ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: অ্যাডিনো আবহে নিউমোনিয়ার করাল থাবা। রাজ্যে ফের শিশুমৃত্যু। শুক্রবার রাত থেকে বি সি রায় হাসপাতালে এখনও প্রাণ গিয়েছে তিনজনের। প্রত্যেকেই জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ নিয়ে ওই হাসপাতালে ভরতি হন।
বি সি রায় হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত থেকে মৃত্যু হয়েছে তিন খুদের। তাদের মধ্যে একজন দমদমের বাসিন্দা। রায়ান গাজি নামে ওই শিশুটি মাত্র ১১ মাস বয়সি। হাতিয়ারার বাসিন্দা আরাধ্যা চট্টোপাধ্যায়ের বয়স মাত্র ২ মাস ১৫ দিন। নদিয়ার কল্যাণীতে প্রাণ গিয়েছে মাসছয়েকের আরও এক শিশুর। প্রত্যেকেই জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছিল। তবে এদের কারও শরীরে অ্যাডিনো ভাইরাস বাসা বেঁধেছিল কিনা, তা জানা যায়নি। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত রাজ্যে চারটি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল। চারটি শিশুরই বয়স ২ বছরের কম। তারা বি সি রায় হাসপাতালে ভরতি ছিল।
[আরও পড়ুন: সুপারি নিয়ে বিষ্ণুপুরের তৃণমূল নেতাকে খুন, জলপাইগুড়ি থেকে গ্রেপ্তার শার্প শুটার]
রাজ্য প্রশাসনের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, ‘‘বর্তমানে শিশুদের মধ্যে যে সংক্রমণ চলছে এটি আদতে মরশুমি সমস্যা। বিগত দু’বছর করোনা সংক্রমণের জন্য বিষয়টি তেমন বোঝা যায়নি। এখন করোনার জায়গা নিয়েছে অ্যাডিনো বা অন্যান্য শ্বাসকষ্টের ভাইরাস। তবে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ বা দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে সংক্রমণ যেমন কমছে, তেমনই রেফারের সংখ্যাও কমেছে।’’
গত কয়েকদিনের তুলনায় তাপমাত্রা খানিকটা বাড়ায় ভরসা পাচ্ছেন চিকিৎসক ও ভাইরোলজিস্টরা। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জয়দেব রায়ের কথায়, ‘‘তাপমাত্রা বাড়লে রোগের সংক্রমণ কমে। আশা করা যায়, এবার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’ তাঁর আশা, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘শীতে ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ে। আবার তাপমাত্রা বাড়লে ক্রমশ সংক্রমণ কমতে থাকে। আবহাওয়া স্থিতিশীল হলেই ভাইরাসের দৌরাত্ম্য কমতে থাকে।’’ তবে মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞর কথায়, গরমে শ্বাসনালির সংক্রমণে সক্ষম ভাইরাসের ক্ষমতা কমলেও অ্যাডিনো কিন্তু সক্রিয় থাকে। তাই দু’বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের অবশ্যই সাবধানে রাখতে হবে।