shono
Advertisement

বাঁধুনিতেই দুর্বলতা ‘সিতারা’র, ছবি তেমন উপভোগ্য হল কই?

সিনেমাহলে যাওয়ার আগে জেনে নিন কেমন হল ছবিটি। The post বাঁধুনিতেই দুর্বলতা ‘সিতারা’র, ছবি তেমন উপভোগ্য হল কই? appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:21 PM Jul 20, 2019Updated: 09:19 PM Jul 20, 2019

বিশাখা পাল: ওরা শরীর বেচে খায়। তাই মূল্য ওদের যৎসামান্য। এমনকী ভিটেমাটির অধিকারও নেই। স্বামীরা ঠকায়, যাদের এরা ভালোবাসে তারা সবাই ওদের ঠকায়। কারণ ওরা যে দেহপসারিণী। ওদের ভালবাসতে নেই। শুধু ভোগ করতে আছে। এই ‘ওদের’ গল্প নিয়েই আশিস রায়ের ছবি ‘সিতারা’।

Advertisement

গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম সিতারা। ওপার বাংলার মেয়ে। ভাগ্যের ফেরে এপারে এসে পড়েছে। সীমান্তের গ্রামের এক চরে তার ঘর। স্বামী তাকে বেচে দিয়েছে মহাজনের কাছে। সেই মহাজনের ‘কাজ করে দেয়’ মেয়েরা। এই মেয়েরাই আবার মহাজনের ভোগ্যা। কোনও মেয়ে কাজ চাইতে এলে তাকে ভোগ করে মহাজন। তারপর তাকে জিনিসপত্র পাচারের কাজে নামায়। সিতারাও ব্যতিক্রম নয়। স্বামী তাকে বেচে দিয়েছে মহাজনের কাছে। অতএব কর্তার ইচ্ছায় কর্ম। নিজের আর তার ‘বডিগার্ড’ দিলুর পেট চালাতে কাপড় খোলে সে।    

সিতারার চরিত্রে রাইমা সেন নজর কেড়েছেন। কিন্তু তাঁর গ্ল্যামার চেষ্টা করেও লোকাতে পারেননি পরিচালক। বিশেষত প্রথম দিকে গাঁয়ের বধূর সাজে রাইমাকে মেনে নিতে বেশ কষ্টই হয়। এছাড়া বাকি চরিত্রগুলি চিত্রায়ণেও দুর্বলতার ছাপ স্পষ্ট। তবে কবীর মহাজনের ভূমিকায় মুগ্ধ করছেন নাসের। তাঁর অভিনয় প্রতিভা নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। রাইমা সেন আর সুব্রত সেনকেও তাঁর কাছে ম্রিয়মান লেগেছে। তবে রাইমার উপর নাসেরের জোর খাটানোর দৃশ্যগুলি একবার হলেও ভাবাবে দর্শককে। নাসিরের উপর রাগ আর বিতৃষ্ণা মেশানো অনুভূতি হতেই পারে। বরং হওয়াটাই স্বাভাবিক।

[ আরও পড়ুন: ফিরল সিম্বা, দেখা হল সেই নস্ট্যালজিয়ার সঙ্গে ]

এখানেই ছবির প্রাপ্তি। নাসেরের অভিনয়ের দৌলতে অনেকটাই উতরে গিয়েছে সিতারা। রাইমা বা সুব্রত এখানে গৌণ। ছবির সেট ডিজাইনেও নজর দেওয়ার প্রয়োজন ছিল পরিচালকের। তবে সবচেয়ে দুর্বল ছবির সংলাপ। দুই বাংলার ভাষা একসঙ্গে চিত্রনাট্যে রাখতে গিয়েই ঘেঁটে ফেলেছেন পরিচালক। যদি মেনেও নেওয়া যায় ওপার বাংলার মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় বাঙাল ভাষায় কথা বলত সিতারা, আর এপার বাংলার মানুষের সঙ্গে কথা বলার সময় এখানকার ভাষায়, তাতেও গলদ থাকে। কোথাও কোথাও এই নিয়মের বিরুদ্ধাচরণ কানে খুব একটা মধুর ঠেকে না। এছাড়া একজন মানুষের মুহূর্তের মধ্যে ভাষা বদলানো সহজ ব্যাপার নয়। অথচ সিতারাকে তাইই করতে হয়েছে।

দেহপসারিণী সিতারার জীবনে প্রেম যে আসেনি, তা নয়। স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর আর কবীর মহাজনের তাকে ভোগ করার পরও ভালবাসা ছিল তার মনে। স্থানীয় নেতা মানব সরকারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কিন্তু সেখানেও ধাক্কা খায় সে। শেষে অবশ্য একটা টুইস্ট রয়েছে গল্পে। সিতারার প্রতিবাদ আর তার প্রেম খুঁজে পাওয়ার গল্প। কিন্তু এমন টানটান ঘটনাও দর্শক টানতে পারবে না শুধুমাত্র চিত্রনাট্যের দুর্বলতার কারণে। আবুল বাশারের উপন্যাস ‘ভোরের প্রসূতি’ যাঁরা পড়েছেন, তাঁদের কল্পনার সঙ্গে ছবির দৃশ্য মিলে গেলেই বরং আশ্চর্য হতে হবে।

তবে দুর্বল সংলাপ আর খেই হারানো চিত্রনাট্যের মাঝে একটাই আশ্বাসের বিষয় ছবির গান। কালিকাপ্রসাদ আর ইমন সাহার সুরে প্রাণ পেয়েছে ছবির অনেক দৃশ্যই। ছবির কিছু অংশের শুটিং হয়েছে মেখলিগঞ্জে। তাই প্রাকৃতিক শোভা থেকে বঞ্চিত হবে না দর্শক। কিন্তু ঘোলে কি আর দুধের স্বাদ মেটে? আশিস রায়ের পরিচালিত ‘সিতারা’-র অনেকটা সেই ঘোলের মতোই লাগল।

[ আরও পড়ুন: সবার জন্য শিক্ষা, অধিকারের নয়া পরিভাষা ‘সুপার ৩০’]

The post বাঁধুনিতেই দুর্বলতা ‘সিতারা’র, ছবি তেমন উপভোগ্য হল কই? appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement