সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাঠুয়া গণধর্ষণ (Kathua Gangrape) কাণ্ডে মূল চক্রী সঞ্জিরামের ভাইপো তথা অষ্টম অভিযুক্ত শুভম সাংরা নাবালক কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক ছিল। প্রথম দফায় জম্মু-কাশ্মীর হাই কোর্টে এই বিষয়ে শুনানি হয়। কাঠুয়ার সিজিএম (মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট) এবং হাই কোর্ট রায় দেয়, ঘটনার সময় অভিযুক্ত নাবালক ছিল। যদিও বুধবার সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানিয়ে দিল, মুসলিম যাযাবর বাখরওয়াল সম্প্রদায়ের আট বছরের মেয়েটিকে ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত একজনও ঘটনার সময় নাবালক ছিল না। ফলে সাবালক হিসেবে নতুন করে অষ্টম অভিযুক্তের অপরাধের বিচার করা যেতে পারে। কার্যত নিম্ন আদালত ও হাই কোর্টের রায় খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার বিচারপতি অজয় রাস্তোগি এবং জে বি পারদিওয়ালার বেঞ্চ মন্তব্য করে, “অভিযুক্তের বয়স নির্ধারণের কোনও চূড়ান্ত প্রমাণ না থাকলে বয়স সংক্রান্ত ডাক্তারি মতামত বিবেচনা করা উচিত। বয়স নির্ধারণের শারীরিক পরীক্ষাকে বিশ্বাস করা যায় কিনা তা নির্ভর করছে জোরালো প্রমাণের উপরেই।” এর ফলে হাই কোর্টের নির্দেশিকা কার্যত বাতিল হয়ে গেল। যেখানে নাবালক হিসেবে অভিযুক্তের জুভেনাইল বিচারের কথা বলা হয়েছিল। বিচারপতি পর্দিওয়ালা বলেন, “অপরাধের সময় অভিযুক্ত নাবালক ছিল, কাঠুয়ার সিজেএম এবং হাই কোর্টের এই রায়কে আমরা একপাশ সরিয়ে রাখছি।” মনে করা হচ্ছে, এর ফলে কাঠুয়া গণধর্ষণ কাণ্ডে মূল চক্রী সঞ্জিরামের ভাইপো শুভম সাংরার বিচরা প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হতে পারে।
[আরও পড়ুন: ‘মনমোহনকে গুরু বলেছিলেন ওবামা’, বিজেপির জি-২০ কটাক্ষে পালটা জয়রামের]
২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি কাশ্মীরে কাঠুয়ায় মুসলিম যাযাবর বাখরওয়াল সম্প্রদায়ের আট বছরের শিশুকন্যাকে অপহরণ করা হয়। একটি মন্দিরে আটকে রেখে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ১৭ জানুয়ারি মন্দির লাগোয়া জঙ্গল থেকে মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে জানা যায়, পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। এমনকি খুন করার আগে তাকে আরও একবার ধর্ষণ করা হয়। এই নির্মম গণধর্ষণের ফুঁসে ওঠে গোটা দেশ। পুলিশি তদন্তে জানা যায়, সঞ্জিরামের নেতৃত্বে মুসলিম যাবাবর বাখরওয়াল সম্প্রদায়কে এলাকা ছাড়া করতেই আট বছরের মেয়েটিকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে সঞ্জিরাম, পুলিশ অফিসার দীপ খাজুরিয়া এবং প্রবেশ কুমার।
[আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য শিবির পরিদর্শনে গিয়ে বৃদ্ধা রোগীর পা টিপে দিলেন মন্ত্রী, রাত কাটালেন হাসপাতালেই]
বিচারে তিন জনের ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয়। এস আই আনন্দ দত্ত, হেড কনস্টেবল তিলক রাজ ও বিশেষ পুলিশ আধিকারিক সুরেন্দ্র ভার্মাকে প্রমাণ নষ্টের অভিযোগে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাঠানকোট আদালত দোষী সাব্যস্ত করে ছ’জনকে। সাঞ্জিরামের ছেলে বিশাল নির্দোষ হওয়ার যথেষ্ট প্রমাণ দাখিল করায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।