শুভঙ্কর বসু: কালীপুজোয় বাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ হবে কি না তা নিয়ে আপাতত আদালতের রায়ের অপেক্ষায় বাজি ব্যবসায়ী থেকে আমজনতা। এদিকে খাতায়-কলমে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি না করলেও ইতিমধ্যেই করোনা (Coronavirus) পরিস্থিতিতে বাজি না পোড়ানোর আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার। এরপরই বিষয়টি বিবেচনার জন্য বাজি ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। যৌথভাবে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে (Mamata Banerjee) এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছে। চিঠি পাওয়ার পরই রাজ্যের তরফে সমিতির নেতাদের নবান্নে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে খবর। আগামিকাল বৃহস্পতিবার মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে এ ব্যাপারে তাঁদের বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ী সমিতির তরফে আতসবাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ না করার আবেদন জানানোর পাশাপাশি বাজি শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানানো হবে বৈঠকে। আতশবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায় বলেন, “পুরোপুরি নিষিদ্ধ না করে বাজি পোড়ানোর সময় বেঁধে দিক রাজ্য। তাছাড়া এতে যারা ক্ষতির মুখে পড়বে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থার আবেদনও আমরা সরকারের কাছে রাখব।”
[আরও পড়ুন: বিজেপির বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে ধুন্ধুমার, গ্রেপ্তার শতাধিক কর্মী]
যদিও বাজির উৎপাদন, বন্টন থেকে বিক্রিতে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতে একজোট হয়েছেন পরিবেশকর্মী থেকে চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি, মারণ কোভিড শরীরের ঠিক যেখানে থাবা বসায় বাজির ধোঁয়া সেই ফুসফুসের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। ফলে এবছর দেদার বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা না গেলে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। এই সতর্কবার্তার কথা উল্লেখ করে হাইকোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। যার একসঙ্গে শুনানির কথা বৃহস্পতিবার। এবার অবশ্য সরকারিভাবে বাজি বাজার বসছে না। তবে ফি বছর দুর্গাপুজোর পর পরই বাজি পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এবছর এখনও তা না হওয়ায় নিষিদ্ধ বাজি বিক্রির সংখ্যা বিপুলভাবে বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। যদিও সার্বিকভাবে বাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে বছর দুয়েক আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে শীর্ষ আদালত।
৩ খুদের দায়ের করা মামলায় বছর দুয়েক আগেই ‘গ্রিন ক্র্যকার’ ছাড়া সমস্ত ধরণের বাজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি দীপাবলী ও বিভিন্ন উৎসবের সময় বাজি পোড়ানোর সময় নির্ধারণ করার পাশাপাশি বাজির দূষণ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রকে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশও দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাজির উপর নিয়ন্ত্রণ আনা যায়নি। এবছর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আর এই পরিস্থিতিতে হাই কোর্ট কী সিদ্ধান্ত নেয় মূলত তার উপরই বাজি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের বাজি পোড়ানোর আনন্দের বিষয়টি নির্ভর করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: লকডাউনে হাজার কিমি পেরিয়ে কলকাতায় অন্তসত্ত্বা, হ্যাম রেডিওর চেষ্টা ফিরে পেলেন পরিবার]