স্টাফ রিপোর্টার: বেহালার সরশুনার বাসিন্দা তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অন্তরা দাস খুনে নয়া মোড়৷ অন্তরার ব্যক্তিগত ডায়েরি উদ্ধার করল পুলিশ৷ সেই ডায়েরি ঘেঁটে এবার কার্যত পরিচিত খুনিকে চিহ্নিত করে ফেলল পুণে পুলিশ৷ ডায়েরি থেকে মিলেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য৷ কয়েক দিন ধরেই অন্তরার মন ভাল যাচ্ছিল না৷
পুলিশ জানতে পেরেছে শুক্রবার রাতে অফিস থেকে ফিরে বান্ধবীর বাড়িতে যাচ্ছিল অন্তরা৷ কিন্তু বান্ধবীর বাড়িতে পৌঁছনোর আগেই সেই পরিচিত খুনির ছুরির আঘাতে খুন হতে হয় অন্তরাকে৷ শনিবার অন্তরার দুই বান্ধবীকে জেরা করেছে পুলিশ৷ বান্ধবীদের জেরা করে সজল নামে এক যুবকের নাম উঠে এসেছে৷ পুণেতে চাকরি নেওয়ার পর থেকে পার্সেল ফুড আসত অন্তরার ফ্ল্যাটে৷ সেই ফুড ডেলিভারির কাজ করত সজল৷ সজলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ৷ সব তথ্য জোগাড় করে সেই পরিচিত খুনির খোঁজে হন্যে হয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ৷ দু’টি দলে ভাগ হয়ে দু’টি রাজ্যে পৌঁছেছে পুলিশ৷
পুণের বাসিন্দা এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানের পর পুলিশ নিশ্চিত যে, শোধ তুলতেই শুক্রবার রাতে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে খুন করা হয় পুণের ইঞ্জিনিয়ার অন্তরা দাসকে৷ খুনি যে অন্তরার অত্যন্ত পরিচিত, সেই বিষয়ে পুলিশের কোনও সন্দেহ নেই৷ প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, শুক্রবার রাতে তিনি বাইকে করে ফেরার সময়ই দেখতে পান যে, ফুটপাথের উপর যুবক ও যুবতী বচসায় জড়িয়ে পড়েছেন৷ তিনি বিষয়টিকে আমল না দিয়ে এগিয়ে যান৷ হঠাৎই যুবতীর আর্তনাদ শুনে বাইক দাঁড় করান তিনি৷ পিছনে ফিরে দেখেন, ফুটপাথ থেকে যুবতী রাস্তায় গিয়ে পড়লেন৷ প্রথমে তাঁর মনে হয়েছিল, যুবতীকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে ওই যুবক৷ কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় তিনি বাইক নিয়ে ঘটনাস্থলে যান৷ তাঁকে দেখেই কালো আর নীল চেকের টি শার্ট পরা যুবক পালিয়ে যায়৷ অন্তরার বাবা দেবানন্দ দাস ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তাঁদের সন্দেহ অন্তরার পরিচিত যুবক সন্তোষ কুমার এই খুনের সঙ্গে যুক্ত৷ তার বিরুদ্ধে পুণে পুলিশের কাছে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে৷ তিনি জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরুতে থাকার সময় সন্তোষ কুমার নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় অন্তরার৷ সন্তোষও ছিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র৷ ছয় মাস আগে যখন অন্তরা তাঁর কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে চাকরি পেয়ে পুণেতে আসেন, তখন ইণ্টারভিউ দেওয়ার নাম করে সন্তোষও তাঁদের সঙ্গে আসে৷ সেই সূত্রেই পরিবারের লোকেরা সন্তোষের পরিচয় ও মোবাইল নম্বর জানতেন৷ অন্তরা তাঁর মা-বাবাকে জানিয়েছিলেন, পুণেতে আসার পর সন্তোষ তাঁর ঘনিষ্ঠ হতে চাইছে৷ সরে যেতে বললেও জোর করছে সে৷ অফিস থেকে ফেরার পথেও সে তাঁর পিছু নিচ্ছে বলে পরিবারকে জানান ওই যুবতী৷ সন্তোষ অন্তরার পিছু ছাড়েনি৷ পরিবারের সন্দেহ প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় প্রতিশোধ নিতেই সন্তোষ এই কাজ করেছে৷
The post অন্তরা খুনের রহস্য বাড়াল ডায়েরির পাতা appeared first on Sangbad Pratidin.