সুপর্ণা মজুমদার: যদি চলে যেতে হয় তাহলে কী সঙ্গে নিয়ে যাবেন? ঠাট্টার ছলে কেউ এই প্রশ্নই করেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে (Soumitra Chatterjee)। সেই সময় উত্তরে বলেছিলেন গীতবিতান ও মহাভারত সঙ্গে নিয়ে যেতে চান। কিন্তু তারপর পালটেছিল তাঁর পছন্দ। গীতবিতানের পাশাপাশি ‘আবোল তাবোল’ নিয়ে যেতে চান বলেই জানিয়েছিলেন প্রবাদপ্রতীম শিল্পী। হাসপাতালে ভরতি হওয়ার কয়েক মাস আগেই প্রিয় ‘আবোল তাবোল’ পাঠ করেছিলেন সৌমিত্র। শিশুদিবসে ‘মিনিস্ট্রি অফ মিউজিক’ ইউটিউব (Youtube) চ্যানেলে দেখা যাবে তাঁর সেই পাঠ। তার আগে প্রকাশ্যে এল টিজার। হয়ে গেল ভারচুয়াল সাংবাদিক বৈঠক। বৈঠকে রায় পরিবারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সন্দীপ রায় (Sandip Ray)।
[আরও পড়ুন: প্রসেনজিতের প্রযোজনায় ছোটপর্দায় আসছে ‘অ্যান্টনি কবিয়াল’, দেখুন আগাম ঝলক]
৬ অক্টোবর করোনা (CoronaVirus) আক্রান্ত হয়ে বেলভিউ হাসপাতালে ভরতি হন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। করোনামুক্ত হওয়ার পরও বিপদ কাটেনি। চলতি সপ্তাহেও আবার করা হয়েছে ট্র্যাকিওস্টমি, প্লাজমাফেরেসিস। প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন শিল্পী। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন সন্দীপ রায়। তারপরই ফিরে যান ‘আবোল তাবোল’-এর স্মৃতিতে। জানান কীভাবে ছোটবেলায় ঠাকুমা তাঁকে সুকুমার রায়ের (Sukumar Roy) ‘কাঠবুড়ো’, ‘কুমড়োপটাশ’, ‘গোঁফ চুরি’র কাহিনি শোনাতেন। অ্যানিমেশনের সাহায্যে ‘ননসেন্স’-এর এই কাল্পনিক জগৎ তৈরির করার ভাবনা-পরিকল্পনা ‘মিনিস্ট্রি অফ মিউজিক’-এর প্রতিষ্ঠাতা তথা পরিচালক শিলাদিত্য চৌধুরীর। তিনিও উপস্থিত ছিলেন ভারচুয়াল বৈঠকে। ছিলেন ‘ইডেন রিয়েলিটি’র ডিরেক্টর (মার্কেটিং) বিশ্বদীপ গুপ্ত। প্রত্যেকেই সৌমিত্রবাবুর আরোগ্য কামনা করেন। শিলাদিত্য জানান, কিছু মাস আগেই তিনি এই পরকল্পনা নিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন। প্রস্তাবে রাজি হন কিংবদন্তি শিল্পী। সত্যজিৎ রায়ের (Satyajit Ray) প্রিয় অভিনেতার কণ্ঠে তাঁর বাবার সৃষ্টি করা চরিত্রগুলি যেন নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। সৌমিত্রবাবুর কণ্ঠে মোহিত হয়ে যদি আজকের প্রজন্ম ফের বইয়ের পাতা ওলটাতে অনুপ্রাণিত হয়, তাহলেই সার্থকতা বলে মনে করেন সন্দীপ রায়।