সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯ বছরের সফর। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথমবার নেমেছিলেন এই নীল জার্সি গায়ে। একের পর এক ম্যাচ, একের পর এক গোল। বুকে তেরঙ্গা লাগিয়ে দেশের হয়ে ট্রফি জয়। দীর্ঘ ১৯টি বসন্ত পেরিয়ে গিয়েও দলের জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছেন। কিন্তু যা শুরু হয়েছে তা তো একদিন শেষ হবেই। তাই প্রাণের চেয়ে প্রিয় নীল জার্সি তুলে রাখলেন সুনীল ছেত্রী। বিদায়বেলায় বাঁধ মানল না চোখের জল। অসামান্য মনের জোরের সুনীলকে খেলার মাঠে কেউ কাঁদতে দেখেননি। কিন্তু কিংবদন্তির শেষ আন্তর্জাতিক দেখল সুনীলের চোখে জল।
বৃহস্পতিবারের যুবভারতী আগাগোড়াই ভাসছিল আবেগে। ক্যাপ্টেনের (Sunil Chhetri) বিদায়ী ম্যাচের সাক্ষী হতে গ্যালারি ভরিয়ে হাজির ছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। ছেলের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখতে যুবভারতীতে ছিলেন খড়গ ছেত্রী-সুশীলা ছেত্রী। শিশুপুত্র ধ্রুবকে নিয়ে গ্যালারিতে হাজির ছিলেন সুনীলপত্নী সোনমও। ভারতীয় ফুটবলের একাধিক বড় নামও শেষবারের মতো নীল জার্সিতে সুনীলের পায়ের জাদু দেখতে এসেছিলেন যুবভারতীতে। বিদায়ী কিংবদন্তির চোখের জলে ভাসলেন সকলেই।
[আরও পড়ুন: কুয়েতের কাছে আটকে গেল ভারত, দেশবাসীকে ধন্য়বাদ জানিয়ে বিদায় সুনীলের]
ম্যাচে (India vs Kuwait) যখনই সুনীলের পায়ে বল পড়েছে, গর্জে উঠেছে ৫৯ হাজারের যুবভারতী। কিন্তু সুনীল আবেগকে বারবার দমিয়ে দিয়েছে বাস্তবের ফুটবল। চেষ্টা সত্ত্বেও গোল হয়নি। ভারতের (Indian Football Team) হয়ে শেষ ম্যাচে জয় অধরাই থেকে গেল সুনীলের। শেষ বাঁশি বাজার পরেই মাঠে বসে পড়েন বিধ্বস্ত সুনীল। তখনই চোখের কোন থেকে নেমে আসে জলের ধারা। বারবার আটকাতে চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত আর কান্না সামলাতে পারেননি। অশ্রুসিক্ত চোখে গোটা মাঠ ঘুরে দর্শকদের ধন্যবাদ জানান। হাত জোড় করে কৃতজ্ঞতা জানান ভক্তকুলকে।
সেই মুহূর্ত দেখে কান্না চেপে রাখতে পারেননি কেউই। সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে ভারতীয় ফুটবলের তারকারা- ভিজে আসে সকলের চোখ। কেঁদে ফেলেন সুনীলের মা, স্ত্রী। কাঁদতে থাকা সুনীলকে গার্ড অফ অনার দেন সতীর্থরা। হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান ১৫১ ম্যাচ খেলা ফুটবলযোদ্ধাকে। শেষবারের মতো মাঠ ছাড়ার আগে চোখের জলে হাতজোড় করে একবার তাকালেন যুবভারতীর দর্শকদের দিকে। উঠে দাঁড়িয়ে, হাততালি দিয়ে তাঁরাও যে তখন চোখের জলে নায়ককে বিদায় জানাচ্ছেন!
[আরও পড়ুন: ভারত ম্যাচের আগে বদলে গেল পাকিস্তানের টিম হোটেল, কেন?]