিতে অর্থ দেওয়া হবে? অর্থ আসবে কোথা থেকে? এদিন এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে এসব প্রশ্ন করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্নগুলি যথেষ্ট সঙ্গত বলে মনে করছেন সুজন চক্রবর্তী।
[আরও পড়ুন: ‘দুর্গাপুজো ঘরে বসে হয় না’, উৎসব নিয়ে বিতর্কের মাঝেই জবাব মুখ্যমন্ত্রীর]
তাঁর বক্তব্য, যখন সকলে বুঝতে পারছে যে ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে, তখন মুখ্যমন্ত্রীর এই মনোভাব বিপদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি সাজিয়ে বাম পরিষদীয় দলনেতার দাবি, গণেশ চতুর্থী বা ইদ বাড়িতে বসেই হয়েছে। কেরলে ওনাম উৎসবে ছাড় দেওয়ায় সংক্রমণ বেড়েছে। সেখান থেকেও মুখ্যমন্ত্রী কোনও শিক্ষা নেননি বলে অভিযোগ সুজনের। তাঁর আরও কটাক্ষ এটা ভক্তি বা আবেগের জন্য নয়, আদিখ্যেতা বা ক্ষমতার দম্ভ দেখাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজোর পর কোভিড সংক্রমণ বাড়লে তার দায় মুখ্যমন্ত্রীকেই নিতে হবে, এমনই দাবি করেন বাম পরিষদীয় দলনেতা।