সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: সকালে নয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানি হবে মধ্যাহ্নভোজের পর। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ ফের ওই ঘটনার বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখবে। শুনানিতে ৪২টি পক্ষের ২০০-র বেশি আইনজীবী অংশ নেবেন।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর শেষবার আর জি কর মামলার শুনানি হয়। সেদিনও আদালত খোলার পর ১ নম্বর মামলাই ছিল আর জি কর। বস্তুত এ পর্যন্ত এই মামলার সবকটি শুনানিই হয়েছে আদালত খোলার সঙ্গে সঙ্গে। এই প্রথম মামলাটির শুনানি হবে দুপুর দুটোর পর। আসলে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল ২৭ সেপ্টেম্বর। কিন্তু রাজ্যের আইনজীবী অসুস্থ থাকায় শুনানির দিন পিছিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার করা হয়। সোমবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের ৪২ নম্বর মামলা এটি।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর শুনানিতে সিবিআই মুখবদ্ধ খামে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট পেশ করেছে। তদন্তের গতিতে সন্তোষপ্রকাশ করলেও সেই রিপোর্টে কী আছে তা প্রকাশ্যে আনেনি সুপ্রিম কোর্ট। আগামী শুনানিতেও সেই নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা কম। কারণ গত শুনানিতেই শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, তদন্তে সিবিআইকে সময় দিতে হবে। তবে ১৭ সেপ্টেম্বর যে নির্দেশগুলি দিয়েছে সেগুলির অগ্রগতি কতদূর তা খতিয়ে দেখা হতে পারে।
আগের শুনানিতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। রাজ্য সরকারের ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তিতে সংশোধনের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। হাসপাতালের নিরাপত্তায় বেসরকারি সংস্থার বা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়োগে আপত্তি জানায় সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের নির্দেশ ছিল, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলাশাসক, মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ও সিনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে হাসপাতালে শৌচাগার এবং সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। মহিলা চিকিৎসকেরা সেমিনার হলে বিশ্রাম নিতে গেলে তাদের বায়োমেট্রিক নেওয়া দরকার। নিরাপত্তার জন্য স্বাস্থ্যসচিবকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে। রাজ্য এই পদক্ষেপগুলির জন্য ১৪ দিন সময় চেয়েছিল। একই সঙ্গে উইকিপিডিয়াকে নির্দেশ দেওয়া হয় নির্যাতিতার ছবি এবং নাম সরিয়ে ফেলার। এই নির্দেশগুলির কতটা কার্যকর হল? রাজ্যের তরফে আগামী শুনানিতে সেটা লিখিত আকারে জানানো হতে পারে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য কী জানাচ্ছে, সেটার উপর নির্ভর করছে রাজ্যের আন্দোলনরত চিকিৎসকরা ফের কর্মবিরতিতে যাবেন কিনা। ডাক্তাররা হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, সুপ্রিম শুনানিতে রাজ্য সরকার চিকিৎসকদের দাবিদাওয়া পূরণে সদিচ্ছা না দেখালে ফের পূর্ণ কর্মবিরতিতে যেতে পারেন তাঁরা। সেই সিদ্ধান্তও নির্ভর করছে শুনানির উপর।