shono
Advertisement

Breaking News

নীতি নেই, সংগঠন নেই, পদ নিয়েই ব্যস্ত নেতারা! ফের বঙ্গ বিজেপিকে তুলোধোনা তথাগতর

নেতাদের অস্বস্তি বাড়িয়ে ফের বিস্ফোরক তথাগত রায়।
Posted: 09:08 AM Nov 08, 2023Updated: 09:47 AM Nov 08, 2023

স্টাফ রিপোর্টার: বঙ্গ বিজেপি নেতাদের অস্বস্তি বাড়িয়ে ফের বিস্ফোরক তথাগত রায় (Tathagata Roy)। এক বৈদ্যুতিন মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দলের রাজ‌্য নেতাদের তীব্র আক্রমণ করেন প্রবীণ এই বিজেপি নেতা। বিভিন্ন বিষয়ে বলতে গিয়ে দলের ভুল ধরিয়ে ছত্রে ছত্রে রাজ‌্য বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরকে নিশানা করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, লোকসভা ভোটে প্রচারের কোনও ইস্যু নেই। পদ নিয়েই ব‌্যস্ত রয়েছেন দলের নেতারা।

Advertisement

বঙ্গ বিজেপিতে যখন গোষ্ঠীকোন্দল তীব্র আকার নিয়েছে তখন তথাগতবাবু নিশানা করেছেন তাঁর দলের বঙ্গ নেতাদের। তিনি বলেন, “পার্টির কার্যকর্তাদের চেষ্টা হচ্ছে মানুষের কাছে পৌঁছনো নয়, দলের একটা পদ ও দায়িত্ব কুক্ষিগত করা। দলের দায়িত্ব প্রয়োজন ঠিকই, কিন্তু সেটা গৌণ। প্রধান ও মুখ‌্য হচ্ছে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। এই মানুষের কাছে পৌঁছনোর বিষয়টা নিয়ে ভাবনাচিন্তাই করা হয়নি। ভাবনাচিন্তার জায়গাটা ব্রাত‌্য হয়ে রয়েছে।” রাজ্যে একের পর এক নির্বাচনে হারতে হচ্ছে বিজেপিকে। পদ নিয়ে জেলায় জেলায় চলছে নেতাদের মধ্যে কোন্দল। বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি সল্টলেক ও মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসও। বিক্ষুব্ধদের সংখ‌্যা ক্রমশ বাড়ছে। তখন পার্টি নেতারা যে জনসংযোগহীন, কার্যত সেই মন্তব‌্য করে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরকে এদিন চরম অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন প্রাক্তন রাজ‌্যপাল তথা প্রবীণ এই বিজেপি নেতা।

[আরও পড়ুন: ‘আপনার রবীন্দ্রপ্রীতিতে আমি মুগ্ধ’, ফলক বিতর্কের মাঝেই ফের মমতাকে চিঠি বিদ্যুতের]

তথাগতবাবুর কথায়, “বিজেপিতে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই খালি বলে সংগঠন। কিন্তু সংগঠনকে তো বানাতে হবে। সংগঠন মানে তো কিছু মানুষের সমষ্টি। সেই সমষ্টি ধরে রাখবে কে?’’ নিচুতলায় বিজেপির সংগঠন বলে কিছু নেই। অর্ধেকের বেশি বুথে কমিটি নেই। সেটাই এদিন কার্যত বোঝাতে চেয়েছেন তথাগত রায়। তাঁর স্পষ্ট কথা, বঙ্গ বিজেপির নীতি, চিন্তাভাবনা, থিঙ্কট‌্যাঙ্ক কিছুই নেই। শুধু সংগঠন আর সংগঠন বলে জপ করে যাচ্ছে। আরে, সংগঠন তো ডাকাত দলেরও আছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলের সংগঠনের একটা নীতি থাকে। সেই নীতির চেহারাটা তো বোঝা দরকার।’’

শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ থেকে সুকান্ত মজুমদারের মতো নেতারা রয়েছেন, তাহলে কোথায় সমস‌্যা হচ্ছে দলে? তথাগতর জবাব, “যে নেতারা আছেন তাঁরা যে কার্যপ্রণালী ধরে কাজ করছেন তার মধ্যে চিন্তাভাবনার কোনও জায়গা নেই। আমি মনে করি, লোকসভায় যদি ১৮টি আসন ধরে রাখতে হয় বা তার চেয়ে বেশি আসন পেতে হয়, অমিত শাহ বলেছেন ৩৫টি আসন। তাহলে তো ভাবনাচিন্তা করতে হবে।” এরপরই প্রবীণ বিজেপি নেতার মন্তব‌্য, বঙ্গ বিজেপির ভাবনাচিন্তাটা ঠিক দিকে যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘‘সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তি কাগজে যা ছাপা হয় গ্রামেগঞ্জের কর্মীরা তার মাধ‌্যমে জেনে যায় দলের কী নীতি, কীভাবে রূপায়ণ করতে হবে। এরকম কোনও চিন্তা বিজেপিতে নেই। আমাদের মুখপত্রই নেই।’’ বিস্ফোরক তথাগত রায়ের মন্তব‌্য, ‘‘আমাদের পার্টিতে কোন মণ্ডলে, কোন অঞ্চলে কে সাধারণ সম্পাদক, কে সভাপতি হচ্ছে, এই নিয়েই সবাই যদি মগ্ন থাকে তাহলে তো সেই দল ভালোভাবে এগোতে পারবে না।’’

[আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের অভিষেককে তলব ইডি’র]

একুশের ভোটে রাজ্যে দু’শো আসন পার করার টার্গেট নিয়ে ৭৭—এ আটকে যায় বিজেপি। মুখ পোড়ে দিল্লির নেতাদের। একুশের ভোটে দলের রণকৌশল নিয়েও নেতৃত্বকে নিশানা করেছেন তথাগত। তাঁর কথায়, ‘‘হিন্দিভাষী নেতাদের এনে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে হিন্দিতে বক্তৃতা করানো হচ্ছিল। তা মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে কি না, মানুষ কীভাবে নিচ্ছে, সেটা নিয়েও কারও ভাবনাচিন্তা ছিল না। বিজেপি চিন্তাভাবনার জায়গাতেই নেই।’’ এপ্রসঙ্গেই তিনি বলেন, “নেতারা আজ বউবাজারে যা বলছেন, কাল হাসনাবাদে সেই একই বক্তৃতা দিচ্ছেন। বিজেপির নীতিটাকে পশ্চিমবঙ্গে কাজে কীভাবে লাগানো হবে সেটা তো আগে বোঝা দরকার।” তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ইস্যুতে তথাগত বলেন, “মহুয়া মৈত্র প্যাঁচে পড়েছেন। এটা নিশিকান্ত দুবে বললে কী হবে। এ রাজ্যে তো বিজেপির ১৮ জন সাংসদ আছেন, তঁাদের কারও বলা উচিত ছিল।’’ ইডি—সিবিআই নিয়ে রাজ‌্য বিজেপি নেতাদের মাতামাতিও ভালো চোখে দেখছেন না তথাগত রায়। বলেন, ‘‘রাজ‌্য বিজেপির সঙ্গে ইডি—সিবিআইয়ের কী সম্পর্ক আছে। পার্টি পার্টির কাজ করবে। সরকার সরকারের কাজ করবে।’’

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement