রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বঙ্গ বিজেপিতে (BJP) ডামাডোল পরিস্থিতির মধ্যেই দলের পর্যবেক্ষক বদল নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে। গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর, রাজ্যে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে সুনীল দেওধরকে (Sunil Deodhar)। আর সুনীলকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়ে আসা হলে স্বাভাবিকভাবেই একচ্ছত্র ক্ষমতা খর্ব হতে চলেছে বর্তমানে সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যর। বাংলা ভাষায় দক্ষ ত্রিপুরা জয়ের অন্যতম কাণ্ডারি দেওধরের উপরই আগামী দিনে বাংলায় দলের স্বাস্থ্য ফেরাতে ভরসা রাখতে চলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
একুশের নির্বাচনে বিপর্যস্ত হওয়ার পর বাংলায় বিজেপির সংগঠন কার্যত তলানিতে। আদি-নব্য দ্বন্দ্বে জর্জরিত দল। দলের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভও চরমে। দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) সভাপতি পদ থেকে সরার পর নয়া রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের জমানায় রাজ্য ও জেলা কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন বহু পুরনো নেতা। তা নিয়েও বিদ্রোহের আগুন পার্টিতে। একুশের বিধানসভা ভোটের পর একের পর এক উপনির্বাচন ও পুরসভাগুলির ভোটে দলের সাফল্যের গ্রাফও তলানিতে। বর্তমান সহ-পর্যবেক্ষক দলের সর্বভারতীয় আইটি সেলের ইনচার্জ অমিত মালব্যর (Amit Malvya) পারফরম্যান্স নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দলের একটা বড় অংশ চাইছেন, বাংলা বোঝেন, বাংলায় কথা বলতে পারেন ও দক্ষ সংগঠক এরকম কাউকে দায়িত্বে নিয়ে আসার। আর তাই আলোচনায় উঠে এসেছে সুনীল দেওধরের নাম। মুরলী ধর সেন লেনেরও প্রথম পছন্দ সুনীল দেওধরকে।
[আরও পড়ুন: SSC বেনিয়ম মামলা: ৯৮ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ আদালতের, দুর্নীতি মামলায় সিবিআইকে FIR-এর অনুমতি]
বাংলায় দলের দুই মুখ দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারদেরও (Sukanta Majumdar) পছন্দ দেওধরকে। দলীয় সূত্রে এমনই খবর। রাজ্যে দলের প্রধান পর্যবেক্ষক হিসেবে এখনও নাম রয়েছে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। কিন্তু বিধানসভা ভোটে দলের বিপর্যয়ের পর থেকে রাজ্যে আর আসেননি কৈলাস। কৈলাসের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশও ঘটেছিল দলের মধ্যে। কলকাতায় পোস্টারও পড়েছিল। আবার প্রবীন বিজেপি নেতা তথাগত রায় টুইটে সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন কৈলাসকে। কৈলাস বিজয়বর্গীয় আর কলকাতা মুখো না হওয়ায় এই পরিস্থিতিতে দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য।
[আরও পড়ুন: দু’বছর পর করোনা বিধিনিষেধ মুক্ত বাংলা, নয়া নির্দেশিকায় জোর মাস্ক ও স্যানিটাইজেশনে]
মোদি-অমিত শাহদের (Amit Shah) গুডবুকেই রয়েছেন মালব্য। কিন্তু সম্প্রতি অমিত মালব্যর কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের অন্দরে মতান্তর তৈরি হয়েছে। দলের বিক্ষুব্ধ অংশও মালব্য ও দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সরব। দলের পুরনো নেতাদের বাদ পড়ার পিছনে মালব্যর হাত রয়েছে বলেই অভিযোগ বিদ্রোহী শিবিরের নেতা সমীরন সাহার। আরেক বিক্ষুব্ধ নেতা রীতেশ তেওয়ারীও দলের সহ-পর্যবেক্ষককে ‘টুইট মালব্য’ বলে প্রকাশ্যেই তোপ দেগেছেন। মালব্যর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দলের একাংশের অভিযোগও জমা পড়েছে বলে খবর। তাই মালব্যর ক্ষমতা খর্ব করতে সুনীল দেওধরকে নতুন পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সেক্ষেত্রে সহ-পর্যবেক্ষক হিসেবে মালব্যের উপরে দেওধরকে বসানো হবে, নাকি মালব্যকে একেবারে সরিয়ে দেওধরের সহযোগী হিসেবে অন্য আর কাউকে আনা হবে কী না সেটা এখনও পরিস্কার নয়।