সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনে মাত্র তিনটি বাস এই গ্রাম ছুঁয়ে যায়। একেবারে পাণ্ডববর্জিত জনপদ। আলোচনার বাইরে থাকা এই গ্রাম আচমকা শিরোনামে এসেছিল। নোটবাতিল ঘোষণার পর গ্রামবাসীরা ঠিক করেন তারা ক্যাশলেস ব্যবস্থার দিকে এগোবেন। কিন্তু ডিজিটাল লেনদেনে এগিয়ে তারা দ্রুত বুঝতে পারেন বড় ভুল হয়েছে। ক্যাশলেস ব্যবস্থা চালু করে দেখা যায় লাভের গুড় খেয়ে যাচ্ছে কমিশন, লেভিতে। অতএব, পিছনের দিকে হাঁটা। তেলেঙ্গানার ইব্রাহিমপুর আবার নগদে ফিরেছে।
[সুড়ঙ্গে কলসিবন্দি মোহর? চাঞ্চল্য জমিদার বাড়িতে]
ইব্রাহিমপুরকে ক্যাশলেসের উত্তরণে এগিয়ে এনেছিলেন তেলেঙ্গানার সেচমন্ত্রী। বিমুদ্রাকরণের এক মাস পর রাজাইয়ার মতো অন্যান্য ব্যবসায়ীরা ডিজিটাল লেনদেনের জন্য পয়েন্ট অফ সেলস বা পিওএস মেশিন দোকানে বসান। এই ঘটনার জেরে রাতারাতি সংবাদ শিরোনামে উঠে এসে তেলেঙ্গানার এই গণ্ডগ্রাম। দক্ষিণ ভারতের প্রথম নগদহীন গ্রাম হিসাবে নজির গড়ে ইব্রাহিমপুর। এরপরই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। গত মার্চ মাস থেকে স্থানীয় অন্ধ্র ব্যাঙ্ক এই পিওএস মেশিন পিছু ১৪০০ টাকা চার্জ নিতে থাকে। রাজাইয়ার মতো ব্যবসায়ীরা বুঝে যান অনেক হয়েছে। রাজাইয়ের কথায়, ‘‘ ওই ফি ছিল একেবারে অবাস্তব। ব্যাঙ্কের কর্তারা কখনও আমাদের বলেননি এই মেশিন বসানোর জন্য টাকা দিতে হবে। উলটে তারা মেশিন বসাতে নানাভাবে উৎসাহ দিয়েছিলেন। কোনওরকম নির্দেশ ছাড়াই এই কাজ করা হয়েছে।’’ ব্যাঙ্কের এই মনোভাব বুঝতে পেরে ইতিমধ্যে ২ ব্যবসায়ী মেশিন ফেরত দিয়েছেন। বাকি ৯টি মেশিন বন্ধ। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে আচমকা এই কমিশনের উৎপাত শুরু হয় বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। মাসিক ভাড়ার পাশাপাশি লেভির ধাক্কাও সামলাতে হচ্ছিল। ডিজিটালে এগোতে গিয়ে ব্যাঙ্কের চার্জ এবং লেভির জন্য এখন তাদের ঢাকের দায়ে মনসা বিক্রির জোগাড়।
[ভিনধর্মে মেয়ের বিয়ে, মুসলিম পরিবারকে একঘরে করল মসজিদ কমিটিই]
তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষর পালটা দাবি গোটা বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েতকে আগেভাগে বোঝানো হয়েছিল। তারপরও এমন কথা বলার কোনও যুক্তি নেই। তবে যে নটি মেশিন ইব্রাহিমপুরে রয়েছে সেগুলির ভাড়া মকুব করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অন্ধ্র ব্যাঙ্ক। এই নিয়ে স্থানীয় সরপঞ্চও ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে। তাদের বক্তব্য, ব্যাঙ্ক যেসমস্ত কাগজে সই করিয়েছিল তা ইংরেজিতে ছিল। তেলেগু জানা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে যা বোধগম্য ছিল না। নোটবাতিলের পর ডিজিটাইজেশনের জন্য আদর্শ বিজ্ঞাপন ছিল এই ইব্রাহিমপুর। বিমুদ্রাকরণের এক বছরের মধ্যেই এই গ্রাম বুঝিয়ে দিল প্রশাসনিক দূরদর্শিতার অভাবে স্বপ্নের ফানুস এভাবে ফুটো হয়ে যায়।
The post ব্যাঙ্কের কমিশনের গুঁতো, ক্যাশলেস থেকে নগদে ফিরছে তেলেঙ্গানার গ্রাম appeared first on Sangbad Pratidin.