shono
Advertisement

‘করোনা ঠেকাতে পারে মার্শাল আর্ট’, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক

তাঁর এই বক্তব্যের বৈজ্ঞানিক প্রমাণপত্র কোথায়? উঠছে প্রশ্ন।
Posted: 04:46 PM Mar 31, 2021Updated: 05:21 PM Mar 31, 2021

অভিরূপ দাশ: স্প্রিংয়ের মতো লাফিয়ে উঠছে শরীর। সটান পা উঠে যাচ্ছে ছ’ফুট উচ্চতায়। ‘হুক কিকে’ ছত্রভঙ্গ প্রতিপক্ষ। এমন শারীরিক কসরত ঠেকাতে পারে মারণ করোনা ভাইরাস! খোদ স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার এই বার্তা ঘিরে কৌতূহল চরমে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাঁড়ি কাঁড়ি ভিটামিন ক্যাপসুল গিলে যাঁরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন, তাঁদের ভ্রম ভাঙাতে পারে নয়া বার্তা।

Advertisement

করোনা আবহের শুরু থেকেই চিকিৎসকরা বলছিলেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত হলে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই সহজ। সেই তথ্যেই সিলমোহর দিয়েছে তাইকোণ্ডো নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যর বার্তা। তিনি বলেছেন, তাইকোন্ডোই পারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে। করোনা ঠেকাতে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে শারীরিক পরিশ্রমের সম্পর্ক আছে। মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষকরা বলছেন, তাইকোন্ডোর মতো মার্শাল আর্টসে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করে। এমন কসরতে মাংসপেশি এবং হৃদযন্ত্র দ্বিগুণ কাজ করতে শুরু করে। স্বাভাবিকভাবেই শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। শরীরের দূরতম প্রান্ত পর্যন্ত অক্সিজেন পৌঁছতে শুরু করে। তখনই শরীরের কোষগুলোতে শক্তি উৎপাদন শুরু হয়। বেড়ে যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

[আরও পড়ুন: ‘স্বৈরতান্ত্রিক নৈরাজ্য ও আগ্রাসন রুখতে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গড়ুন’, অডিও বার্তা বুদ্ধদেবের]

আর্ন্তজাতিক অলিম্পিক কমিটির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ‘খেলাধুলা পারে ভাইরাস ঠেকাতে’ শীর্ষক এক চুক্তিতে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আর্ন্তজাতিক অলিম্পিক কমিটি। এই চুক্তি সাক্ষরের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বাহ্যিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটাতে হবে। তবেই ঠেকানো যাবে করোনা ভাইরাস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার বক্তব্য সেই বার্তার সমর্থনেই।

কোরিয়ার মার্শাল আর্ট তাইকোন্ডো ক্যারাটের থেকেও বেশি জনপ্রিয়। চিতাবাঘের মতো ক্ষিপ্রতায় মাথা সমান উচ্চতায় লাথি চালিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কৌশল শেখানো হয় এতে। ২০১৭ মার্চে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে এই কোরীয় মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল। অধুনা রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার মেজর দ্বৈপায়ন বিশ্বাস সে সময় প্রশিক্ষণ দিতেন জুনিয়র ডাক্তারদের। তাঁর কথায়, শুধু শারীরিক ভাবে ঘায়েল করাই নয়, মাথা ঠান্ডা করার মন্ত্র যোগায় এই খেলা। এক সময় নীলরতনের জরুরি বিভাগে গন্ডগোলের জেরে কর্মবিরতি করার ব্যাপারে অনড় ছিলেন ইন্টার্নরা। সেসময় তাইকোন্ডোর শিক্ষার্থীরাই ইন্টার্নদের বুঝিয়ে নিরস্ত করেছিলেন। অঙ্কের মতো সূত্র মেনে চললে এ খেলায় এক জন কম শক্তির মানুষ তাঁর দ্বিগুণ শক্তির মানুষকে পরাস্ত করতে পারেন। তার জন্য দরকার মনোসংযোগ। তাইকোন্ডোয় ইট বা কাঠের বোর্ড ভাঙতে হয়। লক্ষ্য স্থির রেখে মনোসংযোগ ঠিক রেখে কোথায় আঘাত করলে কাজ হাসিল হবে, তা রপ্ত করলেই কেল্লাফতে। এই মনোসংযোগ টেলোমারেজ অ্যাক্টিভিটিকে বাড়িয়ে তোলে। যাতে নানান রোগ ঠেকানো সম্ভব।

[আরও পড়ুন: ‘বর্গি’দের তাড়াতে গর্জে উঠলেন ‘বাঘিনী’ মমতা, প্রকাশ্যে ‘ফাইটার দিদি’র তৃতীয় ভিডিও]

যদিও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার তাইকোন্ডো বার্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকদের একাংশ। সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক ডা. সজল বিশ্বাস, জানিয়েছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দীর্ঘ সময় ও পুষ্টিকর খাবার দরকার। তাইকোন্ডো করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পত্র কোথায়?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement