সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের (Sedition Law) বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরও এই ব্রিটিশ আমলের আইনের প্রয়োজনীয়তা কী? কেন্দ্রের কাছে জানতে চাইল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের যুক্তি, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা আসলে ঔপনিবেশিক আইন (Colonial Law)। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমন করার জন্য মহাত্মা গান্ধী, বাল গঙ্গাধর তিলকদের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করেছিল ইংরেজরা। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, তারা রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখবে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক মেজর জেনারেল এস জি ভোম্ববাটকেরে। তাঁর বক্তব্য ভারতে যে দেশদ্রোহের আইন কার্যকর রয়েছে তা অস্বচ্ছ এবং বাক-স্বাধীনতার পরিপন্থী। ওই সেনা আধিকারিকের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এসে এই ধারাটি নিঃশর্তে খারিজ হওয়া উচিত। কারণ এর ফলে সংবিধানের দেওয়া মৌলিক অধিকার থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ। সরকারের প্রতি অনাস্থাকে দেখা হচ্ছে অপরাধ হিসেবে। এর ফলে স্বাধীন মতপ্রকাশের উপর চাপানো হচ্ছে অহেতুক বিধি নিষেধ। অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্তার করা আবেদনের শুনানিতে এদিন কেন্দ্রকে একপ্রকার তিরস্কার করল শীর্ষ আদালত (Supreme Court)।
[আরও পড়ুন: ‘করোনা মোকাবিলায় অতুলনীয় কাজ করেছে উত্তরপ্রদেশ’, যোগীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ মোদি]
প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্না (NV Ramanna), বিচারপতি এ এস বোপান্না এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্ন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের যৌক্তিকতা কোথায়? বেঞ্চের বক্তব্য, “এই রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ঔপনিবেশিক আইন। এটা ব্রিটিশ আমলে ব্যবহার করা হত মহাত্মা গান্ধীদের আওয়াজ দমন করার জন্য।” প্রধান বিচারপতি রামান্নার বক্তব্য, “আমাদের চিন্তা এর অপব্যবহার নিয়ে। কারণ, এই আইনে দায়বদ্ধতা নেই। এখানে অপব্যবহার করার মতো প্রচুর ক্ষমতা রয়েছে। যা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলির কার্যপদ্ধতিতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে।” বস্তুত মোদি জমানায় এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অপব্যবহারের বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। যার শিকার হয়েছেন স্ট্যান স্বামী, ডা. কাফিল খানরা। সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিক্ষোভ দমনেও ব্যবহার করা হয়েছে এই আইন। এখন দেখার সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নে কী জবাব দেয় কেন্দ্র।