সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “রিয়ার পরিবার আমাকে পাগলা গারদে পাঠিয়ে দেবে বাবা”, মৃত্যুর এক মাস আগে ঠিক এই কথাগুলোই নাকি সুশান্ত তাঁর বাবাকে বলেছিলেন ফোনে। মঙ্গলবার পাটনার রাজীব নগর থানায় দায়ের করা এইআইআর-এ এমন বিস্ফোরক দাবিই করেছেন অভিনেতার বাবা কৃষ্ণকুমার সিং। শুধু তাই নয়, উত্থাপন করেছেন আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ের। যা তদন্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এএনআই-এর খবর অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই প্রাথমিকস্তরে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কৃষ্ণকুমার সিং যাঁদের নাম উল্লেখ করেছেন এফআইআর-এ প্রত্যেকের উপরেই নজর রাখছে পুলিশ। জেরাও করা হবে বলে জানিয়েছেন পাটনার পুলিশ আধিকারিক বিনয় তিওয়ারি।
রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন সুশান্তের (Sushant Singh Rajput) বাবা। মার্চ মাসেই কেন সুশান্ত সিং রাজপুতের বিশ্বস্ত এক দেহরক্ষীকে সরিয়ে দিয়েছিলেন বান্ধবী রিয়া? যদি সত্যিই মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকে ছেলে, তাহলে কেন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়ার আগে পরিবারকে জানাতে দেননি তিনি? কেনই বা আত্মীয়-স্বজন, ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবদের থেকে সুশান্তকে সরিয়ে রাখতেন? এমন একাধিক প্রশ্নের উত্থাপন করেছেন কৃষ্ণ কুমার সিং তাঁর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে। শুধু তাই নয়, খুব কড়া ডোজের ওষুধ খাইয়ে দিয়ে একবার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সুশান্তের বন্ধুদের বলেছিলেন ‘ওর ডেঙ্গি হয়েছে’,, এমন অভিযোগও রয়েছে রিয়ার বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, রিয়া (Reah Chakraborty) সুশান্ত সিং রাজপুতের তিনটি কোম্পানিরই অংশীদার ছিলেন। শুধু তাই নয়, এর মধ্যে একটি কোম্পানির অংশীদার রয়েছেন রিয়ার ভাইও। যদিও অভিনেত্রীর কোনও মূলধনই ছিল না এই তিনটি সংস্থাতে। পুরো টাকাই ঢেলেছিলেন সুশান্ত! সেই প্রসঙ্গও টেনেছেন এফআইআর-এ কে কে সিং। তাঁর কথায়, রিয়ার প্রথম থেকেই নজর ছিল তাঁর ছেলের অর্থ এবং সম্পত্তির দিকে। সুশান্তের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে শপিং আর বিদেশ ভ্রমণই নয় জোর করে খুলিয়েছিলেন তিনটি কোম্পানি। সুশান্তের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সম্প্রতি একটি এমন অ্যাকাউন্টে ১৫ কোটি টাকা ট্রান্সফার হয়েছে যে, যার সঙ্গে সুশান্তের কোনও লেনদেনই নেই! সুশান্তের ব্যাংক ডিটেইলস সবটাই জানতেন রিয়া। তিনি সুশান্তের টাকা আত্মসাৎ করে, নয়ছয় করেছেন বলে অভিযোগ প্রয়াত অভিনেতার বাবার।
[আরও পড়ুন: করোনা রোখার টোটকা- গোমূত্র, হনুমান চালিশা, ভাবিজি পাঁপড়? বিজেপিকে ব্যঙ্গ সাংসদ নুসরতের]
এখানেই শেষ নয়, সোমবার পাটনার রাজীব নগর থানায় রিয়ার বিরুদ্ধে ৭ পাতার ওই অভিযোগনামায় এও উল্লেখ রয়েছে যে, সুশান্তকে জোর করে মানসিক রোগী প্রমাণিত করার চেষ্টা করছিল রিয়া ও তার পরিবার। জোর করে মানসিক অবসাদের ওষুধ খাওয়ানো হত তাঁকে। “এমনকী, সুশান্তের আগের বাড়িতে ভূত-প্রেত রয়েছে, এসব বলে জোর করে বান্দ্রার এই বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে শিফট করান রিয়া। যা প্রথমে সুশান্তের বাড়ির লোকও জানতেন না। এছাড়াও সুশান্তকে নিয়ে শহরতলীর এক রিসর্টেও কিছুদিন থাকেন রিয়া। সুশান্ত অদ্ভূত আচরণ করে কিংবা আজগুবি কথা বলে, এসব বারবার বলে তাঁর মানসিক পরিস্থিতি নষ্ট করে দিয়েছিলেন রিয়া। সুশান্তের এক বিশ্বস্ত দেহরক্ষীকে সরিয়ে দেওয়ার পর সমস্যা করেন সুশান্তের কর্মচারীদের সঙ্গেও। পুরনো কাউকেই পছন্দ করতেন না রিয়া। বরং, সবটাই নিজের অঙ্গুলিহেলনে চালনা করতেন। সুশান্ত কার সঙ্গে খাবে, উঠবে, বসবে, কথা বলবে যাবতীয় বিষয় নিজের নখদর্পণে রেখেছিলেন রিয়া। এমনকী সুশান্তের আত্মহত্যার এক সপ্তাহ আগে যখন রিয়া বাড়ি ছেড়ে চলে যান, তখন বহুমূল্য গয়না, টাকাপয়সা, ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড থেকে শুরু করে চিকিৎসার ফাইলগুলো অবধি নিজের সঙ্গে নিয়ে যান রিয়া। যাতে সুশান্তকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারেন ওই ফাইলগুলো দিয়ে..” এমনই অজস্র অভিযোগ তুলেছেন সুশান্তের বাবা।
সুশান্তকে চেন দিয়েও বেঁধে রাখতেন রিয়া! বিস্ফোরক অভিযোগ অভিনেতার ঘনিষ্ঠজনদের। রাজীব নগর থানায় রিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১, ৩৪২, ৩৮০, ৪০৬, ৫০৬ এবং ৩০৬ ধারায় দায়ের করা হয়েছে অভিযোগ। রিয়ার বিরুদ্ধে কৃষ্ণকুমার সিংয়ের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই পাটনা থেকে ৪জনের একটি টিম মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা হয়েছে ঘটনার তদন্তে। মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগেই তাঁরা তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে। দিন যত যাচ্ছে ক্রমশই জোরালো হচ্ছে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর রহস্য। রিয়ার তরফের আইনজীবীও গতকাল আলোচনা সেরে এসেছেন অভিনেত্রীর পরিবারের সঙ্গে।
মঙ্গলবারই অভিনেতার বান্ধবী তথা অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন সুশান্তের বাবা কৃষ্ণকুমার সিং। এযাবৎকাল অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে কোনওরকম মুখ খোলেননি তাঁর পরিবার। বরং বিতর্ক, এবং মৃত্যুর কারণ নিয়ে জলঘোলা হলেও চুপ থেকেছে সিং পরিবার। তবে সোমবার পাটনার রাজীব নগর থানায় রিয়ার বিরুদ্ধে ৭ পাতার এক অভিযোগনামা দিয়ে এফআইআর দায়ের করেছেন প্রয়াত অভিনেতার বাবা। উল্লেখ্য, সুশান্তের মৃত্যুর পর পরিবারের তরফে প্রথমবার কোনও অভিযোগ দায়ের করা হল।
এছাড়াও রিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন সুশান্তের বাব। তাঁর কথায় রিয়ার প্রথম থেকেই নজর ছিল তাঁর ছেলের অর্থ এবং সম্পত্তির দিকে। সুশান্তের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে শপিং আর বিদেশ ভ্রমণই নয় জোর করে খুলিয়েছিলেন তিনটি কোম্পানি। আর সেই তিনটি কোম্পানির অংশীদার রিয়া এবং তাঁর ভাই সৌভিক চক্রবর্তী। সৌভিককেও ইতোমধ্যে জেরা করেছে মুম্বই পুলিশ। এছাড়াও সুশান্তকে জোর করে বান্দ্রার এই বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে শিফট করান রিয়া। তা কিন্তু প্রথমে সুশান্তের বাড়ির লোকও জানতেন না।
[আরও পড়ুন: ‘ঠোক দো…’, মৃত্যুকামনার জবাবে এই বলে ভক্তদের উসকালেন বিগ বি]
The post রিয়ার পরিবার সুশান্তকে পাগলা গারদে পাঠাতে চেয়েছিল! FIR-এ বিস্ফোরক দাবি অভিনেতার বাবার appeared first on Sangbad Pratidin.