সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাজারে নগদের জোগান বাড়াতে বেসরকারি ব্যাংকের সংস্থা বাড়াতে চায় রিজার্ভ ব্যাংক (Reserve Bank)। সেই লক্ষ্যে টাটা, বিড়লা বা আম্বানিদের মতো বড় শিল্পপতিদের জন্য ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু করার পরামর্শ দিয়েছে আরবিআইয়ের (RBI) বিশেষ কমিটি। আর তার ঠিক এক দিন বাদেই ব্যাংকিং পরিষেবা চালু করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাল দেশের দুই বড় সংস্থা। শোনা যাচ্ছে, রিজার্ভ ব্যাংক যদি সত্যিই ব্যাংকিং পরিষেবার নিয়ম শিথিল করে, তাহলে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারে টাটা গ্রুপ এবং বিড়লা গ্রুপ।
আসলে, কেন্দ্র বেশ কিছুদিন ধরেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছে। শোনা যাচ্ছে খুব বেশি হলে গোটা চারেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক রাখা হবে। বাকিগুলিকে হয় বড় ব্যাংকগুলির সঙ্গে সংযুক্তকরণ করা হবে, নাহয় শেয়ার বিক্রি করা হবে। এখন প্রশ্ন হল, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংখ্যা কমলে বাজারে শূন্যস্থান সৃষ্টি হতে পারে। সেই শূন্যস্থান পুরণের লক্ষ্যে শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাংকের বিশেষ কমিটি সুপারিশ করেছে, টাটা, বিড়লা বা রিলায়েন্সের মতো বড় শিল্প সংস্থাকে এবার ব্যাংকিং পরিষেবা চালু করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। রিজার্ভ ব্যাংকের ডেপুটি ডিরেক্টর পি কে মোহান্তির নেতৃত্বাধীন কমিটি বলছে, যে সমস্ত সংস্থা ব্যাংক না হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে বাজারে ঋণ দেওয়ার ব্যবসা করছে (পড়ুন ফাইনান্স সংস্থা), তাদের এবার ব্যাংকের মর্যাদা দেওয়া যেতেই পারে। শর্ত একটাই, যে সব ফাইনান্স সংস্থার সম্পত্তির পরিমাণ ৫০ হাজার কোটির বেশি তারাই আবেদন করতে পারবে। শুধু তাই নয়, পেটিএম, জিও, এয়ারটেলের মতো ই-ওয়ালেটগুলিকেও স্মল ফাইনান্স ব্যাংকের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে রিজার্ভ ব্যাংকের কমিটি। যদিও, এই যাবতীয় সুপারিশ মানতে হলে কেন্দ্রকে সংসদে বিল পেশ করে ব্যাংকিং আইন বদলাতে হবে।
[আরও পড়ুন: ট্রেনে সোনা-রুপো-নগদ পাচারের ঘটনায় আতঙ্কে যাত্রীরা, তদন্ত শুরু রেলের]
রিজার্ভ ব্যাংকের এই সুপারিশের খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোনা যাচ্ছে, টাটা গোষ্ঠী (Tata Group) এবং আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠী (Aditya Birla Group) নাকি ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবে। টাটা গোষ্ঠীর ফাইনান্স সংস্থা টাটা ক্যাপিট্যালের মোট সম্পত্তি প্রায় ৭৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং বিড়লা গোষ্ঠীর ফাইনান্স সংস্থা আদিত্য বিড়লা ক্যাপিট্যালের মোট সম্পত্তি প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা। সুতরাং রিজার্ভ ব্যাংকের নতুন সুপারিশ কার্যকর হলে এই দুই সংস্থাই ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবে। এর আগে ২০১৩ সালেও ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছিল এই দুই সংস্থা। যদিও তখন নানা জটিলতায় এরা লাইসেন্স পায়নি। এবারেও সবটা নির্ভর করছে কেন্দ্রের উপর। কেন্দ্র যদি নতুন আইন পাশ করায়, তাহলে দেশের সবচেয়ে বড় এই সংস্থাগুলি ব্যাংকিং পরিষেবায় যুক্ত হতেই পারে।