সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাম জমানার ক্ষত সারিয়ে ঋণের বোঝা ক্রমশ কমাচ্ছে রাজ্য সরকার! শুক্রবার বিধানসভায় তথ্য-সহ রিপোর্ট তুলে ধরলেন ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বাম জমানার শেষ বছর থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত শতাংশের হিসাব বিধানসভায় তুলে ধরলেন তিনি। যেখানে দেখানো হয়েছে প্রতি বছর ধাপে ধাপে কীভাবে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমিয়েছে রাজ্য।
রাজ্যের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ও ঋণের পরিমাণের নিরিখে হিসাব তুলে ধরে বিধানসভায় মন্ত্রী বলেন, ২০১১ সালে ঋণের পরিমাণ ছিল এক লক্ষ ৮৭ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে, রাজ্যের মোট উৎপাদন অর্থাৎ জিএসডিপি ছিল চার লক্ষ ৬০ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। শতাংশের হিসাবে তা ৪০.৬৫। ২০২২-’২৩ ও ২০২৩-’২৪ সালে এই শতাংশ ছিল যথাক্রমে ৩৭.৪৯ ও ৩৭.০৮। ২০২৪-’২৫ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬.৮৮ শতাংশ। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, নেওয়ার সুযোগ থাকলেও সম্প্রতি ৩৬ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা নেয়নি রাজ্য। তিনি এভাবে সরাসরি বিরোধীদের অপপ্রচারের জবাব দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: উপত্যকায় অশান্তির জের! BSF-এর প্রধান ও উপপ্রধানকে সরাল কেন্দ্র]
এদিন সরকারি ঋণের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পেশ হয় বিধানসভায়। ১৬৯ ধারা অনুযায়ী এটি করায় কেন তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে বলে কটাক্ষ করেন বিজেপির বিধায়ক অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী। তবে তাঁকে তথ্য ও যুক্তিতে পাল্টা আক্রমণ করেন তৃণমূলের দেবব্রত মজুমদার ও মন্ত্রী নিজে। অশোকবাবু এটাও বলেন, এই প্রস্তাবকে আনতেই হবে। কিন্তু এত কমদিনের সময়ে কেন? এক বছর আগে তো কেন্দ্র চিঠি দিয়েছে। দেবব্রত মজুমদার কেন্দ্রের ঋণ ও রাজ্যের ঋণের তুলনা টানেন। দাবি করেন, কেন্দ্রের ঋণ সবমিলিয়ে এক কোটি ৭০ লক্ষ কোটি টাকার মতো। মোট জিডিপি-র সঙ্গে শতাংশের হিসাবে তা ৫৮। অন্যদিকে, রাজ্যের ক্ষেত্রে তা ৩৮ শতাংশের কম। মূলধনী খরচ ২০১১ সালে ছিল ২৭০০ কোটি টাকা আর এখন রাজ্যে এই খরচ ৩২ হাজার কোটি টাকা।
[আরও পড়ুন: বন্দুক উঁচিয়ে কৃষককে হুমকি! অবশেষে জামিন পেলেন পূজা খেদকারের মা]
আলোচনায় অংশ নেন তৃণমূলের নির্মল ঘোষ, মহম্মদ আলি, বিজেপির শঙ্কর ঘোষ, নরহরি মাহাতো, নীলাদ্রিশেখর দানা, বিশ্বনাথ কারক প্রমুখ। নতুন প্রস্তাবের ফলে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরবিআই-কে দায়িত্ব দেওয়া হল, যেটা যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতা। গোয়া, নাগাল্যান্ড, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও দু-একটি রাজ্যই তাদের বিধানসভায় এই প্রস্তাব পাস করিয়েছে। চন্দ্রিমার প্রশ্ন, ২০০৬ সালে গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিস অ্যাক্ট হলেও রাজ্যগুলিকে চিঠি দিতে এতদিন লাগল কেন?