shono
Advertisement

যে ৫ কারণে ‘নাম শাবানা’ আপনাকে দেখতেই হবে

অনেকের ধারণাতেই শহিদ শব্দের মাত্রা বদলাবে ‘নাম শাবানা’। The post যে ৫ কারণে ‘নাম শাবানা’ আপনাকে দেখতেই হবে appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:06 PM Mar 30, 2017Updated: 05:37 PM Dec 23, 2019

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময়ের গোপনে কিছু দাবি জমে ওঠে। সমসাময়িক শিল্প সচেতন বা অবচেতনেই হয়ে ওঠে তার মুখপত্র। নীরজ পাণ্ডের ‘নাম শাবানা’ যেন হয়ে উঠেছে সময় আর সময়ের দাবির সেই অলিখিত চুক্তিপত্র।

Advertisement

গল্পটি কী?

নীরজ পাণ্ডের ‘বেবি’ ছবিটি প্রায় সকলেই দেখেছেন। ভারতীয় এজেন্টদের দেশরক্ষার কাজ যেভাবে টানটান উত্তেজনায় উঠে এসেছিল পর্দায়, সিনেম্যাটিক সে ট্রিটমেন্ট মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল দর্শকদের। সে ছবিতেই এজেন্ট হিসেবে দেখা গিয়েছিল শাবানাকে(তপসি পান্নু)। কিন্তু কেন এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রোজেক্টে বেছে নেওয়া হয়েছিল আনকোরা একটি মেয়েকে? সেখানে যে সাহস দেখিয়েছিল সে, তাও তো চাট্টিখানি কথা নয়। সুতরাং অনুমান করা যায়, এজেন্টদের কাজে মেয়েটি একদা এমন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল, যে কারণে তাকে বাছা হয়েছে। সেই আগের গল্পটিই ‘নাম শাবানা’ গল্পের বিষয়। শাবানার এজেন্ট হয়ে ওঠার কাহিনিই এ ছবিতে।  চিত্রনাট্যকার-পরিচালক সুকৌশলেই সেখানে মিশিয়ে দিয়েছেন বহু সমসায়িক প্রসঙ্গ।

যে ক’টি কারণে নাম শাবানা দেখতে পছন্দ করবেন আপনি-

১) স্পিন-অফ গোত্রের সিনেমা বলিউডে অন্তত সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি। সেই হিসেবে এক নয়া অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে পারবেন দর্শক। ধরা যাক, কোনও একটি নাটক, সিনেমা বা প্রোগ্রাম ইতিমধ্যেই আছে। তার মধ্যে থেকেই কোনও এক চরিত্রের পূর্ববতী জীবন ফুটিয়ে তোলাই স্পিন-অফ ঘরানা। ‘নাম শাবানা’ সে গোত্রেরই ছবি। একে অবশ্য ‘বেবি’ ছবির প্রিক্যুয়েল বলা যায় না। কেননা ‘বেবি’ প্রোজেক্টিটি কেন নেওয়া হয়েছিল তার ইতিবৃত্ত এ ছবি নয়। এ ছবি জানাচ্ছে শাবানাকে কেন বেবি প্রোজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, সে বিষয়টি।

২) এ ছবির অন্যতম সম্পদ তপসি পন্নুর অভিনয়। এক সাধারণ মেয়ের অসাধারণ হয়ে ওঠার বহু গল্প অতীতেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু সমসময়ের দাবি মেনে এক তরুণী যেভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, প্রতিবাদ করেছে, সাহসী হয়েছে এবং সর্বোপরি দেশের কাজে নিজেকে মেলে ধরেছে, তা নমুনাস্বরূপ। হয়তো এই সময় এই আধুনিকতার আলোতেই দেখতে চায় এক তরুণীকে। এ দেশে নারীশক্তি তুলনা টানতে প্রায়শই সিনেমায় উঠে আসে দেবী দুর্গার অনুষঙ্গ। এখানে সেই চেনা অনুষঙ্গ কোথাও নেই। কিন্তু দর্শকের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না, আধুনিক সময় দেবী দুর্গাকে ঠিক কী রূপে প্রত্যাশা করে। সে চরিত্রে প্রাণ ঢেলে অভিনয় করেছেন তপসি পন্নু। মার্শাল আর্ট আয়ত্ত করা থেকে জীবনের নানা অনুভূতিতে যেভাবে তিনি নিজেকে মেলে ধরেছেন, তাতে এ চরিত্র বহুদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

