সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শত হাতিয়ার, শত সাবধানতা সত্ত্বেও করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) তৃতীয় ধাক্কা এড়াতে পারবে না ভারত। অক্টোবর নয়, আগামী ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যেই দেশে ফের ভয়াবহ রূপ নিয়ে আছড়ে পড়বে মারণ ভাইরাসের আরেকপ্রস্ত ঢেউ। এমনই সাবধানবাণী দিলেন এইমসের (AIIMS) প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। এর নেপথ্যে রয়েছে মূলত ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট, যা কোভিড-১৯ (COVID-19) অন্যান্য ধরন ডেল্টা, আলফার চেয়ে অনেক বেশি মারণ ক্ষমতাসম্পন্ন। আর তা নিয়েই উদ্বেগ বেড়েছে। এই নতুন জীবাণু ফের কতটা ক্ষতি করতে পারে, তার কোনও আন্দাজ সেভাবে মিলছে না এখনও। এইমস প্রধানের পরামর্শ, অতি দ্রুত দেশবাসীর টিকাকরণ এর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য খানিকটা অনুকূল হতে পারে।
বেশ কয়েকমাস লকডাউনের পর রাজধানী দিল্লিতে এবার আনলক পর্ব চলছে। শুরুতেই অনেকটা শিথিল করে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের মত, এখানেই লুকিয়ে বিপদ। এইমস প্রধান ডক্টর গুলেরিয়ারও একই মত প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ”লকডাউনের পর এই যে আনলক পর্ব, তাতেই কোভিড বিধি একধাক্কায় ভেঙে ফেলার আশঙ্কা থাকে। আমরা প্রথমবারের থেকে কিছুই যে শিখিনি, দ্বিতীয় ধাক্কাতেই তা বোঝা গিয়েছে। ফলে আশা করা যায় না যে করোনার তৃতীয় ধাক্কা এড়াতে সকলেই খুব সাবধানতা অবলম্বন করবেন। তবে অবশ্যই যথাযথ বিধি মেনে ভিড়, জমায়েত এড়িয়ে চলতে পারলে অনেকটাই সহজ হবে এর মোকাবিলা করা।” এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এমনই জানিয়েছেন ডক্টর গুলেরিয়া।
[আরও পড়ুন: Corona Virus: দেশের কোভিড গ্রাফে ফের অস্বস্তি, দৈনিক সংক্রমণ কমলেও বাড়ল মৃত্যু]
ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্টকে (Delta-Plus variant) রুখতে কোন পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হতে পারে? এইমস প্রধানের মত, ”যথাযথ জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে বুঝতে হবে, ঠিক কেমন চরিত্র ভাইরাসের এই নয়া রূপের। মনোক্লোনাল চিকিৎসা কি এতে প্রযোজ্য হবে? সেটাও দেখার বিষয়। সবচেয়ে আগে যেটা করা প্রয়োজন, সেটা হল দেশের গবেষণাগারগুলিতে যাতে ঠিকমতো সব পরীক্ষা হয়, সেদিকে জোর দেওয়া। এই ধাক্কা সামলাতে প্রয়োজন আরও দক্ষ কোভিড যোদ্ধাদের। কারণ, এটা এক নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।” তিনি আরও মনে করেন, টিকাকরণ (Vaccination) একটা বড় চ্যালেঞ্জ। দ্রুত দেশবাসীর টিকা বড়ই প্রয়োজন। ইতিমধ্যে দেশের মাত্র ৫ শতাংশ লোকের টিকাকরণ হয়েছে, যা মোটেই সন্তোষজনক নয়। এই হার না বাড়ালে আগামী দিনগুলোয় অনেকেরই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে বলে মনে করছেন এইমস প্রধান। অর্থাৎ তৃতীয় ধাক্কার সঙ্গে যুঝতে টিকাকরণে জোর দিচ্ছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: গুজব হইতে সাবধানবাণীই সার! জগৎ জুড়ে বারবার ছড়ায় এমন ভুয়ো খবরগুলি]
এদিকে, করোনাবিধি যথাযথভাবে পালিত হয়, তা নিয়ে শনিবার রাজ্যগুলিকে নোটিস পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা। রাজ্যের মুখ্যসচিবদের চিঠি দিয়েছেন তিনি। তাতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘টেস্ট-ট্র্যাক-ট্রিট-ভ্যাকসিনেশন’ চতুষ্পদী সমীকরণ ঠিকমতো মেনে চলতে হবে এবং কোথাও যাতে এর অন্যথা না ঘটে, তা দেখতে হবে।