সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক যেন শীতল মস্তিষ্কের অপরাধী। কুকীর্তি ঘটানো এবং পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়াটাই যেন অভ্যেস। উত্তরপ্রদেশের বদায়ুন গণধর্ষণ কাণ্ডের (Badaun rape-murder) মূল অভিযুক্ত মহন্ত সত্যনারায়ণের কীর্তি দেখলে স্তম্ভিত হয়ে যেতে হয়। রবিবার সন্ধেয় কুকীর্তি ঘটানোর পর তড়িঘড়ি এলাকা ছাড়েনি ওই পুরোহিত। পরিকল্পনা করেছিল, দিন চারেক গা ঢাকা দেওয়ার পর পরিস্থিতি একটু থমথমে হলেই পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যাবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। শেষপর্যন্ত গণধর্ষণ ও খুনে অভিযুক্ত সত্যনারায়ণের শেষরক্ষা হল না। গ্রাম ছাড়ার পরিকল্পনা করে খোলস ছেড়ে বেরতেই তাঁকে ধরিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরাই। নৃশংস সেই ঘটনার চার দিনের মাথায় গ্রেপ্তার হল মূল অভিযুক্ত।
রবিবার বিকেলে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) বদায়ুনে ৫০ বছর বয়সি এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করার অভিযোগ ওঠে মন্দিরের পুরোহিত এবং তার দুই সাগরেদের বিরুদ্ধে। মহিলাকে গণধর্ষণের পর যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে মহিলার পাঁজর। রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন বদায়ুন জেলার উঘইতি গ্রামের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। সন্ধে গড়িয়ে রাত হলেও তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁকে বাড়ির দরজায় ফেলে দিয়ে চম্পট দেয় তিন অভিযুক্ত। পরিবারকে জানায়, ওই মহিলা মন্দিরের পাশে শুকনো কুয়োয় পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযুক্তদের আচরণে সন্দেহ হয় নির্যাতিতার ছেলের। তাঁর অভিযোগ ছিল, মহন্ত সত্যনারায়ণ (Mahant Satyanarayana) ও তার সাগরেদরা মায়ের উপর অকথ্য অত্যাচার করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, ধর্ষণের সময় মহিলার যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। ভারী পাথরের আঘাতে বুক ও পাঁজরের হাড়ও ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তপাতের জেরেই নির্যাতিতার মৃত্যু হয়।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েককে খুনের ষড়যন্ত্র! উড়ো চিঠির জেরে উত্তেজনা ওড়িশায়]
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তদের খুঁজছিল পুলিশ। মূল অভিযুক্ত ওই পুরোহিতকে ধরিয়ে দিলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ধুরন্ধর ওই ‘অপরাধী’ সহজে ধরা দেওয়ার পাত্র ছিল না। পুলিশের গতিবিধির উপর নজর রাখতে চারদিন সে লুকিয়ে ছিল ঘটনাস্থলের কাছেই। পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার রাতেই সে গ্রাম থেকে পালানোর ছক কষছিল। কিন্তু তার আগেই গ্রামবাসীরা তাকে ধরিয়ে দেয়। পুলিশ সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্ত মহন্ত সত্যনারায়ণের আসল বাড়ি বদায়ুনে নয়, বালিয়ায়। বছর সাতেক আগে বদায়ুনের ওই মন্দিরে পুরোহিত হিসেবে যোগ দেয় সে। সেখানেই থাকত। তার অতীত কোনও অপরাধের রেকর্ড আছে কিনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।