সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে প্রশাসন সামলান, আরেকদিকে বিপদ বুঝলেই ঝাঁপিয়ে পড়েন অর্জিত ডাক্তারি বিদ্যা নিয়ে। অতি সংকট থেকে বাঁচিয়ে দেন মানুষের প্রাণ। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের সেই মানবিক মুখ ফের দেখলেন সকলে। বলা হচ্ছে তেলেঙ্গানার (Telengana) রাজ্যপাল তামিলসাই সৌন্দরাজনের কথা। বিমানের সহযাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় কালবিলম্ব না করে সোজা স্টেথোস্কোপ নিয়ে এগিয়ে গেলেন তিনি। প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষার পর সুপরামর্শ দিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তুললেন। রাজ্যপালের (Governor) তরফে এমন পরিষেবা পেয়ে আপ্লুত যাত্রী। তামিলসাই সৌন্দরাজনের কথা তাঁর মাধ্যমেই এখন সকলের মুখে মুখে ফিরছে। আদর্শ মানবতার পরিচয় রাখলেন তিনি।
ঘটনা শুক্রবার গভীর রাতের। দিল্লি থেকে ‘ইন্ডিগো’র বিমানে হায়দরাবাদ (Hyderabad) ফিরছিলেন তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল সৌন্দরাজন। তাঁর সহযাত্রী ছিলেন আইপিএস (IPS)অফিসার কৃপানন্দ ত্রিপাঠি উজেলা। আচমকা অসুস্থ বোধ করেন এডিজি র্যাঙ্কের ওই আধিকারিক। তাঁর শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গেই স্টেথোস্কোপ হাতে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন রাজ্যপাল সৌন্দরাজন। দেখা যায়, আইপিএস অফিসারের হার্টবিট অত্যন্ত বেশি। পরীক্ষার পর ‘ডাক্তার’ সৌন্দরাজন তাঁকে পরামর্শ দেন, একটু ঝুঁকে বসতে। চেষ্টা করতে বড় বড় শ্বাস নেওয়ার। সেই পরামর্শ শুনে ধীরে ধীরে স্বস্তি বোধ করতে থাকেন পুলিশ আধিকারিক। হায়দরাবাদে বিমান অবতরণের পর তাঁকে বিমানবন্দর থেকে সোজা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, ডেঙ্গু (Dengue হয়েছে তাঁর। প্লেটলেট নেমে গিয়েছে ১৪ হাজারে।
[আরও পড়ুন: ইডির কাছে অ্যারেস্ট মোমোয় মুখ্যমন্ত্রীর নাম দিলেন পার্থ! অসন্তুষ্ট তৃণমূল নেতৃত্ব]
আইপিএস কৃপানন্দ ত্রিপাঠি বলেন, ”আমি হঠাৎ অসুস্থ বোধ করি। ম্যাডাম রাজ্যপাল এসে আমার শারীরিক পরীক্ষা করে বলেন, ৩৯ হয়ে গিয়েছে হার্টবিট। তিনিই আমাকে ঝুঁকে বসতে বলেন। কিছুক্ষণ পর থেকে আমার একটু সুস্থ লাগে। তিনি সর্বক্ষণ আমার পাশে ছিলেন। উনি না থাকলে হয়ত বিমানের মধ্যেই আমার দমবন্ধ হয়ে আসত। উনি আমার নতুন জীবন দিলেন।” কৃপানন্দ অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhra Pradesh) অতিরিক্ত ডিজিপি পদে কর্মরত।
[আরও পড়ুন: হাতের মেহেন্দি তরতাজা নাবালিকাকে ঠেলে দিয়েছিল মৃত্যুর মুখে! প্রাণ ফেরাল কলকাতার হাসপাতাল]
তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল পেশায় ডাক্তার (Doctor)। এই পদে বসার আগে তিনি চিকিৎসা করে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন। এখন সংবিধান মেনে রাজ্য সুষ্ঠুভাবে চালানো তাঁর কাজ। কিন্তু প্রয়োজন পড়লে যে যখনতখন তিনি ফের সেই পেশার কাজে যুক্ত হতে পারেন, সেটাই প্রমাণ করে দিলেন বিমানে সহযাত্রীর চিকিৎসা করে। বুঝিয়ে দিলেন, অভিভাবকের মতো আমজনতার সঙ্গেই রয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।