সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার৷ চাকরি করেন গুগলে৷ বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন এক যুবক৷ মাঝ রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে স্থানীয় শিশুদের চকোলেট দিচ্ছিলেন তাঁর এক বন্ধু৷ ছেলেধরা সন্দেহের ওই যুবক ও তাঁর বন্ধুদের বেধড়ক মারধর করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ কর্ণাটকের বিদারে বেঘোরে প্রাণ গেল ওই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি তাঁর চার বন্ধু৷ তাঁদের মধ্যে একজন আবার কাতারের নাগরিক৷ ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির অভিযোগে ৩২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷
[বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ বিএসএফ জওয়ানের, অপমানে আত্মঘাতী নির্যাতিতা]
নিঝুম দুপুরে কাঁধে বস্তা নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে কাগজ কুড়ানি৷ তাঁকে দেখিয়ে অবাধ্য সন্তানকে ছেলেধরার ভয় দেখাতেন অভিভাবকরা৷ ছোটবেলায় কম-বেশি এমন অভিজ্ঞতা তো সকলেরই আছে৷ কিন্ত, বাস্তবে কী আর ছেলেধরা বলে কিছু হয়! কিন্তু, ঘটনা হল এই ছেলেধরা গুজবেই আতঙ্ক ছড়িয়ে কর্ণাটকে৷ হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন ধরনের ম্যাসেজ ও ছবি দেখে বিভ্রান্ত স্থানীয় বাসিন্দারা৷ পরিস্থিতি এমনই, যে স্রেফ সন্দেহের বশে নিরীহ ব্যক্তিদের পিটিয়ে মেরে ফেলতেও দ্বিধা করছেন না তাঁরা৷ শুক্রবার তেমনই ঘটনা ঘটল কর্ণাটকের বিদারে৷ গণপিটুনিতে প্রাণ গেল এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের! গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভরতি তাঁর চার বন্ধু৷
মৃতের নাম মহম্মদ আজম৷ বছর বত্রিশের ওই যুবক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, গুগলে কর্মরত৷ পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার গাড়ি করে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন আজম ও তাঁর চার বন্ধু৷ বিদারের কাছে রাস্তার ধারে কয়েকজন শিশুকে দেখে গাড়ি থামান তাঁরা৷ গাড়ি থেকে নেমে শিশুদের চকোলেট দিচ্ছিলেন একজন৷ স্থানীয় মানুষদের সন্দেহ হয়৷ তাঁদের ধারণা হয়, আজম ও তাঁর বন্ধুরা ছেলেধরা৷ হোয়াটসঅ্যাপের মারফত দ্রুত খবর ছড়িয়ে পড়েছে৷ ঘটনাস্থলে জড়ো হয় বহু মানুষ৷ মহম্মদ আজম ও তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে শুরু হয় বচসা৷ বিপদ বুঝে গাড়িতে ওঠে পালানোর চেষ্টা করেন ওই যুবকেরা৷ কিন্তু, বাইক নিয়ে তাঁদের পিছনে ধাওয়া করে স্থানীয় কয়েকজন৷ একটি বাইকে ধাক্কা মেরে উলটে যায় গাড়িটি৷ গাড়ি থেকে বের করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মহম্মদ আজম ও তাঁর বন্ধুদের গণপিটুনি দিতে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা৷ ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় ওই ইঞ্জিনিয়ারের৷ বাকিদের উদ্ধার করে হায়দরাবাদের একটি হাসপাতালে ভরতি করেছে পুলিশ৷ ঘটনায় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের অ্যাডমিন-সহ গ্রেপ্তার ৩২ জন৷ ইদানিং দেশজুড়েই ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির ঘটনা বাড়ছে৷ এখনও পর্যন্ত গণপিটুনিতে মারা গিয়েছেন ২০ জনের বেশির মানুষ৷ দিন কয়েক আগে ছেলেধরা সন্দেহে মহারাষ্ট্রে পাঁচজনকে পিটিয়ে মেরেছিল স্থানীয় বাসিন্দারা৷
[দিল্লিতে ১৫ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়েছে বায়ুদূষণ!]
The post ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি, কর্ণাটকে প্রাণ গেল Google-এ কর্মরত ইঞ্জিনিয়ারের appeared first on Sangbad Pratidin.