৩) এ ছবিতে উঠে এসেছে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের প্রসঙ্গ। কোথাও আলাদা করে দাগিয়ে দেওয়া নেই। এসেছে কাহিনি নির্মাণের খাতিরেই। কিন্তু শুধু ভায়োলেন্স নয়, সে আগুনে পুড়েও নারী কীভাবে রুখে দাঁড়াতে পারে, তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ শাবানা। ইভ টিজিং থেকে ধর্ষণের মতো যে বিষয়গুলি খবরের শিরোনাম হয়ে ওঠে, যে খবরগুলি প্রতিনিয়ত আমাদের বিব্রত করে, এ ছবিতে এসেছে সে প্রসঙ্গও। তা হয়তো ছবির চরিত্রদের জ্বালিয়েছে, পুড়িয়েছে ছারখার করে দিয়েছে। কিন্তু বিনিময়ে যে উত্তরণে পৌঁছেছে চরিত্ররা তাই হয়তো বর্তমান সমাজের কাম্য।

৪) উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট এখনকার বহু কাজেরই অবশ্যম্ভাবী বিষয় হয়ে উঠেছে। এ ছবিতেও তার ব্যবহার হয়েছে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে। আসলে বহুল চর্চিত হলেও কখনও কখনও পুরো বিষয়টিই দেখার তারতম্যে ভুলভাবে উঠে আসে। সাহসী হওয়া, বোল্ড পদক্ষেপ কখনও নেহাতই স্টান্ট বা আক্ষরিকভাবে কিছু পোশাকি বিপ্লবের গণ্ডিতে মাথা কোটে। এ ছবি সন্তর্পণে সে চেনা ফাঁদ কেটে বেরিয়ে এসেছে। এসে দেখিয়েছে এমপাওয়ারড উইমেন বলতে ঠিক কী বোঝায়। সিনেমা সময়ের ফ্যাশনকে, যাপনকে প্রভাবিত করে। এ ছবির পর যদি কোনও মা-বাবা কন্যাসন্তানটিকে শাবানার মতো করে গড়ে তুলতে চান, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

৫) একরৈখিক ধর্মীয় মতবাদ এ সময়ে যে কোনও কারণেই হোক মাথাচাড়া দিয়েছে। শুধু দেশ কেন দেশের সীমানা পেরলেও সে ছবি স্পষ্ট। এ ছবি যেন নিরুচ্চারেই সেই গোঁড়ামির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। নাম শাবানা খান। দেশের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা রক্ষার কাজে সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষত যে কোন অনায়াসে বদলে ফেলেছে দেশরক্ষার জিদে। ফলত তার হাত থেকে বেরনো বুলেট যখন শত্রুর বুকে বিঁধে যায়, তখন কোথাও বলে দেওয়া না থাকলেও মনে পড়তে বাধ্য, সবার উপরে মানুষ সত্য। মনে পড়ে যায় নিহত জঙ্গি সইফুল্লাহর বাবার মুখটি। যিনি দেশদ্রোহী ছেলের লাশটিও নিতে স্বীকার করেননি। শাবানা তার প্রেম থেকে প্রতিজ্ঞায় প্রতি পদে দেখিয়ে দিয়েছে ধর্মের মর্মকথাটুকু। তা এ কারণেই শিল্পিত যে, তা কখনওই ছবিটির অ্যাজেন্ডা হয়ে ওঠেনি।  সংশ্লেষ, বহুত্ববাদের বহু চর্চিত শব্দরাশিকে পিছনে ফেলে নির্জলা আবেগ কোথাও আমাদের গ্রাস করে। সেখানেই হয়তো চিত্রনাট্যকার-পরিচালকের সার্থকতা।

আর মনোজ বাজপেয়ী বা অক্ষয় কুমার, অনুপম খেরদের মতো তুখোড় অভিনেতারা ছবিকে যেভাবে গতি দিয়েছেন তাও উল্লেখ্য। দেশের নিরাপত্তা রক্ষীদের যে রূপ আমরা দেখতে অভ্যস্ত, তার বাইরেও যে বিপুল কর্মকাণ্ড, অসংখ্য মানুষের আত্মবলিদান, তা আমাদের আন্দোলিত করবে। হয়তো অনেকের ধারণাতেই শহিদ শব্দের মাত্রা বদলাবে ‘নাম শাবানা’।

ছবি- নাম শাবানা

পরিচালক- শিবম নায়ার

কাহিনি,চিত্রনাট্য, সংলাপ- নীরজ পান্ডে

অভিনয়- অক্ষয় কুমার, তপসি পান্নু, মনোজ বাজপেয়ী, অনুপম খের প্রমুখ  

The post যে ৫ কারণে ‘নাম শাবানা’ আপনাকে দেখতেই হবে appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার