স্টাফ রিপোর্টার: আইএফএ-তে নজিরবিহীন ঘটনা! বঙ্গ ফুটবলের নিয়ামক সংস্থায় শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির এক বৈঠক থেকে সাসপেন্ড করা হল তিন ক্লাব এবং তিন কোচকে। সঙ্গে জরিমানা হয়েছে আরও এক ক্লাবের।
কলকাতা লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশন ও কন্যাশ্রী কাপের দ্বিতীয় ডিভিশনের বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসে আইএফএ-র শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। অভিযোগ ছিল, মূলত তিনটি। প্রথমত, লিগের বিভিন্ন ম্যাচে হওয়া গড়াপেটা সংক্রান্ত অভিযোগ। যে অভিযোগের কেন্দ্রে থাকা টালিগঞ্জ অগ্রগামী ও উয়াড়ি ক্লাবকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, লিগে খিদিরপুর ক্লাবের বিরুদ্ধে উঠেছিল কোচের লাইসেন্স সংক্রান্ত নিয়ম ভাঙার অভিযোগ। লিগের একাধিক ম্যাচে তাদের ডাগ আউটে নির্দিষ্ট লাইসেন্স আছে, এমন কোচ উপস্থিত ছিলেন না বলে আইএফএ-র কাছে অভিযোগ জমা পড়েছিল। তাতে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে তাদের। তৃতীয়ত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কন্যাশ্রী কাপের দ্বিতীয় ডিভিশনের ম্যাচে জিসি মেমোরিয়াল ক্লাবের কর্তাদের বিরুদ্ধে দীপ্তি সংঘের ফুটবলারদের শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ক্লাবের পাশাপাশি দু’দলের কোচকেও নির্বাসিত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘ডেঁপো ছোকরা’, ফের নিশানায় দেবাংশু, ‘খেলা হবে’র পালটা স্লোগান অভিজিতের]
চলতি মরশুমে কলকাতা লিগ চলাকালীনই পিয়ারলেস বনাম টালিগঞ্জ ম্যাচ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে এক গড়াপেটা বিরোধী সংস্থা এবার ওই সংস্থার রিপোর্টে নাম উঠে এসেছে উয়াড়িরও। তা নিয়ে পুলিশকে তদন্তের জন্য বলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত দু’টো ক্লাবকেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। সঙ্গে উয়াড়ির কোচ মিকি ফার্নান্ডেজ ও টালিগঞ্জের ফুটবলার শুভদীপ গুনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত এ প্রসঙ্গে বলেন, “আগেই টালিগঞ্জের ম্যাচ নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশকে বলেছি আমরা। এবার উয়াড়ির ম্যাচ নিয়েও জানানো হবে। সেই রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাব দু’টি সাসপেন্ড থাকবে।” জুনের শেষ সপ্তাহে ফের কলকাতা লিগ শুরু হবে। ইতিমধ্যে লিগের প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে অনেক ক্লাবই। লিগ শুরুর আগে পুলিশের তদন্ত শেষ না হলে এই দুই ক্লাবের ভবিষ্যৎ কী হবে? সচিবের বক্তব্য, “টালিগঞ্জ ও উয়াড়িকে ছাড়াই লিগ হবে সেক্ষেত্রে।” এবার লিগে গ্রুপ ‘এ’-তে ৯ নম্বরে ছিল টালিগঞ্জ, উয়াড়ি শেষ করে গ্রুপ ‘বি’-র সাত নম্বরে।
তবে এদিন মূল নজর ছিল জিসির বিরুদ্ধে দীপ্তি সংঘের অভিযোগ নিয়ে। গত রবিবার উলুবেড়িয়া স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে দীপ্তির মহিলা ফুটবলারদের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ ওঠে জিসির কয়েকজন কর্তার বিরুদ্ধে। সেই ইস্যুতে সব পক্ষের বক্তব্য শোনে আইএফএ। এরপরই ঠিক হয়, এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হবে জিসি-কে। পাশাপাশি জিসির কোচ অরূপ ঘোষ ও টিডি দিবাকর বসুকে পাঁচ বছর করে এবং দীপ্তির কোচ পার্থ ঘোষকে দু’বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। এ প্রসঙ্গে আইএফএ সচিব বলেন, “মাঠে মহিলা ফুটবলারদের শারীরিক নিগ্রহের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল। দুই ক্লাবের কর্তা ও কোচদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। দীপ্তির ফুটবলারদের এবং ম্যাচের রেফারি ও কমিশনারের সঙ্গেও কথা বলেছে কমিটি। সবার কথা শুনে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”