সৌরভ মাজি, বর্ধমান: দলবদলের আবহে বর্ধমান শহর অর্থাৎ বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্র ধরে রাখা প্রেস্টিজ ইস্যু শাসকদল তৃণমূলের (TMC) কাছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকলে তা আখেরে ভোটবাক্সে প্রভাব ফেলবে, বুঝেই তড়িঘড়ি তা মেটাতে হস্তক্ষেপ করল তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (Prashant Kishor) টিম। শুক্রবার বর্ধমান শহরে গেল পিকে-র টিমকে। বৈঠকের পর সব পক্ষই বার্তা দিয়েছেন আসনটি জিততে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করবেন তাঁরা। বাস্তাবায়ন কতটা সবে তা অবশ্য সময়ই বলবে। এদিকে, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে খোকন দাসকে বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক করারর ডাক দিয়ে প্রচার শুরু করেছে দলেরই একাংশ। যদিও দলের তরফে এখনও এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি।
এই কেন্দ্র থেকে জিততেন একসময় রাজ্যের প্রয়াত শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মন্ত্রিসভার ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ বলা হত তাঁকে। ২০১১ সালে এই কেন্দ্রে নিরুপম সেনকে ৩০ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হন রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। ২০১৬ সালে তার থেকেও বেশি ভোটে জেতেন রবিরঞ্জনবাবু। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জোর ধাক্কা খায় তৃণমূল। এই কেন্দ্র থেকে মাত্র হাজারখানেক ভোটে লিড পেয়েছিল শাসকদল। যা নিয়ে ময়নাতদন্ত করে উঠে আসে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে এই শোচনীয় ফল। তারপর থেকে বিভিন্ন সময় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। শহরের নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সভা থেকেই বিষোদগার করতে থাকেন।
[আরও পড়ুন: নাড্ডার সফরের আগে মালদহে উত্তেজনা, ছেঁড়া হল ফ্লেক্স, কাঠগড়ায় যুব তৃণমূল]
শেষপর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে টিম পিকে। কয়েকদিন আগে শহর তৃণমূলের সভাপতি অরূপ দাসের বাড়িতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় সব পক্ষকে নিয়ে। অরূপবাবু ছাড়াও ছিলেন পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল খোকন দাস, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি রাসবিহারী হালদার, জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস, জেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রব-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। পরে অরূপবাবু বলেন, “ভোটে আমাদের জিততে হবে। তার জন্য যা করণীয় তা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে করব।”
[আরও পড়ুন: ভরসা ‘স্বাস্থ্যসাথী’, হাসপাতালে বিনামূল্যেই কেমোথেরাপি করালেন ক্যানসার রোগী]
খোকনবাবু বলেন, “আমরা এই কেন্দ্রে জিতবই। যৌথভাবে কাজ করব আমরা।” রাসবিহারী, প্রসেনজিৎবাবুও একইসুরে জানিয়েছেন এই কেন্দ্রটা তাঁরা ধরে রাখতে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করবেন। সংগঠনকে আরও মজবুত করতে আরও দু’জন সাধরণ সম্পাদক করা হল জেলা তৃণমূলে। অভিজিৎ সোম তন্ময় সিংহরায়কে সাধারণ সম্পাদক পদ দেওয়া হয়েছে। জেলার মেন্টর উজ্জ্বল প্রামাণিক তাঁদের হাতে শুক্রবার দলের চিঠি তুলে দিয়েছেন।