ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের (Mamata Banerjee) তৃতীয় মন্ত্রিসভার কারা থাকছেন? সেই তালিকা সামনে আসতেই দেখা গেল, বাদ পড়েছেন একাধিক প্রাক্তন। যেমন নির্মল মাজি, তাপস রায়, মন্টুরাম পাখিরা, তপন দাশগুপ্ত, অসীমা পাত্র, গিয়াসউদ্দিন মোল্লারা, এমনই বেশ কয়েকজন। যাঁরা ২০১৬ সালে মমতার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পেয়ে ৫ বছর ধরে তা ভালভাবেই সামলেছিলেন। তবে এবার নতুনদের ঠাঁই করে দিতে গিয়ে বাদ পড়েছেন তাঁরা। স্বাভাবিকভাবেই একটু মন খারাপ। তবে প্রাথমিকভাবে খারাপ লাগলেও প্রত্যেকেই মুখ্যমন্ত্রী তথা তাঁদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর উপরই আস্থা রেখেছেন সকলে।
বরাহনগর থেকে এবারও জিতেছেন তাপস রায় (Tapas Roy)। আগেরবার তিনি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সেইসঙ্গে ছিলেন বিধানসভার উপ মুখ্যসচেতক। মন্ত্রী হিসাবে ভাবমূর্তি স্বচ্ছ। তাঁকে কেন এবারের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হল, তা নিয়ে অনেকের বিস্ময়। নির্মল মাজির (Nirmal Maji) বিরুদ্ধে একটা সময় স্থানীয়দের মধ্যে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার কারণ নিয়ে অনেকেই সেদিকে আঙুল তুলেছেন। তবে মূল কারণ অন্য বলে মনে করছে জেলার একটা বড় অংশ। এই জেলা থেকেই কর্মঠ, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ মুখ পুলক রায়কে এবার সুযোগ দিয়েছেন মমতা। ডাক্তার নির্মল মাজি আগেই সুযোগ পেয়েছেন মন্ত্রিসভায়। তাই এবার তিনি বাদ পড়লেন। প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নাম নেই মন্ত্রিতালিকায়। তাঁকে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ঝগড়ার মাঝে বন্দির কান কামড়ে ছিঁড়েই ফেলল আরেকজন!]
প্রতিটি জেলা থেকে ঠিক এভাবেই সংগঠন আর প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ প্রতিবার দিয়ে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ক্যাবিনেট সম্প্রসারণের পরিস্থিতি তৈরি হলে আরও একাধিক মুখ সামনে আসতে পারে। হুগলি থেকে যেমন তপন দাশগুপ্ত আর অসীমা পাত্র, প্রাক্তন দুই মন্ত্রীই বাদ। অসীমা বা তপনের অবশ্য তাতে কোনও খেদ নেই। অসীমার বক্তব্য, “দিদি সুযোগ দিয়েছেন বারবার। যখন মনে করেছেন মন্ত্রিত্বে এনেছেন। আবার যখন দরকার পড়বে অন্য কাজ দেবেন। তাঁর সিদ্ধান্তই শিরোধার্য।”
[আরও পড়ুন: অর্থদপ্তরে সেই অমিত মিত্রই, মমতার তৃতীয় মন্ত্রিসভায় দেখা যাবে একাধিক নতুন মুখ]
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরার জায়গায় এবার মন্ত্রিত্বে এনে মমতা সুন্দরবন উন্নয়নে সুযোগ দিতে পারেন সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরাকে। একইভাবে গিয়াসউদ্দিন মোল্লাও এবারের মন্ত্রিসভায় সুযোগ পেলেন না। অন্যদিকে, বিধানসভায় সরকারি দলের মুখ্য সচেতককে হবেন, তাও এখনও ঠিক হয়নি। তবে এখনও ভোট হয়নি মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে। সেখানে আর সমশেরগঞ্জে দুই বাম জোটের প্রার্থীর মৃত্যুতে ভোট ১৬ মে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ওই দুই কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রয়েছে। জঙ্গিপুর থেকে জিতে প্রাক্তন মন্ত্রী হয়েছিলেন জাকির হোসেন। বোমা বিস্ফোরণে পা হারিয়েও তিনি প্রচারে বেরিয়েছেন। তবে ভোট স্থগিত হওয়ায় তাঁর কেন্দ্রের ফলাফল সামনে আসেনি। তাই আপাতত তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ পড়তে হল। তবে সেই জেলায় ইতিমধ্যে দু’জনকে মন্ত্রী করেছেন মমতা।