নন্দন দত্ত, সিউড়ি: কেদারনাথের পথ অনুসরণ করল তারাপীঠ(Tarapith)। তারাপীঠ মন্দিরে ভক্তদের ভিড় সামাল দিতে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করল মন্দির সেবাইত কমিটি। আজ সোমবার থেকে তারাপীঠ মন্দিরের ভিতরে ছবি তোলা নিষিদ্ধ করা হল। এমনকী নির্দিষ্ট করা সেবাইতরাও আর আজ থেকে মোবাইল নিয়ে ভিতরে যেতে পারবেন না। একইসঙ্গে মন্দিরে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে আর সংকল্প করে অঞ্জলি দেওয়া যাবে না। তারাপীঠ সেবাইত কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় জানান, “আমরা ভক্তদের স্বাচ্ছন্দ্য একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই নিয়মগুলি বলবৎ করার চেষ্টা করছি। সকলেই এই বিধি আরোপে একমত হয়েছে। আমরা সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়ে আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি।”
শীত পড়তেই বীরভূমে পর্যটক ও ভক্তদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। যদিও বেশ কিছু ট্রেন বাতিল থাকায় এখনও সেই ভিড় হচ্ছে না। মন্দিরের সেবাইত পুলক চট্টোপাধ্যায় জানান, “এখন ইন্টারসিটি, গণদেবতার মতো জনপ্রিয় ট্রেন বন্ধ। ওই ট্রেনে শীতকালে বছর শেষে প্রচুর যাত্রীরা আসে। তবু খুব যে ভিড় কম তা নয়। মন্দিরের গর্ভগৃহে ছবি তোলা ও অঞ্জলি দেওয়া নিষিদ্ধ করার ঘটনায় সকলের সুবিধা হবে।”
[আরও পড়ুন: আসছে মোক্ষদা একাদশী, এইদিনে এই জিনিসগুলি বাড়িতে আনা খুবই শুভ]
তারাপীঠ মন্দির চত্বর জুড়ে বেশ কয়েক জায়গায় চার দফার বিজ্ঞপ্তি জারি করে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ১ পৌষ সোমবার তারাপীঠ মন্দিরের গর্ভগৃহে ছবি তোলা, মায়ের সঙ্গে ছবি তোলা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এমনকী পুজো দিতে নিয়ে যাওয়া কোনও সহকারী সেবাইতও স্মার্ট ফোন নিয়ে ভিতরে যেতে পারবেন না। কোনও সেবাইত আজ থেকে মোবাইল নিয়ে মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকবেন না। সোমবার থেকে মন্দিরের ভিতর মায়ের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে অঞ্জলি দেওয়া বন্ধ। তার পরিবর্তে মন্দিরের চত্বরে অঞ্জলি সেরে পুজো দিয়ে মাকে দর্শনের জন্য মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে পারবে।
উল্লেখ্য, কৌশিকী অমাবস্যার পরে এমনই বেশ কিছু বিধি চালু করেছিল সেবাইত কমিটি। যেহেতু মন্দিরের গর্ভগৃহ সংস্কার করা হয়েছিল তাই আলতা, সিঁদুর নিয়ে ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। মেঝেতে ফুল পড়ে তার উপর আলতা সিঁদুর পড়ে মেঝে নষ্ট হচ্ছিল বলে সেবাইতদের নজরে আসে। মায়ের সামনে তারা মাকে জড়িয়ে ধরে ছবি তোলা হচ্ছিল। সেবাইতরা জানান, গর্ভগৃহে ছবি তুলতে গিয়ে অশান্তি হচ্ছে। একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। ভক্তরা শুধু একটা ছবি নয়, নানাভাবে ছবি তুলে রিল বানাতে শুরু করেছে। তাতে সময় নষ্টের সঙ্গে সঙ্গে ভক্তদের মধ্যে অশান্তি হচ্ছে। অঞ্জলির ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তারাময় মুখোপাধ্যায় জানান, “আমরা এই বিধিনিষেধের জেরে ভক্তদের আরও কিছুটা সময় দর্শনের জন্য দিতে চাই। তাতে দর্শনের জন্য লাইনে কম সময় দাঁড়াতে হবে। সুষ্ঠুভাবে দর্শন করা যাবে।”