সুকুমার সরকার, ঢাকা: গণতন্ত্র নয় শরিয়ত। ধর্মীয় নিরপেক্ষতা নয় ইসলাম। এই দাবিতেই বাংলাদেশে ‘জেহাদ’ চালাচ্ছে একাধিক মৌলবাদী সংগঠন। তাদের নিশানায় রয়েছে মুক্তমনা লেখক থেকে শুরু করে বাকস্বাধীনতার পক্ষে থাকা অনেকেই। এবার লেখক শাহজাহান বাচ্চু হত্যার নেপথ্যেও উঠে আসছে এমনই এক জঙ্গি সংগঠনের নাম। তদন্তকারীরা মনে করছেন বাচ্চুর হত্যায় জড়িত আনসার-আল-ইসলাম। বাংলাদেশে আলকায়দার শাখা সংগঠন এই জঙ্গিদলটি।
[রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সময় লাগবে, বাংলাদেশের উদ্বেগ বাড়িয়ে জানাল মায়ানমার]
জঙ্গিদমন শাখার এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে আনসারের নামই উঠে আসছে। সাধারণত আক্রান্তদের জবাই করে আনসার জঙ্গিরা। তবে এক্ষেত্রে ব্লগারকে গুলি করা হয়। তাই কিছুটা সংশয় তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় জেএমবি জঙ্গিদেরও সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। ওই আধিকারিক আরও জানান, প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করা অনেকটাই বিপজ্জনক। এতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। তার উপর চলছে ব্যপক সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান। ফলে পদ্ধতি পালটে থাকতে পারে জঙ্গিরা। সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার হত্যাকাণ্ডে অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী আফসানা। অভিযোগপত্রে নাম রয়েছে চার সন্দেহভাজনের। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মুক্তমনা লেখক শাহজাহান বাচ্চু ‘শুদ্ধ চর্চা কেন্দ্র’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালাতেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হতো সেখানে। বামপন্থী বাচ্চু কখনওই ধর্মীয় গোঁড়ামিকে প্রশ্রয় দেননি। এনিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখতেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, তাঁর এই কাজেই হামলা চালায় মৌলবাদীরা। উল্লেখ্য, প্রায় তিন বছর আগে জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের অফিসে খুন হন দীপন। তিনিই মুক্তমনা লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশ করেছিলেন। ওই বছরেরই ফেব্রুয়ারিতে উগ্রপন্থীরা অভিজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করে। অভিজিতের পর ব্লগার নীলাদ্রি নিলয়, অনন্ত বিজয় দাস ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ওয়াশিকুর বাবুকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। হামলার নেপথ্যে আনসার বাংলা জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে।
[মাছ-ভাতকে এবার বিশ্বের বাজারে তুলে ধরছে রাজ্য সরকার]
The post বাংলাদেশে মুক্তমনা বাচ্চু খুনের নেপথ্যে জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলাম appeared first on Sangbad Pratidin.