shono
Advertisement

প্রতিমা নয়, করোনা আবহে এবার নমো নমো করে ঘটেই পুজো সারবে বেহালার এই ক্লাব

আগেভাগেই সতর্ক হয়ে দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
Posted: 08:37 PM Oct 09, 2020Updated: 10:10 PM Oct 09, 2020

সুলয়া সিংহ: উৎসব, আড়ম্বর আগে নাকি মানুষের জীবন? পুজোর দিন দশেক আগেও বারবার ঘুরে ফিরে উঠে আসছে প্রশ্নটা। নেপথ্য কারণ অবশ্যই রাজ্যের সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ। সেই আগুনে আবার ঘি ঢালার কাজ করছে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব। পুজোর শপিংয়ে বেরিয়ে মুখের মাস্ক নেমে আসছে থুঁতনিতে। নতুন পোশাক গায়ে তোলার আনন্দে যত্রতত্র স্পর্শ করে হাত ধোয়ার কথা মনেই থাকছে না। ধর্মতলা কিংবা গড়িয়াহাট অথবা হাতিবাগানের ভিড়ই বলে দিচ্ছে পুজোয় তিলোত্তমার ছবিটা ঠিক কেমন হবে। কিন্তু করোনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুজো পরিক্রমায় বেরিয়ে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনুন, এমনটা চায় না বেহালার ইউনাইটেড ফ্রেন্ডস ক্লাব (Behala United Friends)। তাই আগেভাগেই সতর্ক হয়ে দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। প্রতিমা নয়, এবার নিয়মরক্ষার্থে হবে ঘটপুজো।

Advertisement

গতবারের ইউনাইটেড ফ্রেন্ডসের পুজো

ডায়মন্ড হারবার রোড বরাবর ঠাকুরপুকুরের দিকে যেতে ডান হাতে পড়ে বেহালা ইউনাইটেড ফ্রেন্ডস। থিমের চাকচিক্য নয়। এই পুজোর ইউএসপি একতা। পাড়ার লোকজন তো বটেই, পাশের পাড়ার আট থেকে আশিও আড্ডা আর অঞ্জলি দিতে এই মণ্ডপেই ভিড় জমান। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী- পুজোর তিনদিন ভোগ খাওয়ার জন্য রীতিমতো লাইন পড়ে যায় মণ্ডপের সামনে। লাইটিং, মিউজিক, খাওয়া-দাওয়া হইহুল্লোড়ে প্রতিবারই রাতভর জমজমাট থাকে গোটা এলাকা। ৫০ পেরিয়ে এবার ৫১ বছরে পা দিচ্ছে পুজো। কিন্তু একরাশ বিষন্নতা নিয়েও করোনা (Coronavirus) আবহে কঠিন সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেলেছেন উদ্যোক্তারা। ছোট মঞ্চ, মাথা ঢাকা প্যান্ডেল। আর মঞ্চের উপর পাঁচটি ঘট। ব্যস, অঞ্জলি থেকে সন্ধি পুজো, দেবীবরণ থেকে বিসর্জন- এবারের মতো সবই উহ্য। বন্ধ থাকবে মণ্ডপ চত্বরও। তবে উৎসবের আমেজটা ধরে রাখতে পাড়াজুড়ে মাইক বাজবে। যেখান থেকে ভেসে আসবে, অঞ্জলি  কিংবা সন্ধিপুজোর মন্ত্র। ইচ্ছে হলে যাতে বাড়ি বসেই অঞ্জলির মন্ত্রোচ্চারণ করে মায়ের আরাধণা করতে পারেন এলাকার বাসিন্দারা।  

গত বছরের প্যান্ডেলের লাইটিং

পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা অয়ন দত্ত বলছিলেন, “মন তো ভীষণই খারাপ। কিন্তু করোনা আবহে এটাই মনে হয় সঠিক সিদ্ধান্ত। এই কঠিন সময়ে যেমন চাঁদাও চাওয়া যায় না, তেমনই রাজ্যে করোনায় মৃত্যুমিছিলের মাঝে আনন্দ-উৎসব করতেও কোথায় যেন সংকোচ হয়। তাই ভেবেছি এবারটা নাহয় ঘট পুজোই হল। পুজোর জন্য সামনে তো সব বছরগুলোই পড়ে রয়েছে। তখন আবার মেতে উঠব। আর বাড়ি সবেই মাইকে মন্ত্রোচ্চারণ শুনেই মানুষ পুজো উপভোগ করতে পারবেন।”

পুজো মণ্ডপের হইহুল্লোড় এবার আর চোখে পড়বে না

বলাবাহুল্য তাঁদের এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সমর্থন জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উৎসবের মরশুমে সংক্রমণ রুখতে এই ছোট্ট পদক্ষেপও যদি কাজে দেয়, সেটাই হবে পুজোর সবচেয়ে বড় উপহার। তাঁদের দেখে যদি অন্যরাও এবছরটা জাঁকজমক থেকে বিরতি নেয়, তাহলেই আক্ষরিক অর্থে সমাজের পাশে দাঁড়ানো হবে বলে মনে করছেন অয়ন দত্ত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement