অর্ণব আইচ: ৬ বছর আগে পুরভোটের (Kolkata Civic Polls) দিন এখানেই চলেছিল গুলি। পড়েছিল বোমাও। তাতে আহত হয়েছিলেন এক পুলিশ অফিসার। রবিবার মধ্য কলকাতার গিরিশ পার্ক এলাকার সিঙ্গিবাগান সুনশান। কিন্তু এলাকার মানুষের মধ্যে রয়ে গিয়েছে সেই ভয়ংকর স্মৃতি। সেই আতঙ্ক না থাকলেও রয়েছে চাপা উত্তেজনা। গোয়েন্দা দপ্তর লালবাজারকে জানিয়েছিল, এবার পুরভোটে গিরিশ পার্কের ওই অঞ্চল শান্তিপূর্ণই থাকবে। ছিলও তাই। যদিও সিঙ্গিবাগানের ওই ঘটনাস্থলে ছিল পুলিশ পিকেট। নতুন করে যাতে এলাকায় গোলমাল না হয়, সেদিকে কড়া নজর ছিল ডিউটিতে থাকে দুই মহিলা পুলিশকর্মী সহ পুলিশ টিমের।
২০১৫ সালের এপ্রিলে পুরভোটের বিকেলে মধ্য কলকাতার ২৪ ও ২৫ নম্বর জুড়ে ঘুরতে শুরু করেছিল বাইকবাহিনী। তাদের কাছে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা। বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে গিরিশ পার্কের সিঙ্গিবাগান ফোয়ারার কাছে জড়ো হয় বাইকবাহিনী। প্রথমে এক কংগ্রেস কর্মীর দোকান তারা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় গিরিশ পার্ক থানার বাহিনী। প্রথমে বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। এর পর পুলিশকে লক্ষ্য করেই চালায় গুলি। আহত হন গিরিশ পার্কের তৎকালীন সাব ইন্সপেক্টর জগন্নাথ মণ্ডল। তাঁর বুকে গুলি লাগে।
[আরও পড়ুন: KMC Election: পুরভোটের দিন অন্য মেজাজে ফিরহাদ হাকিম, মিশে গেলেন বিরোধীদের মাঝে]
এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে মধ্য কলকাতার একসময়ের ত্রাস গোপাল তিওয়ারির উপর। তাঁকে ভিনরাজ্য থেকে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। পরে তিনি বেকসুর খালাস হন। গোপাল তিওয়ারির স্ত্রী কামিনী তিওয়ারি এবার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী। যে অঞ্চলে ঘটনাটি ঘটেছিল, এবার সেই ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রাজেশ সিং। এদিন সকাল থেকেই তিনি এলাকায় ঘুরে নজর রাখেন, যাতে এলাকায় কোনও অশান্তি না হয়। ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরেই ভোটকেন্দ্র। সেখানে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।
এলাকার বাসিন্দা বিহারীলাল শর্মা জানান, এখন আর আতঙ্ক কীসের? সকাল থেকে কোনও গোলমালও নেই। আগের বছরের মতো বাইকবাহিনীও চোখে পড়েনি তাঁদের। তবুও ভাবনা হয়। ছেলেরা রাস্তায় আছে। তাদের যেন সমস্যা না হয়। অন্য বাসিন্দা শকুন্তলা দেবী জানান, প্রথমে ভাবছিলেন কী অবস্থা থাকবে। তবে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোনও গোলমাল না দেখে নিশ্চিন্ত হন তাঁরা। বিজয় সিং ছোটবেলা থেকে মানুষ সিঙ্গিবাগানেই। প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছে যাওয়া ওই ব্যক্তির দাবি, এই অঞ্চলটি শান্ত থাকলেও আশপাশের ওয়ার্ড থেকে গোলমালের খবর তাঁদের কানে এসেছে। তাই এলাকায় যে চাপা উত্তেজনা থাকবে, তাতে আর সন্দেহ কী? তবুও এলাকায় পুলিশ পিকেট রয়েছে। তাই তাঁরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত।